অস্ট্রেলিয়া দাবানল

হাজারেরও বেশি পর্যটক ও স্থানীয় উদ্ধার অস্ট্রেলীয় নৌবাহিনীর

বণিক বার্তা ডেস্ক

ভিক্টোরিয়া উপকূলের দাবানল জর্জরিত ম্যালাকোটা এলাকা থেকে এক হাজারেরও বেশি পর্যটক বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী। শুক্রবার এমভি সিকামোর এইচএমএস চৌউলস নামের দুটি জাহাজ উদ্ধার তত্পরতা চালিয়েছে। খবর বিবিসি রয়টার্স।

ড্যারেন চেস্টার নামে স্থানীয় এক এমপি ওই এলাকার বাসিন্দা পর্যটকদের সরিয়ে আনার ঘটনাকেনজিরবিহীনহিসেবে অভিহিত করেছেন। সোমবার শহরটির চতুর্পাশে অগ্নিকাণ্ড ছড়িয়ে পড়লে চার হাজার বাসিন্দা পর্যটককে সরিয়ে আনা হয়। উদ্ধারকৃতদের ওয়েস্টার্ন পোর্টে সরিয়ে আনা হচ্ছে বলে জানায় অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনী।

সড়কপথ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় বৃহস্পতিবার হেলিকপ্টারে করে ৬০ জনের মতো আটকে পড়াকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধোঁয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় আকাশপথে উদ্ধারাভিযান কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভিক্টোরিয়ার অন্যান্য অংশে স্থলপথে অবস্থান ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রেলওয়ে স্টেশনগুলোয় মানুষের অনেক লম্বা সারি দেখা গেছে।

ম্যালাকোটাসহ ছয়টি এলাকা রিসোর্টে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন ভিক্টোরিয়া প্রদেশের প্রিমিয়ার ড্যানিয়েল এন্ড্রুজ।

গত সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া দাবানলে অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এছাড়া কয়েক ডজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। দাবানলে এখন পর্যন্ত হাজার ৩০০-এর বেশি বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। এদিকে দাবানলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।

বৃহস্পতিবার নিউ সাউথ ওয়েলসের কোবারগো পরিদর্শনে গিয়ে স্থানীয়দের তোপের মুখে পড়েন মরিসন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, মরিসন এক নারীর কাছে তার কুশল জানতে চেয়ে তার সঙ্গে হাত মেলানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু ওই নারীর হাত এগিয়ে যেতে দেখা যায়নি। বরং কড়া চোখে মরিসনের দিকে তাকিয়ে রাগান্বিত স্বরে তিনি বলেন, আমাদের স্থানীয় অগ্নিনির্বাপক বাহিনীকে আরো তহবিল সরবরাহ করলেই কেবল আপনার সঙ্গে হাত মেলাব। অনেক মানুষ তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন।

তখন আরো কয়েকজন অধিবাসী প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে কথা বলেন। আপনি এখানে আর কোনো ভোট পাবেন না, আপনি একটা ইডিয়ট। এখান থেকে ভাগেন, আপনি এখানে স্বাগত নন রকম বিভিন্ন কড়া কথা শুনিয়ে দেন তারা।

এমন বিরূপ আচরণের শিকার হয়ে শেষমেশ প্রধানমন্ত্রী মরিসন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগমন্ত্রী ডেভিড লিটলপ্রাউড দ্রুত হেঁটে গাড়িতে উঠে সঙ্গে সঙ্গে এলাকা ত্যাগ করেন।

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয়দের ক্ষোভের বিষয়টি স্বীকার করেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। তিনি জনগণের ক্ষোভের বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। কারণ তারা অনেক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

গত সেপ্টেম্বর থেকেই ক্রমাগত দাবানলে জ্বলছে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন এলাকা। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করার মধ্যেই কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী মরিসন হাওয়াই দ্বীপে অবকাশ যাপনে ছিলেন। মরিসন তার পূর্বনির্ধারিত ছুটিতে থাকলেও দেশের পরিস্থিতিতে তার অনুপস্থিতি অনেককেই ক্ষুব্ধ করে।

মরিসনের জলবায়ু পরিবর্তন নীতি নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। অনেকেই মনে করছেন, ইস্যুতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দাবি, আন্তর্জাতিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অন্যান্য দেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশটি। এদিকে বিরোধী লেবার পার্টির নেতা এন্থনি আলবানিজ বলছেন, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন