কাশ্মীর ইস্যুতে ফের বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ

বণিক বার্তা অনলাইন

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরিদের সায়ত্ত্বশাসন কেড়ে নেয়ার ভারতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে আবারো চীনের অনুরোধে  বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। গত ১৬ আগস্ট একই ইস্যুতে জাতিসংঘের সুরক্ষা কাউন্সিল বৈঠক করেছিলো। তবে কোন প্রকার সিদ্ধান্ত ছাড়া শেষ হয় ওই বৈঠক। চীনের অনুরোধে দুই মাস পর ফের আলোচনায় মিলিত হচ্ছেন তারা।

কাশ্মীর ইস্যুতে আবারো সহিংসতা বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি গত ১২ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদের কাছে একটি চিঠি পাঠান। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীনের অনুরোধে আবারো আলোচনায় মিলিত হচ্ছে।

রয়টার্সের প্রত্যক্ষ করা নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে পাঠানো এক নোটে চীনের জাতিসংঘ মিশন লিখেছে, “ফের উত্তেজনার বৃদ্ধির ঝুঁকি ও পরিস্থিতির গুরুত্বকে সামনে রেখে, চীন পাকিস্তানের অনুরোধের পুনারাবৃত্তি করে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিস্থিতির ওপর কাউন্সিলের একটি ব্রিফিংয়ের জন্য অনুরোধ করছে।”

বৈঠকটি মঙ্গলবারই হচ্ছে বলে পরিচয় না প্রকাশ করার শর্তে নিশ্চিত করেছেন কূটনীতিকরা।

৫ অগাস্ট ভারতের পার্লামেন্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হয়। এ কারণে সায়ত্বশাসন হারায় কাশ্মীরিরা। সেখানে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা নন এমন নাগরিকদের সম্পত্তি কেনা ও বিয়ে করার সুযোগ করে দিয়েছে ভারত। এর প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে কাশ্মীরিরা। তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে।

অবরোধও চলছে। এদিকে ওই দিনটি থেকে কাশ্মীরের টেলিফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বন্ধ করে রেখেছে দিল্লি এবং লোকজনের অবাধ চলাচল ও জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। দুইজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আব্দুল্লাহসহ কয়েকশ কাশ্মীরি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় সেই সময় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বরাবর একটি চিঠি লিখেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি। তিনি চিঠিতে ভারতের সিদ্ধান্ত নিয়ে বৈঠকে বসার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান।

চিঠিতে কুরেশি লিখেছেন, ‘পাকিস্তান কাশ্মীরে যুদ্ধের উস্কানি দেবে না। কিন্তু ভারত যেন আমাদের সংযমকে দুর্বলতা না ভাবে। ভারত যদি ফের শক্তি প্রয়োগ করার পথে যায়, আত্মরক্ষার জন্য সর্বশক্তি নিয়ে পাকিস্তান জবাব দিতে বাধ্য হবে।’

১৯৪৮ সালে ও ১৯৫০-র দশকে কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধের বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। এর মধ্যে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গণভোট নেয়ার কথাও ছিল। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্রবিরতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য ১৯৪৯ সাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মোতায়েন আছে।

সূত্র, আল জাজিরা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন