কাট অফ প্রাইস নির্ধারণে বিডিংয়ের অনুমোদন পেয়েছে ওয়ালটন

নিজস্ব প্রতিবেদক

শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক হোম অ্যাপ্লায়েন্স কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পুঁজিবাজার থেকে মূলধন সংগ্রহে শেয়ারের কাট অফ প্রাইস বা প্রান্ত সীমা নির্ধারণে বিডিংয়ের অনুমোদন পেয়েছে। পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংকঋণ পরিশোধ আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে কোম্পানিটি। গতকাল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক . এম খায়রুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৭১৪তম কমিশন সভায় ওয়ালটনের বিডিং অনুমোদন করা হয়।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ৩০ জুন ২০১৯ সমাপ্ত হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী অনুসারে পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতিসহ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ২৪৩ টাকা ১৬ পয়সা এবং পুনর্মূল্যায়ন সঞ্চিতি ছাড়া শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ১৩৮ টাকা ৫৩ পয়সা। গত বছরে কর-পরবর্তী নিট মুনাফার ভারিত গড় হারে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ২৮ টাকা ৪২ পয়সা।

এর আগে গত বছরের ১৬ জানুয়ারি আইপিওতে আসার কারণ এবং কোম্পানির আর্থিক ব্যবসায়িক নানা দিক তুলে ধরতে রোড শোর আয়োজন করে ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ। আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকায় বিএমআরই, ৩৩ কোটি টাকার ব্যাংকঋণ পরিশোধ এবং সাড়ে কোটি টাকা আইপিও প্রক্রিয়ার খরচ খাতে ব্যয় করা হবে। কোম্পানিটির ব্যবসা সম্প্রসারণ প্রকল্পে মোট ৬৮০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে আইপিও থেকে ৬২ কোটি ৫০ লাখ, নিজস্ব অর্থায়ন ২৭৭ কোটি ৫০ লাখ জার্মানির আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিইজির কাছ থেকে ৩৪০ কোটি টাকার দীর্ঘমেয়াদি ঋণ নেয়া হবে।

কোম্পানিটির আইপিও প্রসপেক্টাস অনুসারে, এর অনুমোদিত মূলধন ৬০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা। ৩০ জুন ২০১৮ হিসাব বছর শেষে ওয়ালটনের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা। দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৭২৪ কোটি টাকা স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ৭৮০ কোটি টাকা।

কোম্পানিটির গত পাঁচ বছরের রাজস্ব আয় কর-পরবর্তী মুনাফা পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৩-১৪ হিসাব বছরে হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের বিপরীতে মুনাফা হয়েছে ৩১৪ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে হাজার ৯৯ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের বিপরীতে মুনাফা হয়েছে ৫০২ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ হিসাব বছরে হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের বিপরীতে মুনাফা হয়েছে ৬২১ কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ হিসাব বছরে হাজার ১৯৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের বিপরীতে ৭৩৪ কোটি টাকা এবং ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে হাজার ৭৩২ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের বিপরীতে মুনাফা হয়েছে ৩৫২ কোটি টাকা। ৩০ জুন ২০১৮ সময়ে কোম্পানিটির পুঞ্জীভূত মুনাফা ছিল হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা।

ওয়ালটনের আইপিও প্রসপেক্টাস অনুসারে, দেশে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস শিল্পের আকার ১০ হাজার কোটি টাকা। প্রতি বছর ২০ শতাংশ হারে খাতে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। রেফ্রিজারেটর বাজারের ৭০ শতাংশই ওয়ালটনের দখলে। বিশ্বের মধ্যে ১৫তম এবং সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় কোম্পানি হিসেবে ওয়ালটন কমপ্রেসার তৈরি করছে। বাজারের আকার হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মাত্র শতাংশ স্থানীয় উৎপাদকরা সরবরাহ করছে। ওয়ালটনের বছরে ১৫ লাখ রেফ্রিজারেটর ফ্রিজার, ৫০ হাজার এয়ারকন্ডিশনার এবং ১০ লাখ কমপ্রেসার উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।

ওয়ালটন ২০০৮ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসে। প্রথমে স্থানীয় বাজারে ইলেকট্রনিকস হোম অ্যাপ্লায়েন্স সরবরাহ করলেও বর্তমানে বিদেশে রফতানি করছে।

ওয়ালটনের ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে ট্রিপল ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। রেজিস্ট্রার টু দ্য ইস্যু প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। নিরীক্ষক মাফেল হক অ্যান্ড কোম্পানি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন