আইন-শৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দ ব্যয় নয়, বিনিয়োগ: প্রধানমন্ত্রী

পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক এবং জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আইন-শৃঙ্খলা খাতে বরাদ্দকৃত অর্থকে আমরা ব্যয় হিসেবে নেই না। আমরা মনে করি জনগণের স্বার্থে জনগণের কল্যাণে এটা আমাদের এক ধরনের বিনিয়োগ। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এই পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক সাজে সজ্জিত এবং আধুনিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে জনগণের সেবা যাতে নিশ্চিত করতে পারি তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ আমরা নিয়ে যাচ্ছি।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০২০’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন।

পুলিশ বাহিনীতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ফল পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের মাঝে গুণগত বিরাট পরিবর্তন এসেছে। মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ...আমরা চাই আমাদের পুলিশ বাহিনী জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশ বাহিনীকে জনগণের পুলিশ হিসেবেই নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের মধ্যদিয়ে যেকোন ধরনের অপরাধ দমন করা সহজ এবং সেই দৃষ্টিকোন থেকে আপনারা কাজ করবেন সেটাই আমি আশা করি।

বর্তমানে দেশে অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকায় বিনিয়োগ আসছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী একে অব্যাহত রাখার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘দেশে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। এই বিনিয়োগ যাতে কোনভাবে ব্যহত না হয় এবং দেশের অর্থনৈতিক যাত্রা যেন অব্যাহত থাকে সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কোন দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়ায় পুলিশ। কাজেই যে কোন প্রয়োজনে পুলিশ বাহিনীর পাশে দাঁড়ানোটা আমি কর্তব্য বলে মনে করি।’

এর আগে পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে সারাদেশের বিভিন্ন পুলিশ ইউনিটের সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত নয়নাভিরাম প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অনুষ্ঠানে ১১৮ জন পুলিশ সদস্যের মাঝে বাংলাদেশ পুলিশ পদক ও পুলিশ পদক সেবা এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক সেবায় ভূষিতদের মাঝে পদক বিতরণ করেন।

পুলিশ বাহিনীর সদস্যগণের অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৪ জনকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)’, ২০ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)’ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা, সততা ও শৃঙ্খলামূলক আচরণের মাধ্যমে প্রশংসনীয় অবদানের জন্য ২৮ জনকে ‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম)- সেবা’ এবং ৫৬ জনকে ‘রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)- সেবা’ প্রদান করা হয়।

বিপিএম মরহুম মো. আকতার হোসেন (মরনোত্তর) এর পক্ষে তার সহধর্মিনী এবং দায়িত্ব পালনকালে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত এএসআই নান্নু মিয়া হুইল চেয়ারে বসে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেন।

এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাভেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন পেশাজীবী সংস্থা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সিনিয়র পুলিশ সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত।

‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে প্রতিবারের ন্যায় এবারও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা এবং আনন্দমুখর পরিবেশে পাঁচ দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ-২০২০ উদযাপিত হচ্ছে। চলবে আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন