ইরানে ৩ দিনের শোক ঘোষণা, ভয়ঙ্কর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি

বণিক বার্তা অনলাইন

যুক্তরাষ্ট্রকে চরম মাসুল গুনতে হবে বলে সতর্ক করেছে ইরান। ইরাকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনার পরেই যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। খবর আল জাজিরা।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির উপদেষ্টা হাসেমুদ্দিন আশেনা বলেছেন, ওয়াশিংটন সীমা অতিক্রম করেছে। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনকে ভয়াবহ বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, কেউ একবার সীমা অতিক্রম করলে তাকে অবশ্যই এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ এই হত্যাকাণ্ডকে ‘মারাত্মক বিপজ্জনক’ ও ‘বোকামি’ বলে বর্ণনা করেছেন।

এদিকে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের সাবেক কমান্ডার ও বর্তমানে রাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী সংস্থার সচিব মহসেন রেজায়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে লেখেন, তিনি ( কাসেম) তার শহীদ ভাইদের সাথে যোগ দিয়েছেন। তবে আমরা যুক্তরাষ্ট্রর ওপর কঠোর প্রতিশোধ নেব।

সোলাইমানির মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেইনি। সোলাইমানি তার বাহিনীর কাজকর্মের বিষয়ে সরাসরি খামেইনির কাছে জবাবদিহি করতেন। খামেইনি জেনারেল সোলাইমানিকে ‘অর্ডার অব জুলফিকার’ পদক দেন। বিপ্লবোত্তর ইরানে এই খেতাব তিনিই প্রথম পান। এই শোককে শক্তিতে পরিণত করার কথা বলেছেন খামেইনি। তিনি বলেছেন, সোলাইমানির এ হত্যাকাণ্ড যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে দ্বিগুণ প্রেরণা যোগাবে। খামেইনি এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

পিএমএফের (পপুলার মোবিলাইজেশন ফোর্সেস) মুখপাত্র আহমেদ আল-আসাদি শুক্রবারের হত্যাকাণ্ডের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন।

ইরান সমর্থিত আধাসামরিক বাহিনীতে বেষ্টিত সোলেইমানি গাড়িতে করে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর অভিমুখে যাওয়ার সময় মার্কিন বিমান হামলার শিকার হন। ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনী আজ শুক্রবার জানিয়েছে,  রকেট হামলায় ইরাকি মিলিশিয়া নেতা আবু মাহদি আল-মুহানদিস ও সোলাইমানিসহ  কমপক্ষে ৮ জন নিহত হয়েছে। 

সোলাইমানির নিহত হওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পতাকার একটি ছবি টুইট করেছেন।

আরো হামলার আশঙ্কায় সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। রিপলিকানরা এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন, অনেক অধিকাংশ ডেমোক্র্যাট মার্কিন প্রেসিডেন্টের একক সিদ্ধান্তে এমন সামরিক অভিযানের আদেশ দেয়ার এখতিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। 

এ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারে। আন্তর্জাতিক বাজারে দিনের শুরুতে ব্রেন্ট ক্রুড ও ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে।  

ইরানি জেনারেল হত্যাকাণ্ডে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম, অস্থিরতার শঙ্কা

কংগ্রেসকে অন্ধকারে রেখেই ইরাকে ট্রাম্পের সামরিক অভিযান

কে এই কাসেম সোলাইমানি

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র তিক্ত-মধুর সম্পর্কের ইতিহাস

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন