চলতি বছর সাত লক্ষাধিক কর্মী বিদেশে পাঠাবে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সাড়ে সাত লাখের বেশি কর্মী বিদেশে পাঠানো সম্ভব হবে। এজন্য নতুন নতুন শ্রমবাজার খোলা হচ্ছে, আরো কিছু পাইপলাইনে আছে। বছর আশা করা হচ্ছে আরো ছয়-সাতটি নতুন দেশে কর্মী পাঠাতে সক্ষম হব। বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপ থেকে চাহিদা আসছে। এজন্য কিছু দেশে ডিপ্লোম্যাটিক রিপ্রেজেনটিভ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

গতকাল প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে নতুন বছরে সরকারের শ্রমবাজারের পরিকল্পনা-বিষয়ক মিট দ্য প্রেসের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ।

প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিদেশগামী কর্মীর সংখ্যা কমেছে, এটা ঠিক। কিন্তু সারা বিশ্বের চাহিদায়ও পরিবর্তন এসেছে, তা হলো দক্ষ কর্মীর চাহিদা। এটা না দিতে পারলে আমরা ফেল (ব্যর্থ) করব।

দক্ষ কর্মী সৃষ্টিতে অনেক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানিয়ে ইমরান আহমেদ বলেন, আমরা লাখ লাখ কর্মীর কথা বলে থাকি। কিন্তু দক্ষ কতজন পাঠাচ্ছি, সংখ্যায় তা কয়েক হাজার হবে। এখানে আমাদের আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। দক্ষ শ্রমিক বাজারে এলে আমাদের বাজারও বাড়বে। এজন্য আমাদের ৪৯২টি উপজেলার মধ্যে ১৬৪টিতে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল প্রতি উপজেলা থেকে এক হাজার দক্ষ কর্মী পাঠাব। কিন্তু সব উপজেলায় এখনো টিটিসি স্থাপন করতে পারিনি।

জাপানের বাজার নিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, জাপানের মতো দেশ এখন আমাদের দেশ থেকে দক্ষ কর্মী নিচ্ছে। তবে আমরা খুব কম সংখ্যক কর্মী পাঠাতে পারছি। কারণ জাপান শতভাগ ভাষা কাজে দক্ষ লোক নিতে চায়। আমাদের চ্যালেঞ্জ দক্ষ জনবল সৃষ্টির।

বাজার নিয়ে নতুন করে সংকট সৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি আমাদের দু-তিনটা বাজারে নতুন করে সংকট তৈরি হচ্ছে। যেমন ইরাক লিবিয়ায়। ইরাকে মার্কিন হামলায় একটা সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে বাজার বন্ধ হচ্ছে না, আটকে আছে। আশা করছি এতে আমাদের তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ তারা প্রবাসী কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন আছে। আর লিবিয়া আমাদের বড় বাজার। তবে আমাদের ভুলের কারণে বাজারে প্রবেশ করতে কষ্ট হচ্ছে। লিবিয়ায় কর্মী গিয়ে চলে যায় ইতালি, গ্রিসসহ অন্যান্য দেশে। প্রথমেই আমরা কাজ করি বেআইনি। এতে অনেক কর্মী মারা যাচ্ছে। আমি চাই না আমার দেশের কোনো কর্মী বিদেশে গিয়ে মৃত হয়ে দেশে ফিরে আসুক। আমি চাই দেশে সব কর্মক্ষম মানুষ বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পাক একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ বানাক।

মালয়েশিয়ার বাজার নিয়ে ইমরান আহমেদ বলেন, বাজার অনেক দিন ধরে খোলা হচ্ছে না। আমি চাই না আগের মতো - লাখ টাকা খরচ করে সেখানে যাক। আর জঙ্গলে লুকিয়ে থাকুক। আমরা সে ধরনের কোনো চুক্তি করিনি। আমাদের লক্ষ্য সরকার যে রেট নির্ধারণ করে দেবে, তা দিয়েই যেতে হবে। সরকার আসার পর মালয়েশিয়ার বাজার নিয়ে যে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কোনো ছোট অনিয়ম করলেও আমরা কাউকে ছাড় দিতে রাজি না। অন্যায়কে আমরা প্রশ্রয় দেব না।

নারী কর্মীর নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরবে নারী কর্মীদের নিরাপত্তায় আমরা এখন অনেক শক্ত অবস্থানে আছি। গত ডিসেম্বরে একজন নারী কর্মী দেশে ফেরেনি। বিদেশে নির্যাতিত হবে এটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য না। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন