বর্ণাঢ্য নানান আয়োজনে জাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

নানান বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও ৫০ বছরে পদার্পণ অনুষ্ঠান উদযাপন করলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১০টায় র‌্যালির মধ্যে দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্যের নেতৃত্বে আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ করে সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নুরুল আলম,  কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার রহিমা কানিজ, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।


এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনেও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একাংশ। উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে কালোপতাকা প্রদর্শন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’- এর ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

রোববার বেলা ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বর থেকে কালো পতাকা ও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পুরাতন কলা ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের র‌্যালি শুরুর স্থলে যান আন্দোলনকারীরা। পরবর্তীতে সেখান থেকে আবারো ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে অমর একুশ পাদদেশে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেন তারা।

সমাবেশে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণের দাবি জানান। এছাড়া উপাচার্যের মদদে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে তদন্তের মাধ্যমে উপাচার্যকে রাষ্ট্রীয় আইনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান তারা।


প্রতিবাদ সমাবেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের সংগঠক অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করে আসছি। এই প্রকল্পের টাকা থেকে দুর্নীতি যদি না হবে তাইলে উপাচার্য কেন এত বিচলিত, উপাচার্য কেন শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলার ইন্ধন দিচ্ছেন, কেন শিক্ষকদের ফোনালাপ ফাঁস করছেন?’

দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের সংগঠক ও ছাত্র ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, ‘কোনো সন্ত্রাসের ইন্ধনদাতা ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে থাকতে পারেন না। অতীতের যেসব উপাচার্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন, শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা মামলা করেছেন তাদের পরিণতি ভালো হয়নি।’ অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের পরিণতিও ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি করেন তিনি। 

বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার সামনে উপাচার্যের দুর্নীতি, অসদাচরণ ও বিভিন্ন অনিয়মের তথ্যাদি প্রদর্শন করেন আন্দোলনকারীরা।

অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে ছাত্র কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের আয়োজনে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বেলা আড়াইটায় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পুতুলনাট্য প্রদর্শনী, বিকেল ৫টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সন্ধ্যা ৭টায় ‘নকশীকাঁথা ব্যান্ডের’ সঙ্গীতানুষ্ঠান পরিবেশন করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন