বছরের প্রথম ডার্বি ম্যাচ বলেই বাড়তি
আগ্রহ ছিল ম্যানচেস্টারের দুই দল ইউনাইটেড ও সিটিকে নিয়ে। এর আগে লিগ ম্যাচে
সিটিকে হারিয়ে ম্যানইউর আত্মবিশ্বাসের পারদ ছিল উপরের দিকেই। কিন্তু সেই হারের
প্রতিশোধ নেয়ার প্রত্যয় নিয়েই যেন লিগ কাপের
(কারাবাও কাপ) সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মাঠে নেমেছিল
সিটি। যাদের সামনে শেষ পর্যন্ত দাঁড়াতেই পারেনি স্বাগতিক ম্যানইউ। ওল্ড ট্রাফোর্ডে
ঘরের মাঠেই সিটির বিপক্ষে ১-৩ গোলে হেরেছে তারা। মূলত প্রথমার্ধেই ৩-০-তে এগিয়ে
গিয়ে ম্যাচের ইতি টেনে দেয় সিটি। বিরতির পর ম্যানইউ এক গোল শোধ করলেও ততক্ষণে
ফলাফল নিশ্চিত করে ফেলেছে সিটিজেনরা। সেই সঙ্গে প্রথম লেগ শেষেই অ্যাওয়ে জিতে
ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল পেপ গার্দিওলার দল।
সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ
হলেও সিটি বস গার্দিওলা এদিন সার্জিও আগুয়েরো, গ্যাব্রিয়েল জেসুসকে বেঞ্চে বসিয়েই দল
সাজান। যদিও এ পরিবর্তনের প্রভাব মাঠের খেলায় দেখা যায়নি। উল্টো সিটির পরিবর্তিত
ট্যাকটিসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে রীতিমতো সংগ্রাম করেছে ম্যানইউ। শুরু থেকেই চাপের
মুখে ছিল তারা। মাত্র ৪৩ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে ম্যানইউ শট নেয় ৮টি, যার
মাত্র তিনটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে সিটি ৫৭ শতাংশ বল দখলে রেখে শট নেয় ১৫টি, যেখানে
৫টিই ছিল লক্ষ্যে।
আক্রমণে এগিয়ে থেকে ম্যাচের মাত্র ১৭
মিনিটে লিড নেয় অতিথিরা। ডি বক্সের বাইরে দারুণ এক শটে টপ কর্নার দিয়ে লক্ষ্যভেদ
করেন সিটির পর্তুগিজ তারকা বের্নার্দো সিলভা। নিয়মিত স্ট্রাইকার না থাকায় ম্যাচে
উপরে উঠে এসে ভীতি তৈরি করছিলেন সিলভা ও কেভিন ডি ভ্রুইন। সিটির এ কৌশল যেন বুঝতেই
পারছিল না ম্যানইউ। এর মাঝেই ৩৪ মিনিটে নিজেদের দ্বিতীয় গোলটিও আদায় করে নেয় সিটি।
এবারো গোলের মঞ্চটা তৈরি করেন ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত পারফর্ম করা সিলভা। তার পাস
থেকেই দলকে জোড়া গোলের লিড এনে দেন রিয়াদ মাহারেজ। অবশ্য সিটির রায়ট এখানেই
থামেনি। ৩৮ মিনিটে ডি ব্রুইনের শট ডি গিয়া ঠেকিয়ে দিলেও আন্দ্রেস পেরেরার গায়ে
লেগে সেটি ফের জালে প্রবেশ করে। এ আত্মঘাতী গোলসহ প্রথমার্ধেই ৩-০ গোলে পিছিয়ে
ম্যানইউ। বিরতির পর সিটি একটু নির্ভার হয়ে খেলায় এক গোল শোধ করার সুযোগ পায়
ম্যানইউ। ৭০ মিনিটে ম্যানইউর হয়ে গোল করেন মার্কোস র্যাশফোর্ড। কিন্তু তা কেবল
সান্ত্বনা হয়ে থাকল। ফাইনালে যেতে হলে সিটির মাঠে বড় ব্যবধানে জেতার বিকল্প নেই
ম্যানইউর।
ম্যাচের পর সিটি বস গার্দিওলা বলেন, ‘ইউনাইটেডের
বিপক্ষে শেষ ম্যাচে (২-১ গোলে হেরেছিল সিটি)
আমরা ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি। কিন্তু
এবার আমরা ভালো করেছি।’ অবশ্য এখনই তৃপ্তিতে ভুগতে নারাজ এ স্প্যানিয়ার্ড, ‘এখনো
শেষ হয়ে যায়নি। একটি ম্যাচ বাকি আছে। দেখা যাক কি হয়।’
সিটির ট্যাকটিসের সঙ্গে মানিয়ে নিতে
পারেননি বলে স্বীকার করে নেন ম্যানইউ বস ওলে গুনার সোলশার, ‘তাদের
পদ্ধতির সঙ্গে আমরা মানিয়ে নিতে পারিনি। জানি তারা এভাবে খেলতে পারে। এভাবে খেলে
তারা গত মৌসুমে চেলসিকে ৫-০ গোলে হারিয়েছিল।’ বিবিসি