রুনা খান

পর্দার সরব অভিনেত্রী

রাইসা জান্নাত

প্রথম চলচ্চিত্র দিয়েই বাজিমাত করেন অভিনেত্রী। জিতে নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ছবি হালদায় অভিনয় করে সেরা পার্শ্বচরিত্রে পুরস্কার পান তিনি

অভিনয়ের মূল শিকড় মঞ্চ। নাট্যসংগঠন নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে অভিনয়ে হাতেখড়ি। শুরুটা মঞ্চ দিয়ে হলেও কেবল সেখানেই আটকে রাখেননি নিজেকে। মঞ্চের আলো-আঁধারি আবহ পেরিয়ে একটু একটু করে ক্যামেরার আলোয় তুলে ধরতে থাকেন নিজ প্রতিভা। সিসিমপুর-এর সুমনার কথা নিশ্চয়ই মনে আছে সবার? ইকরি, হালুম, টুকটুকি, শিকুর প্রিয় স্কুলশিক্ষিকা সুমনা। শুধু তাদেরই নয়, সুমনা চরিত্রটি অনেকেরই পছন্দের। সুমনা অর্থাৎ অভিনেত্রী রুনা খান। যিনি নাটক থেকে চলচ্চিত্র সবখানেই তার অভিনয় দক্ষতার জানান দিয়ে চলেছেন।

২০০২ সালে নাট্যসংগঠন নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে যোগ দেন রুনা খান। এখানেই চালিয়ে যান মঞ্চচর্চা। আর এভাবেই এক পর্যায়ে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের সঙ্গে অভিনেত্রীর পরিচয় ঘটে। শিশুতোষ অনুষ্ঠান সিসিমপুরে অভিনয় শুরু করেন ২০০৪ সালে। তার মতে, মূলত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই তিনি বেশি দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেছেন। অভিনয় শুরুর পর থেকে একের পর এক ধারাবাহিকে অভিনয় করেন রুনা। সেই ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রেখেছেন তিনি। বর্তমানে অভিনেত্রী একাধিক ধারাবাহিকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।


রুনা খান অভিনীত বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক, যেমন ইমরাউল রাফাতের বিষয়টি পারিবারিক, আবু হায়াত মাহমুদের প্রিয় প্রতিবেশী, মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজের ফ্যামিলি ক্রাইসিস বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত হচ্ছে। পাশাপাশি আরো কয়েকটি নতুন ধারাবাহিকের কাজ করছেন অভিনেত্রী। প্রতিটি ধারাবাহিকেই রয়েছে তার চরিত্রের ভিন্নতা। তার অভিনীত এসব ধারাবাহিকের মধ্যে এনটিভিতে প্রচারিত ফ্যামিলি ক্রাইসিস অনেক বেশি জনপ্রিয়। এতে অভিনয় করে দর্শকদের ভালো সাড়া পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

বর্তমানে নাটক দেখা না-দেখার বিষয়টি নিয়ে যখন মানুষের নানা অভিযোগ, সেই সময় ফ্যামিলি ক্রাইসিস-এর মতো একটি নাটককে নতুন সংযোজন বলে মনে করেন অভিনেত্রী।

প্রসঙ্গের জের ধরেই তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, সময়ে মানুষ নাটক তেমন দেখছে না বলে অনেকের অভিযোগ, বিষয়ে আপনার অভিমত কী?— উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, ‘মানুষ নাটক দেখছে না, আমার কাছে তা মনে হয় না। আসলে এখন নাটক দেখার মাধ্যম পরিবর্তন হয়েছে। আমি যখন অভিনয় শুরু করি তখন খুব বেশি চ্যানেল ছিল না। আগে মানুষ টেলিভিশনে নাটক বেশি দেখত, এখন পাশাপাশি ইউটিউবেও দেখছে। অভিনয়টা আমার পেশা। আমি মনে করি, মানুষ নাটক দেখে। আর দেখে বলেই আমি অভিনয়কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে পেরেছি এবং এখনো অভিনয় করছি।দর্শকপ্রিয়তার সারিতে অভিনেত্রীর আরো বেশকিছু নাটক রয়েছে। এর মধ্যে সাতকাহন লং মার্চ অন্যতম। তার মতে, ধারাবাহিকগুলো তাকে অনেক বেশি দর্শকপ্রিয়তা এনে দিয়েছিল।

টিভি নাটকে অভিনয় করেই মূলত পরিচিতি লাভ করেন রুনা। তবে নাটকের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি। চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেই অভিনয়ের সুনিপুণতার পরিচয় দেন রুনা। প্রথম চলচ্চিত্র দিয়েই বাজিমাত করেন অভিনেত্রী। জিতে নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ছবি হালদায় অভিনয় করে সেরা পার্শ্বচরিত্রে পুরস্কার পান তিনি। শুধু হালদা নয়, ছিটকিনি, গহীন বালুচর নির্মলেন্দু গুণের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত কালো মেঘের ভেলাতেও অভিনয় করেন। এছাড়া বাণিজ্যিক ঘরানার সাপলুডুতে অতিথি চরিত্রে দেখা গেছে তাকে।

মুহূর্তে নতুন কোনো চলচ্চিত্রের কাজ হাতে আছে কিনা? ‘এখন কোনো চলচ্চিত্রে কাজ করছি না। এর মধ্যে যেসব চলচ্চিত্রের প্রস্তাব এসেছে, সেগুলো আমার পছন্দ হয়নি। ভালো প্রস্তাব পেলে অবশ্যই কাজ করব। সে রকম কোনো প্রস্তাব এখনো পাইনি’—বলেন রুনা। মঞ্চ যার অভিনয়ের শিকড়। সেই মঞ্চনাটক কি ছেড়ে দিয়েছেন তিনি? না, সুযোগ পেলেই অভিনেত্রী ফিরে যান মঞ্চে। আর যখন অভিনয় করেন না তখন বিভিন্ন দলের মঞ্চায়িত নাটক দেখেন। সর্বশেষ রুনা খান নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের হয়ে আসাদুজ্জামান নূরের দেওয়ান গাজীর কিসসা ঊষা গাঙ্গুলির নাম-গোত্রহীন মঞ্চনাটকে অভিনয় করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন