বিপিএলে গতকাল শেষ বলের রোমাঞ্চে
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ২ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। শীর্ষে থাকা
চট্টগ্রামের বিপক্ষে এ জয়ে শেষ চারের লড়াইয়ে টিকে থাকল কুমিল্লা।
শেষ ওভারে কুমিল্লার প্রয়োজন পড়ে ১৬
রান। লিয়াম প্লাংকেটের করা প্রথম বল থেকে সিঙ্গেল নেন ডেভিড মালান। পরের বলটিকে
সীমানা ছাড়া করেন আবু হায়দার রনি। তৃতীয় বলটিকে ছক্কা মেরে ম্যাচ নিজেদের অনুকূলে
নিয়ে আসেন রনি। চতুর্থ বলে আসে সিঙ্গেল। স্ট্রাইকে আসেন মালান। কিন্তু পরের বলে ২
রান নিতে গিয়ে হন রান আউট। সুযোগ তৈরি হয় চট্টগ্রামের। জেতার জন্য শেষ বলে ৩ রান
করার চ্যালেঞ্জের মুখে কুমিল্লা। ব্যাটিং অর্ডার বদলে মুজিব-উর-রহমানকে পাঠানো
হয়। শেষ বলে বাউন্ডারি মেরে জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন মুজিব।
লক্ষ্য তাড়ায় কুমিল্লার হয়ে উদ্বোধনী
জুটিতে ৩০ রান যোগ করেন রবিউল ইসলাম ও স্তিয়ান ফন জিল। ১২ বলে ২২ রান করা জিলকে
ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন প্লাংকেট। উইকেটে এসেই ঝড় তোলেন মালান। ১৯ বলে ১৭ রান করা
রবিকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান রানা। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সৌম্যও। ৬
রান করা সৌম্য শিকার হন জিয়াউর রহমানের।
মালান প্রান্ত আগলে রাখলেও অন্য
প্রান্তে উইকেট পতন অব্যাহত ছিল। ১৫ বলে ১৮ রান করে বার্লের শিকার হন সাব্বির। একই
ওভারে ডেভিড ওয়েইজ ও মাহিদুল ইসলামকে ফিরিয়ে চট্টগ্রামকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন
রুবেল। তবে মালান হয়ে ওঠেন বড় বাধা। শেষ ওভারে মালান আউট হয়ে গেলেও প্রথমে রনি ও
শেষ দিকে মুজিব আগ্রাসনে স্নায়ুক্ষয়ী জয় পায় কুমিল্লা। ৫১ বলের ইনিংসে ৭৪ রান করেন
মালান। ৮ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন রনি। আর মাত্র ১ বল খেলেই এক বাউন্ডারিতে
ম্যাচ শেষ করে দেন মুজিব।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে
লেন্ডল সিমন্স ও জুনায়েদ সিদ্দিকীর ব্যাটে শক্ত ভিত পায় চট্টগ্রাম। ১১তম ওভারেই
শতরান পেয়ে যায় তারা। অবশ্য পরের ওভারেই
সিমন্সকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন সৌম্য। ৩৪ বলে ৫৪ রান করেন সিমন্স। পরের ওভারেই
সাজঘরে ফেরেন জুনায়েদ (৩৭
বলে ৪৫)। এরপর হঠাত্ করেই ভেঙে পড়ে মিডল অর্ডার। মাত্র ২ রান করে সাজঘরমুখো হন
রায়ান বার্ল। তাকেও ফেরান সৌম্য। দলীয় ১১৬ রানের মাথায় নেই চ্যাডউইক ওয়ালটনও (৯)।
বিপর্যস্ত দলকে টেনে নেয়ার দায়িত্ব কাঁধে নেন জিয়াউর রহমান। অন্য প্রান্ত থেকে খুব
বেশি সঙ্গ না পেলেও দলকে টেনে নিয়েছেন একাই। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২১ বলে ৩৪
রান করে। পর্যন্ত চট্টগ্রামের ইনিংস থামে ১৫৯ রানে। কুমিল্লার হয়ে সৌম্য ২০ রান
দিয়ে নেন দুই উইকেট। আল আমিন ও ওয়েইজ নেন একটি করে উইকেট।
আট ম্যাচে কুমিল্লার সংগ্রহ ৬ পয়েন্ট।
এক ম্যাচ বেশি খেলা চট্টগ্রাম ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে।
গতকাল রাতের ম্যাচে রাজশাহী রয়্যালসকে
৪৭ রানে হারায় রংপুর রেঞ্জার্স। নাঈম শেখ
(৫৫),
ক্যামেরন ডেলপোর্ট (৩১), লুইস
গ্রেগরি (২৮) ও জহুরুল ইসলামের
(১৯*) ব্যাটে ১৮২ রানের সংগ্রহ পায় রংপুর। জবাবে
তাসকিন আহমেদের (৪/২৯) দুরন্ত বোলিংয়ের মুখে জেতা হয়নি রাজশাহীর (১৩৫/৮)।
আট ম্যাচে এটা রংপুরের তৃতীয় জয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০
ওভারে ১৫৯/৬ (সিমন্স ৫৪, জুনায়েদ ৪৫, জিয়া ৩৪*; সৌম্য ২/২০, ওয়েইজ ১/২৬, সানজামুল ১/৩৩)। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৬১/৮ (মালান ৭৪, জিল
২২; রুবেল
২/১৬, মেহেদী ১/৩১, জিয়া ১/৩৬)। ফল:
কুমিল্লা ২ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা: ডেভিড
মালান (কুমিল্লা)।