বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বী (২২) হত্যা মামলার পলাতক চারজন আসামিকে আদালতে হাজির হতে জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির আদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ রোববার ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. কায়সারুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
অন্যদিকে মামলায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়া আসামি মনিরুজ্জামান মনির স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। যা আদালত নথিভুক্তের আদেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আদালত আগামী ১৩ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর আসামি বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন একইভাবে স্বীকারোক্তি প্রত্যাহার করেছেন। মামলায় মোট আটজন স্বীকারোক্তি করেছেন।
মামলায় কারাগারে থাকা ২১ আসামিকে এদিন সকালে কারাগার থেকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের আদালতে ওঠানো হয়নি বলে শুনানিকালে বিচারক জানান।
পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির আদেশ হওয়া আসামিরা হলেন, রংপুর জেলার কোতয়ালী থানার পাকপাড়ার বাসিন্দা ডা. মো. আব্দুল জলিল মন্ডলের ছেলে বুয়েটের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স বভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মুহাম্মাদ মোর্শেদ-উজ-জামান মন্ডল ওরফে জিসান (২২), নিলফামারী জেলার সৈয়দপুর থানার নেয়ামতপুর মুন্সিপাড়ার আবু মো. কাউছার ওরফে পিন্টুর ছেলে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম (২০), চাপাইনাবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার কাজী গ্রামের মো. রবিউল ইসলামের ছেলে বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৭তম ব্যাচের ছাত্র মোর্শেদ অমত্য ইসলাম (২২) ও দিনাজপুর জেলার কোতয়ালী থানার উত্তর বালু বাড়ীর ছায়েদুল হকের ছেলে বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের ছাত্র মুজতবা রাফিদ (২১)।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান আদালতে দাখিল করেছেন।
কারাগারে থাকা আসামিরা হলেন, বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার, উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররেফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন, মো. মনিরুজ্জামান মনির, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, শিক্ষার্থী মো. মুজাহিদুর রহমান ও এএসএম নাজমুস সাদাত, বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, আইন বিষয়ক উপ-সম্পাদক অমিত সাহা, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, গ্রন্থ ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইসাতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, শিক্ষার্থী আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শিক্ষার্থী শাসছুল আরেফিন রাফাত, আকাশ হোসেন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা ও এস এম মাহমুদ সেতু। যাদের মধ্যে প্রথম ৮ জন আদালতে স্বীকারোক্তি করেছেন।
উল্লেখ্য, আবরার বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের (১৭তম ব্যাচ) ছাত্র ছিলেন। তিনি থাকতেন বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলার ১০১১ নম্বর কক্ষে। গত ৬ অক্টোবর একই হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে তাকে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়। রাত ৩টার দিকে হল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা বরকত উল্লাহ ১৯ জনকে আসামি করে গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যার পর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
