রাজাকারের তালিকা সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারের তালিকা নতুন করে যাচাই-বাছাই করে সংশোধন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বুধবার আওয়ামী লীগ কার্যালয় জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে গত রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী ১০ হাজার ৭৮৯ রাজাকারের তালিকার প্রথম কিস্তি প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সেসময় তিনি জানান, যাচাই-বাছাই করে ধাপে ধাপে আরো তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে সেই তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নির্যাতিতদের নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়টি সারা দেশে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনার ঝড় তুলেছে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ বিষয়টা আমাদের নজরে এসেছে এবং আমাদের নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) এরই মধ্যে জানেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে আমাদের নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) নির্দেশনা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে ভুল সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছে। আমাদের নেত্রীও তাদের যাচাই-বাছাই করে এখানে যেন ভুলভ্রান্তি না থাকে, ভুলভ্রান্তি থাকলে সংশোধন করে তালিকা প্রকাশের নির্দেশনা দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে যেহেতু মন্ত্রণালয় দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং যাচাই বাছাইয়ের অঙ্গিকার করেছে; এ নিয়ে আর প্রশ্ন থাকার কথা নয়।’

সম্মেলনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতাদের চরিত্র হনন না করার নির্দেশনা দেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, আওয়ামী লীগ একটা পরিবার, এই পরিবারে আমরা অনেকেই আছি, নেতা আছি কর্মী আছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই গোটা পরিবার ঐক্যবদ্ধ। সেটা আমাদের আমাদের কর্মকান্ডে আচার আচরণে আমাদের চলাফেরায় প্রমাণ করতে হবে। নেতাকর্মীদের প্রতি অনুরোধ করবো, কেউ কারও অতিউৎসাহীভক্ত হবেন না। আপনারা অতিউৎসাহীভক্ত সেজে বিলবোর্ডে নানা রকম ছবি প্রদর্শন করেন। নিজেকে প্রচার করার জন্য অন্যের ছবি ব্যবহার করেন, এতে কিন্তু শৃঙ্খলা নষ্ট হয়।

তিনি বলেন, ‘কার দায়িত্ব কোথায় হবে এটা ঠিক করার জন্য, নির্ধারণ করার জন্য একজন আছেন। আওয়ামী লীগের শেখ হাসিনা ছাড়া আর কেউই অপরিহার্য নয়। আমরা যে যেখানে আছেন যে কেউ পরিবর্তন হতে পারেন। এটা নেত্রী ঠিক করবেন কাকে কোথায় রাখবেন। নেত্রীর প্রতি আস্থা আমাদের সকলে আছে।’

সম্মেলনকে সামনে রেখে আভ্যন্তরীন কাদা ছোঁড়াছুড়ি থেকে বিরত থাকতে বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘কারও অতিউৎসাহী ভক্ত হয়ে অন্য কারও বিরুদ্ধে অপপ্রচার, ফেইসবুকে অপপ্রচার। এই বিষয়গুলো সম্মেলন আসলে হয়। এগুলো কাকে দেখাতে চান? কে কী নেত্রী (শেখ হাসিনা) ভালো করেই জানেন। সম্মেলনের সময় ফেইসবুকে কারও চরিত্র হনন করা, এটা একটা নোংরা কাজ। এই নোংরা কাজ যারা করছে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে, বিরত রাখতে হবে।’

দলে অসুস্থ প্রতিযোগিতা না করার পরামর্শ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নেতৃত্বের আকাঙ্খা থাকতে পারে, প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। এটা আমাদের আভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা। প্রত্যেকেরই আকাঙ্খা থাকতে পারে, কিন্তু এটা যেন অসুস্থ প্রতিযোগিতায় পরিণত না হয়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর মন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বৈঠকে বক্তব্য রাখেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন