জাপান থেকে পালিয়েছেন নিশানের সাবেক চেয়ারম্যান

বণিক বার্তা অনলাইন

গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিশানের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কার্লোস গোন জাপান থেকে লেবাননে পালিয়েছেন। কার্লোসের দাবি, জাপানের ‘কারচুপিপূর্ণ বিচারব্যবস্থা’ থেকে উদ্ধার পেতেই তিনি পালিয়ে এসেছেন। তবে তিনি কীভাবে জাপান ছাড়লেন তা স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে জাপানি কর্তৃপক্ষ রীতিমতো হতভম্ব! খবর সিএনএন।

কার্লোস গোনের জাপান থেকে পালানোর খবর প্রথম প্রকাশিত হয় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে। পত্রিকাটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে বলে, ‘শিল্প-রাজনৈতিক বন্দিদশায় থেকে ক্লান্ত’ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

মঙ্গলবার গোন নিজেই লেবাননে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেন। তার পাবলিক রিলেশনস (পিআর) সংস্থা থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, কার্লোস গোন বিচারিক প্রক্রিয়া থেকে পালাননি, বরং তিনি অন্যায় ও রাজনৈতিক নিপীড়ন থেকে পালিয়েছেন।

এদিকে জাপানে কার্লোসের আইনজীবী জুনিচিরো হিরোনাকা আজ মঙ্গলবার এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেছেন, তার মক্কেলের এভাবে জাপান ছাড়ার ঘটনা বিস্ময়কর। তার পাসপোর্টগুলো এখানে কৌঁসুলিদের কাছেই রয়েছে। এগুলো ব্যবহার করার সুযোগ থাকার কথা না।

কার্লোস গোনের ফ্রান্স ও লেবাননের নাগরিকত্ব রয়েছে। জাপান থেকে পালানো ঘটনায় ফ্রান্সও অবাক। দেশটির অর্থনীতি ও অর্থ বিষয়ক পররাষ্ট্র মন্ত্রী আনিস পানিয়ে উনাশা আজ ফ্রান্স ইন্টার রেডিওকে বলেন, ফরাসি সরকারও তার জাপান থেকে প্রস্থানে অবাক হয়েছে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। ফ্রান্সে বিচারিক প্রক্রিয়া থেকে কেউ পালালে আমরাও খুব ক্ষুব্ধ হতাম।

অবশ্য এর আগে কালোর্সকে কনস্যুলার সহায়তা দিয়েছিল ফ্রান্স। এ ব্যাপারে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলে পানিয়ে বলেন, বিদেশে বিচারের মুখোমুখি যে কোনো ফরাসি নাগরিককে এ ধরনের সহযোগিতা দেয়া হয়। তবে ফরাসি সরকার আবারো তা করবে কি না তা খোলাসা করেননি তিনি।

কার্লোস গোন এক বিবৃতিতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, জাপানের বিচার ব্যবস্থায় কাউকে পূর্ব থেকেই দোষী ধরে নেয়া হয়, এখানে ব্যাপকভাবে বৈষম্য রয়েছে এবং মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণ করা হয় না। তিনি বলেন, আমি এখন (লেবাবন) থেকে গণমাধ্যমের সঙ্গে মুক্তভাবে যোগাযোগ করতে পারবো। আগামী সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু হবে।

নিসানের সাবেক সিইও এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান রেনল্টের চেয়ারম্যান ও সিইও কার্লোস গোনের বিরুদ্ধে জাপানে আর্থ আত্মসাতের বেশ কয়েকটি  অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে নিজের আয় কমিয়ে দেখানো এবং নিজের নিয়ন্ত্রিত কার ডিলারশিপে নিসানের ৫০ লাখ ডলার ঢুকানোর মতো ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগেই চাকরি হারান তিনি। ২০১৮ সালের নভেম্বরে গ্রেফতার হন তিনি এবং ১০৮ দিন কারা ভোগ করেন।

তবে চলতি বছরের মার্চে কার্লোসকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু তার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তার বাড়ির ওপর নজরদারি রাখারও নির্দেশ দেন আদালত। এছাড়া তার ফোন ও কম্পিউটারও জব্দ করা হয়। জামিনের সময় পাসপোর্ট নিজের আইনজীবীদের কাছে জমা দিতে বাধ্য হন। দুই রাতের বেশি সময়ের জন্য কোথাও ভ্রমণের জন্য আদালত থেকে অনুমতি নেয়া তার জন্য বাধ্যতামূলক ছিল। এরপরও তিনি কীভাবে জাপান ছাড়তে পারলেন সে এক রহস্য!

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন