বরিস জনসনে সতর্ক আস্থা ব্রিটিশ ব্যবসায়ীদের

বণিক বার্তা অনলাইন

নির্বাচনের প্রধান প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ব্রেক্সিট সম্পন্ন হয়ে গেলে ব্রিটিশ ব্যবসাগুলোর জন্য অবারিত সম্ভাবনা ‘উন্মুক্ত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কিন্তু নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে এই প্রতিশ্রুতির অর্থ হলো, যাদের অনেকেই ব্রেক্সিটের বিপক্ষে লবিং করেছেন, নিকট ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে আরো দূরত্ব তৈরি এবং এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়া।

কিন্তু এই রূপান্তরের অর্থনৈতিক ক্ষতি নতুন বাণিজ্য চুক্তিগুলো থেকে পূরণ হবে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়া অভিবাসন নীতিমালা সংস্কারের পরিকল্পনাকেও বিবেচনায় রাখতে হচ্ছে। যা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলবে।

ফলে ব্রেক্সিটপন্থী দলটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সফলভাবে ছাড়ার পাশপাশি ব্যবসাগুলোর প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারবে কিনা সে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ৮০ আসনে সংখ্যাগড়িষ্ঠতা পেয়েছে বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি। ফলে জনসন যে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে সহজেই পার্লামেন্ট পার করতে পারবেন যে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। 

তিন বছর শেষে যুক্তরাজ্যের জোট ছাড়ার পথ পরিষ্কার হলেও, এখনো একটি প্রতিবন্ধকতা বাকি রয়েছে। অবশিষ্ট সময়ের মধ্যে ইইউর সঙ্গে যদি একটি বাণিজ্য চুক্তি করা না যায়, তবে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি বাণিজ্য চুক্তি ছাড়াই জোট ছাড়তে হবে যুক্তরাজ্যকে।

সিবিআইর উপ-মহাপরিচালক জশ হার্ডিন বলেন, ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা জোটের সঙ্গে সর্বোচ্চ বাণিজ্য সম্পর্ক বহাল রাখতে চায়, অনেকটা ইইউর সদস্য হিসেবে থাকার মতো। কিন্তু নতুন সরকার জোটের সঙ্গে ব্যবধান বাড়াতে প্রত্যয়ী। যেখানে ইইউর একক বাজার ও শুল্ক ইউনিয়নের বাইরে থাকবে যুক্তরাজ্য।

ফেডারেশন অব স্মল বিজনেসের জাতীয় চেয়ারম্যান মাইক চেরি বলেন, ব্রেক্সিট ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো বিদেশী বাজারগুলোয় সম্প্রসারিত হওয়ার সুযোগ তৈরি করবে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক সবসময়ই আলোচনার শীর্ষে থাকবে।

এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো কনজারভেটিভ পার্টিকে সমর্থন দিয়েছে উত্তর ইংল্যান্ডের ভোটাররা। তাদের এ সমর্থনের প্রতিদান দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বরিস জনসন। ফলে উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোর প্রকল্পগুলোতে প্রধানমন্ত্রী ৮ হাজার কোটি পাউন্ড পর্যন্ত অর্থায়ন করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হিসাবরক্ষণ প্রতিষ্ঠান কেপিএমজির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়েল সেলফিনের মতে, এ ধরণের ব্যয় যুক্তরাজ্যের পতনমুখী প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ব্রেক্সিট চুক্তি ঘিরে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে সরকারি ব্যয়ের প্রয়োজন রয়েছে, তবে অনিশ্চয়তার মেঘ কাটাতে সরকারকে আরো অনেক কিছু করতে হবে বলে মনে করছেন তিনি।

সেলফিন বলেন, একটি দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে যুক্তরাজ্য দীর্ঘদিন ধরে দূর্বল উৎপাদনশীলতা ও পতনমুখী আঞ্চলিক সুযোগের মতো যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে নতুন সরকারকে অবশ্যই সেসব দিকে মনোযোগ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে নতুন প্রযুক্তি ও জলবায়ু পরিবর্র্তন যেসব চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ তৈরি করছে সেগুলোরও মোকাবেলা করতে হবে।

সূত্র: বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন