ব্যাংকিং খাত

বছরব্যাপী সংকটের প্রভাব নেই পরিচালন মুনাফায়

হাছান আদনান

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। উল্টো খেলাপি ঋণ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন। নীতির ক্ষেত্রে খেলাপিদের দেয়া হয় অবারিত ছাড়। নাটকীয়তা ছিল ঋণ ও আমানতের সুদহার নয়-ছয়ে নামিয়ে আনা নিয়েও। সব মিলিয়ে বিদায়ী বছরজুড়ে টালমাটাল পরিস্থিতিতে ছিল দেশের ব্যাংকিং খাত। যদিও সংকটের বিরূপ প্রভাব পড়েনি ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফায়। বছর শেষে ব্যাংকিং খাতের পরিচালন মুনাফায় বড় ধরনের উল্লম্ফন হয়েছে। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে দেশের প্রায় সব বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেড়েছে।

বরাবরের মতো এবারো পরিচালন মুনাফায় শীর্ষে রয়েছে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। বিদায়ী বছরে ব্যাংকটি পরিচালন মুনাফা করেছে ২ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। মুনাফায় ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে এবি ব্যাংক, সিটি, এনসিসি, ব্যাংক এশিয়া, শাহজালাল, প্রাইম, সাউথইস্ট, পূবালী, যমুনা, স্ট্যান্ডার্ড, ইস্টার্ন, মার্কেন্টাইল, ব্র্যাক, এক্সিম, আল-আরাফাহ্, ডাচ্-বাংলা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, প্রিমিয়ার, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোস্যাল ইসলামী, ট্রাস্টসহ বেশির ভাগ বেসরকারি ব্যাংকের। তবে পরিচালন মুনাফা কমেছে ন্যাশনাল ব্যাংকের।

ভালো পরিচালন মুনাফা পেয়েছে নতুন প্রজন্মের ব্যাংকগুলোও। যদিও প্রত্যাশা অনুযায়ী মুনাফা করতে পারেনি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো। আগের বছরের তুলনায় এসব ব্যাংকের মুনাফা কমার আভাস পাওয়া গেছে। এর মধ্যে লোকসানের মাত্রা বেড়েছে লুণ্ঠনের শিকার বেসিক ব্যাংকের।

আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে যে মুনাফা থাকে, সেটিই কোনো ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা। পরিচালন মুনাফা কোনো ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। এ মুনাফা থেকে খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে প্রভিশন (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) সংরক্ষণ এবং সরকারকে কর পরিশোধ করতে হয়। প্রভিশন ও কর-পরবর্তী এ মুনাফাই হলো একটি ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট মুনাফা। বছর শেষে ব্যাংকারদের দেয়া ইনসেনটিভ বোনাসও কিছু ব্যাংক পরিচালন মুনাফার মধ্যে হিসাবায়ন করে থাকে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক বছরে দেশের ব্যাংকগুলোর ব্যালান্সশিট খুব বেশি বড় হয়নি। বছরব্যাপী সংকটের মধ্যেও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা বাড়ার সংবাদ ইতিবাচক। তবে পরিচালন মুনাফার তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। গত এক বছরে ব্যাংকগুলো প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করেছে। নগদ অর্থ আদায় না করেও অনেক ব্যাংক আয়ের খাতে দেখিয়েছে। এ ধরনের মুনাফা কখনই সুখকর নয়।

ব্যাংকগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সাল শেষে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড পরিচালন মুনাফা করেছে ২ হাজার ৮৭৫ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৮ সালে ব্যাংকটি ২ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করে।

প্রাপ্ত তথ্যে বিদায়ী বছরে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিচালন মুনাফা করেছে সাউথইস্ট ব্যাংক। ২০১৯ সালে ব্যাংকটি ১ হাজার ৬০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। এর আগে ২০১৮ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ১ হাজার ১২ কোটি টাকা। ভালো পরিচালন মুনাফা পেয়েছে বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংকও। ব্যাংকটি ২০১৯ সালে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। ২০১৮ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা হয়েছিল ১ হাজার ১০ কোটি টাকা।

পরিচালন মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হলেও বিষয়টিতে খুব একটা সন্তুষ্ট নন সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী পরিচালন মুনাফা পাইনি। সাউথইস্ট ব্যাংকের সামর্থ্য আছে আরো ভালো করার। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রি ভালো না থাকলে কারো একার পক্ষে ভালো করা সম্ভব নয়।

দেশের প্রথম সারির ব্যাংক হলেও সময় ভালো যাচ্ছে না ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের। খেলাপি ঋণের ভারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ছে ব্যাংকটি। ২০১৯ সালে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা কমেছে। বিদায়ী বছরে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৯৪৮ কোটি টাকা। যদিও ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২২৯ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৭ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ১ হাজার ৩৯ কোটি টাকা।

ন্যাশনাল ব্যাংককে পুরোপুরি ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানালেন ব্যাংকটির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) এএসএম বুলবুল। তিনি বলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা মুনাফা করতে পারিনি। তবে ব্যাংকের সব প্রডাক্টকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সব ধরনের সেবাকে ডিজিটাল করা হচ্ছে। আশা করছি, আগামী বছরের মধ্যে সংস্কারের সুফল পাওয়া যাবে।

আগের ধারাবাহিকতায় বিদায়ী বছরেও ভালো পরিচালন মুনাফা পেয়েছে ব্যাংক এশিয়া। ব্যাংকটি ২০১৯ সালে পরিচালন মুনাফা পেয়েছে ৯৪০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল ৮১১ কোটি টাকা। প্রডাক্ট বৈচিত্র্য সংকটের সময়েও ব্যাংক এশিয়া সমৃদ্ধির পথে হাঁটছে বলে জানান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরফান আলী। তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং কার্যক্রম আমাদের ব্যালান্সশিটকে শক্তিশালী করেছে। আগামীতে ব্যাংক এশিয়া আরো ভালো করবে।

২০১৮ সাল ভালো না কাটলেও বিদায়ী বছরে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বেসরকারি খাতের অন্যতম ব্যাংক দ্য সিটি। ২০১৯ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফায় ২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বিদায়ী বছরে সিটি ব্যাংক পরিচালন মুনাফা করেছে ৮২০ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৮ সালে এর পরিমাণ ছিল ৬৬৪ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন বলেন, সংকটেও সিটি ব্যাংক ভালো করেছে। এজন্য ভালো লাগছে। আগামীতেও সিটি ব্যাংক সমৃদ্ধির পথে হাঁটবে।

গত কয়েক বছর ভালো যায়নি এবি ব্যাংক লিমিটেডের। কিন্তু ২০১৯ সালে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বেসরকারি খাতের প্রথম ব্যাংকটি। বিদায়ী বছরে এবি ব্যাংকের মুনাফা দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১৮ সালে এবি ব্যাংকের মুনাফা ছিল ৩৩০ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে এ মুনাফায় দ্বিগুণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে জানান এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক আফজাল। তিনি বলেন, এবি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫০ শতাংশ কমেছে। ব্যাংকের অন্যান্য সূচকেও বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। দ্রুতই এবি ব্যাংক উজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে সমৃদ্ধির পথে হাঁটবে।

পরিচালন মুনাফায় বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি পেয়েছে এনসিসি ব্যাংকও। ২০১৮ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৬২৪ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে তা ৭৫২ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে ভালো সাফল্য পেয়েছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটি ২০১৯ সালে ৬৫৩ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। এর আগে ২০১৮ সালে এ মুনাফার পরিমাণ ছিল ৪৭৫ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম বলেন, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে রেখে ব্যাংকের সম্পদের গুণগতমান বাড়াতে চেয়েছি। পরিচালন মুনাফায় এর প্রতিফলন হয়েছে। আশা করছি, আগামীতে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক আরো ভালো করবে।

পরিচালন মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকেরও। ২০১৯ সালে ৮০১ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। ২০১৮ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৭২১ কোটি টাকা। ইসলামী ধারার এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ (এক্সিম) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায়ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৯ সালে এক্সিম ব্যাংক ৭৮০ কোটি এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৫৯০ কোটি টাকার পরিচালন মুনাফা করেছে। ২০১৮ সালে ব্যাংক দুটির পরিচালন মুনাফা ছিল যথাক্রমে ৬৮৬ কোটি ও ৫৪৩ কোটি টাকা। এ বিষয়ে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী বলেন, ২০১৯ সালটি পুরো ব্যাংকিং খাতের জন্যই কিছুটা সংগ্রামের ছিল। আশা করছি, নতুন বছর ভালো কিছু নিয়ে আসবে।

ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) পরিচালন মুনাফায়ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৯ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে ৬৮২ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৮ সালে এসআইবিএলের পরিচালন মুনাফা ছিল ৬২২ কোটি টাকা।

বিদায়ী বছরে বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংক প্রায় ৯০০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। ২০১৮ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৭৮০ কোটি টাকা। ভালো মুনাফা প্রবৃদ্ধি হয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকেরও। ২০১৯ সালে ৭৫৩ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। ২০১৮ সালে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৬৭৩ কোটি টাকা। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারণেই মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। এক্ষেত্রে শুধু পুনঃতফসিলের ওপর আমরা ভর করিনি। বরং নগদ আদায় বাড়িয়ে খেলাপি ঋণ কমানোর প্রক্রিয়া চলছে।

২০১৯ সালে পরিচালন মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে যমুনা ব্যাংকেরও। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে ৭৩০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা পেয়েছে। এর আগের বছর ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ৬২১ কোটি টাকা।

আগের বছরের তুলনায় ভালো করেছে ট্রাস্ট ব্যাংকও। তবে ব্যাংক হলিডের দিনও ব্যাংক খোলা রাখার কারণে হিসাবায়ন সম্ভব হয়নি বলে জানান ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক মঈনউদ্দীন। তিনি বলেন, ব্যাংকিং ক্যারিয়ারে কখনই দেখিনি ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংকিং কার্যক্রম হয়েছে। কিন্তু এবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন উপলক্ষে ব্যাংক খোলা রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশ দিয়েছে। গত শুক্র ও শনিবারও ঢাকায় ব্যাংক খোলা ছিল। কিন্তু ওই দুই দিন ট্রাস্ট ব্যাংকের লেনদেন হয়েছে মাত্র চারটি।

নতুন ব্যাংকগুলোও ২০১৯ সালে উল্লেখযোগ্য পরিচালন মুনাফা করতে সমর্থ হয়েছে। নতুন নয়টি ব্যাংকের মধ্যে বিদায়ী বছরে সবচেয়ে বেশি ২৭৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে ইউনিয়ন ব্যাংক। এছাড়া সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ২২৮ কোটি, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ২৫০ কোটি, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ১৩৪ কোটি, এনআরবি ব্যাংক ৯৩ কোটি, মধুমতি ব্যাংক ২১৮ কোটি ও মেঘনা ব্যাংক ১২৪ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। তবে পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) লোকসানের বৃত্ত ভাঙতে পেরেছে কিনা, সে তথ্য জানা যায়নি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে অগ্রণী ও জনতা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বাড়ার বিষয়ে আশাবাদী ব্যাংক দুটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মো. শামস-উল-ইসলাম বলেন, আমাদের ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার বেশি হবে। প্রায় একই পরিমাণ পরিচালন মুনাফা হবে বলে জানান জনতা ব্যাংকের এমডি মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ। তবে রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো ব্যাংকই গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত হিসাবায়ন শেষ করতে পারেনি।

সামগ্রিক বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ২০১৯ সালটি দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য কঠিন সময় ছিল। যে সংকটের মধ্য দিয়ে বিদায়ী বছর কেটেছে, তার শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের প্রথম দিকে। বিদায়ী বছরে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। অন্য বছরগুলোয় আমরা দেখতাম, এক প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ বাড়লে অন্য প্রান্তিকে কমেছে। কিন্তু ২০১৯ সালের সব প্রান্তিকেই খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাজনক প্রবণতা দেখা গেছে। খেলাপি ঋণ কমাতে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই ব্যাংকগুলো ৩০ হাজার কোটি টাকা পুনঃতফসিল করেছে। এটি অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় রেকর্ড। ঋণ পুনঃতফসিলের নীতিমালা সহজ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ব্যাংকিং খাতের জন্য বিদায়ী বছরটি মোটেও সুখকর ছিল না। এর মধ্যেও যেসব ব্যাংক ভালো করেছে, তাদের অভিনন্দন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন