২ মাসেও রহস্যাবৃত বেনাপোল কাস্টমসের স্বর্ণ চুরি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি যশোর

টানা তিনদিনের সরকারি ছুটির ফাঁকে গত নভেম্বরের প্রথম দিকে যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউজের ভল্ট থেকে চুরি হয় ১৯ কেজির বেশি স্বর্ণ। দুই মাস হতে চললেও এখনো স্বর্ণ উদ্ধার করা যায়নি। এমনকি চুরির ঘটনার কূলকিনারা করতে পারেননি তদন্তে নিয়োজিতরা। তারা কেবল বলছেন শিগগিরই রহস্য উদ্ঘাটন হবে।

বেনাপোল দেশের প্রধান স্থলবন্দর। সীমান্ত বাণিজ্যের সিংহভাগ সম্পন্ন হয় বন্দর দিয়ে। সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানির বিপুল পরিমাণ স্বর্ণও জব্দ করা হয় যশোর-বেনাপোলে। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এসব স্বর্ণ বেনাপোল কাস্টম হাউজের ভল্টে জমা রাখা হয়। সাপ্তাহিক ছুটি ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে গত -১১ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ছিল বেনাপোল কাস্টম হাউজ। পরদিন অফিস খুলেই কাস্টম হাউজের ভল্টটি খোলা দেখতে পান কর্মকর্তারা। পরে ভল্ট পরীক্ষা করে ১৯ কেজি ৩৮৫ গ্রাম স্বর্ণ খোয়া যাওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হন তারা। খোয়া যাওয়া স্বর্ণের বাজারদর প্রায় সাড়ে কোটি টাকা। তবে সেখানে থাকা আরো স্বর্ণ, বৈদেশিক মুদ্রা অন্যান্য সম্পদ অক্ষত অবস্থায় ছিল।

স্বর্ণ চুরির ঘটনায় বেনাপোল কাস্টম হাউজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা জিএম আশরাফ বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা করেন। ঘটনায় বেনাপোল কাস্টম হাউজের একজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, একজন সিপাইসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ২৮ নভেম্বর মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত মামলার তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতির কথা জানাতে পারেনি সিআইডি।

ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান বলেনএখন পর্যন্ত স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখন তারা বিষয়টি দেখছে।

সিআইডির পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন জানান, মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আমরা একজনকে আটক করেছি। শিগগিরই রহস্য জানা যাবে।

এদিকে স্বর্ণ চুরির যাওয়ার পর থেকে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে কাস্টম হাউজের নিরাপত্তা নিয়ে। দুই মাসে চোর শনাক্ত রহস্য উদ্ঘাটন না হওয়ায় এখন শর্ষের মধ্যেই ভূত দেখছেন অনেকে। নিয়ে বিপাকে আছেন কাস্টমসের কর্মকর্তারাও।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক লতা বলেন, এত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার পরও চুরির ঘটনা ঘটেছে। তথ্য প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে চোর ধরা এখন কোনো কঠিন কাজ না।

বেনাপোল আমদানিকারক-রফতানিকারক সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, সরকারি সম্পদ যারা অবহেলায় রেখেছিলেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, কাস্টমসের অবহেলার কারণে চুরির ঘটনা ঘটেছে। অপরাধীকে শনাক্ত করতে ব্যর্থ হলে আগামীতে এমন ঘটনা আবারো ঘটবে।

ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী বলেন, স্বর্ণ চুরির ঘটনা কাস্টমসের সব অর্জনকে যেন ম্লান করে দিয়েছে। চোরকে দ্রুত ধরা দরকার, যাতে আর কেউ ভবিষ্যতে এমন কাজ করতে সাহস না পায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন