অলিম্পিক ঘিরে চাঙ্গা হচ্ছে টোকিওর আবাসন খাত

উল্টো পথে বেইজিং

বণিক বার্তা ডেস্ক

২০২০ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক প্যারালিম্পিকস উপলক্ষে চাঙ্গা হয়ে উঠছে টোকিওর আবাসন খাত। তবে ২০২২ সালে শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজন করতে যাওয়া বেইজিংয়ে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। খবর জাপান টুডে।

অভ্যন্তরীণ চাহিদা চাঙ্গা করতে জাপান যেখানে আর্থিক বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে এবং আগ্রাসী মুদ্রানীতি গ্রহণ করছে, সেখানে আবাসন খাতের অতি সম্প্রসারণ নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রলম্বিত বাণিজ্যযুদ্ধ এবং হংকংয়ে অব্যাহত রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে শ্লথগতি নিয়ে এসেছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা চীনে তাদের বিনিয়োগ সংকোচনের দিকে এগোচ্ছে।

জাপানি একটি ট্রেডিং হাউজের বেইজিং শাখার এক নির্বাহী বলেন, চীনের সম্পদ বাজার আর  আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য নয়।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের জেরে ২০০৯ সালে জাপানে জমির দাম কমে। তবে ২০১৩ সালে যখন ২০২০ অলিম্পিক প্যারালিম্পিকের জন্য টোকিও নির্বাচিত হয়, তখন থেকে টানা সাত বছর ভূমির দাম বেড়েছে।

২০১৯ সালে বাণিজ্যিক, আবাসিক শিল্পসহ সব ধরনের জমির দাম পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৮ সালে জমির দাম দশমিক ৭০ শতাংশ বেড়েছিল বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, টোকিওতে সম্পদ বাজারে দাম বৃদ্ধির বিষয়টি কোনো বাবল নয়, বরং প্রকৃত চাহিদা বৃদ্ধির প্রতিফলন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, টোকিওতে অলিম্পিক আয়োজনের কারণেই যে আবাসন খাতে দাম বেড়েছে তা নয়, জাপানের নিম্ন সুদহারও এতে ভূমিকা রেখেছে।

টোকিওর মেইজি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনার ইমেরিটাস অধ্যাপক হিরু ইশিকাওয়া এক প্রতিবেদনে বলেন, অলিম্পিক প্যারালিম্পিক শেষেও টোকিওতে জমির দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকবে।

অর্থনীতিতে বড় কোনো পরিবর্তন না এলে জাপানে বিদেশী পর্যটক আগমন বাড়তে থাকবে এবং টোকিওতে বড় আকারের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ফলে আরো বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আসবে।

অন্যদিকে ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বেইজিং। পর্যটন খাত চাঙ্গা, পরিবহন, যোগাযোগ ক্রীড়া অবকাঠামো প্রকল্প প্রসারে বিস্তৃত কর্মসূচি নিচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টি নেতৃত্বাধীন চীনা সরকার।

বেইজিং অলিম্পিকের মাধ্যমে পূর্ব এশিয়ায় তিনটি অলিম্পিক আয়োজন শেষ হবে। ২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার পিয়নচ্যাংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজিত হয়েছে। ২০২০ সালে টোকিওতে আয়োজিত হতে যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। চীনের রাজধানী গ্রীষ্মকালীন শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজন করা একমাত্র আয়োজক হতে যাচ্ছে। ২০০৮ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজন করেছিল বেইজিং।

বেইজিংয়ে বসবাসকারী এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা আশা করছি ২০২২ সালের অলিম্পিক প্যারালিম্পিকে প্রচুর বিদেশী পর্যটক চীন ভ্রমণ করবেন এবং তা আমাদের অর্থনীতি চাঙ্গায় ভূমিকা রাখবে। যদি গত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের মতো বেইজিংয়ের আবাসন দাম বৃদ্ধি পায়, তবে বিনিয়োগ হিসেবে আমার একটি অ্যাপার্টমেন্ট কেনা উচিত।

২০০৮ সালের অলিম্পিকে বেইজিংয়ের কেন্দ্রস্থলে নতুন কন্ডোমেনিয়ামের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছিল। এছাড়া কিছু কিছু এলাকার অ্যাপার্টমেন্টের দাম ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল।

তবে ২০২২ অলিম্পিক যে একই রকম পরিস্থিতি নিয়ে আসবে সেটা আশা করা যাচ্ছে না। ২০১৯ সালের শুরু থেকেই আবাসন খাতে দরপতন লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ১৯৯২ সাল পরবর্তী সর্বনিম্নে দাঁড়িয়েছে। ২০০৭ সালের পর থেকে দুই অংকের জিডিপি অর্জন করলেও গত কয়েক প্রান্তিকে তা ছয় শতাংশে নেমে এসেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন