শীতেও চাই সতেজ ঘর

ফিচার ডেস্ক

বসবাসের সঙ্গে সঙ্গে বাড়িঘরের সৌন্দর্য ধীরে ধীরে ম্লান হতে থাকে। জিনিসপত্রের রঙ নষ্ট হয়ে চারদিকে পুরনো ভাব চলে আসে। আর এই পুরনো ভাব আরো ব্যাপকতা পায় শীতের রুক্ষ-শুষ্ক আবহাওয়ায়। তবে টুকিটাকি জিনিস পরিবর্তন করে বাড়িতে নতুনত্ব সতেজতা আনা যায়। এক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে অল্প কিছু অর্থ ব্যয় করলেই ঘরের চেহারায় বড় পার্থক্য তৈরি হবে। আপনি যদি বাড়িতে নতুনের ঘ্রাণ পেতে চান এবং ঘরকে সতেজ দেখতে চান, তাহলে নিচের পরামর্শগুলো বিবেচনা করুন

হার্ডওয়্যার পরিবর্তন

এটা সত্যিই আশ্চর্যজনক যে পানির কল, ছোটখাটো যন্ত্রপাতি, এমনকি দরজার হাতলগুলোও আপনার বাড়ির নান্দনিকতার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পার্থক্য তৈরি করতে পারে। এগুলো পরিবর্তন করতেও খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় না, যদিও এগুলো বাড়ির চেহারায় বড় পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে। আর এগুলো বাজারে বিভিন্ন দাম ডিজাইনের পাওয়া যায়। সামর্থ্যের মধ্যে আপনি ইচ্ছামতো পরিবর্তন করতে পারবেন। প্লাস্টিকের পরিবর্তে আপনি স্টিল বা সিরামিকের জিনিসপত্র নির্বাচন করতে পারেন। এগুলো আপনার ঘরকে তরতাজা করে তুলবে। 

 

ওয়ালপেপার যুক্ত করা

ঘরের দেয়ালের জন্য আপনি বিভিন্ন ডিজাইনের রিমুভেবল ওয়ালপেপার যুক্ত করতে পারেন। এগুলো আপনাকে দুই ধরনের সুবিধা দেবে। এক. এই সময়ে এগুলো আপনাকে শীত থেকে রক্ষা করবে, কারণ বাইরের হিমশীতল আবহাওয়ায় দেয়াল প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হয়ে ঘরকে শীতল স্যাঁতসেঁতে করে তোলে। দেয়ালে ওয়ালপেপার যুক্ত করলে দেয়ালের ঠাণ্ডা ঘরে ছড়িয়ে পড়তে পারে না। এর পাশাপাশি ওয়ালপেপারগুলো ঘরে ব্যতিক্রমী সতেজতা তৈরি করে। ওয়ালপেপারের বিভিন্ন রঙ মনেও সতেজ ভাব ছড়িয়ে দেয়। বাজারে বিভিন্ন রঙ, নকশা শৈলীর ওয়ালপেপার পাওয়া যায়।

 

জানালায় সতেজতার ছাপ

ঘরের সৌন্দর্য অনেকটা নির্ভর করে জানালার ওপর। বলা হয়ে থাকে, বিছানা জানালাকে ঘিরে ঘরের সৌন্দর্য আবর্তিত হয়। এজন্য আপনি জানালা যতটা সৌন্দর্যমণ্ডিত করতে পারবেন, আপনার ঘরের লুকও ততটা পরিবর্তন হবে। আর শীতের সময়ে এমনিতেই জানালার পর্দা পরিবর্তনের দরকার হয়। ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা পেতে গরমের হালকা পর্দা পরিবর্তন করে মোটা-ভারী পর্দা লাগিয়ে নিন। এতে শীত থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি ঘরে নতুনত্ব আসবে। পাশাপাশি জানালার সামনে শোপিস যুক্ত করে আপনি ঘরকে সতেজ করে তুলতে পারেন।

 

বিছানা বালিশের কাভারের রঙ

বিছানা বালিশের কাভার ঘরে সৌন্দর্য শুভ্রতা ছড়ায়। এগুলোকে বলা হয় ঘরের মেকআপ। আপনার মেজাজ মৌসুম অনুযায়ী এগুলো আপনি পরিবর্তন করতে পারেন। এটাকে খুব ছোট পরিবর্তন মনে হলেও এর প্রভাব কিন্তু ছোট নয়। শীতের শুষ্কতায় ঘর নিস্তেজ মনে হয়, ঘরে গতিশীলতা আনতে বিছানা বালিশের কাভার পরিবর্তন করুন। কাভারে উজ্জ্বল প্রাণবন্ত রঙগুলো যুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করুন।

 


নতুন কার্পেট

কার্পেট ঘর উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। সুতরাং আপনি যেকোনো ঘর বা স্থানকে যদি নতুন চেহারায় দেখতে চান, তবে সেখানে কার্পেট যুক্ত করা ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় নেই। কার্পেটের রঙ শৈলী চারপাশের পরিবেশকে সতেজ করে তোলে। আপনি এটাকে সমান্তরালে না রেখে তির্যকভাবে রাখতে পারেন, তবে আপনার ঘরে নতুনত্ব তৈরি হবে।

 

দেয়ালে যুক্ত করুন ছবি

দেয়ালে প্রিয়জনের ছবি বা কোনো কথা বাঁধাই করে রাখলে এটা পুরো পরিবেশকে পরিবর্তন করে দেবে। পাশাপাশি যুক্ত হবে সতেজ এক স্নিগ্ধতা। কয়েকটি পছন্দের ছবি কথা, আঁকা বা ক্যামেরায় তোলা কোনো ছবি বাঁধাই করে ঘরের কোনো দেয়ালে যুক্ত করতে পারেন। এগুলো আপনার ঘরে অনন্য এক নান্দনিকতা স্পর্শ এনে দেবে।

 

ঘরের নকশায় পরিবর্তন

ঘরে নির্দিষ্ট স্থানে বিছানা, সোফা বা সৌখিন আসবাব রেখে দীর্ঘদিন বসবাস করার ফলে একঘেয়েমি ভাব তৈরি হয়। নতুনত্ব আনতে আপনি ঘরের জিনিসপত্রের বিন্যাস পরিবর্তন করতে পারেন। এরপর দেখবেন ঘরে নতুন ধরনের এক সতেজতা তৈরি হয়েছে।

 

ঘরে আনুন উদ্ভিদ

শীতের শুষ্কতায় ঘরে সতেজতা তৈরির ভালো উপায় হলো উদ্ভিদ যুক্ত করা। এগুলো ঘরকে আরো বেশি স্বাচ্ছন্দ্যময় বিশ্রামের আবেশ তৈরি করতে সহায়তা করে। প্রাকৃতিক গুণসমৃদ্ধ এসব গাছ বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ দূর করে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করতে পারে। উদ্ভিদগুলো ঘরের সাজসজ্জায়ও নিয়ে আসে পরিপূর্ণতা। তবে শীতের সময়ে উদ্ভিদগুলোর একটু বিশেষ যত্নের প্রয়োজন পড়ে। জানালা বারান্দার যেসব স্থানে আলো বা রোদ পড়ে, সেখানে এগুলো স্থাপন করা যেতে পারে। পাশাপাশি শীতের সময়ে উদ্ভিদগুলোয় বেশি পানি না দেয়ায়ই ভালো।

 

রঙের উষ্ণতা

শীতের সময়ে সবকিছু শুষ্ক রুক্ষ হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে রঙের মাধ্যমেও আপনি বাড়িঘরে সতেজতা আনতে পারেন। হলুদ বা লালের বিভিন্ন সংমিশ্রণে যে রঙগুলো তৈরি হয়, সেগুলোকে বলা হয় উষ্ণ বর্ণ। অন্দরে এসব রঙের ব্যবহার ঘরের ভেতর অন্য রকম উষ্ণতা তৈরি করে।

 

সূত্র: হোমডিট

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন