প্রথম পর্বে উজ্জ্বল দেশীয়রা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু বিপিএলকে দেশীয়দের মেলে ধরার মঞ্চ হিসেবে তৈরি করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিশেষ করে আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় টি২০ বিশ্বকাপ সামনে রেখে বিসিবির এ তোড়জোড়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তাই বারবার বলা হচ্ছিল, এবারের আসরকে পাখির চোখ করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

টি২০ স্কোয়াডের দুর্বলতাগুলোও বিপিএলের বিশেষ এ আসর দিয়ে পুষিয়ে নিতে চেয়েছিল তারা। এরই মধ্যে ঢাকায় প্রথম পর্বের ৮টি ম্যাচ শেষ হয়েছে। নানা অনিয়ম ও বিতর্কের মাঝেও বিপিএলের শুরুতে ইতিবাচক দিক হচ্ছে দেশীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স। যদিও এখন পর্যন্ত প্রতিটি দল ২-৩টি করে ম্যাচই খেলেছে। কিন্তু সেখানেও উল্লেখযোগ্য কিছু ইনিংস খেলেছেন স্থানীয় ক্রিকেটাররা। যে কারণে ব্যাটে-বলে সেরাদের তালিকায় উপরের দিকেই আছে ঘরের ছেলেরা। বিপিএলের প্রথম ম্যাচেই ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন দেশীয় দুই ক্রিকেটার মোহাম্মদ মিঠুন ও ইমরুল কায়েস।

৪৮ বলে ৮৪ রান করা মিঠুনের সিলেট থান্ডারকে হারিয়েই ম্যাচটি জিতেছিল ইমরুলের চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। সে ম্যাচে ৩৮ বলে ৬১ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন ইমরুল। যিনি এখন পর্যন্ত বিপিএলের সর্বোচ্চ সংগ্রাহকও বটে। ইমরুল ৩ ম্যাচে ৫৮.৫০ গড়ে করেছেন ১১৭ রান। ৮৪ রানের দারুণ ইনিংস খেলেও পরাজিত দলে থাকা মিঠুন অবশ্য আছেন তালিকার দুই নম্বরে। ইমরুলের সঙ্গে অবশ্য যৌথভাবে শীর্ষ স্থানে আছেন একজন বিদেশী। তিনিও খেলছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে। সেই চ্যাডউইক ওয়ালটনের রানও তিন ম্যাচ খেলে ইমরুলের সমান ১১৭। সর্বোচ্চ রান ৫০। এদিকে বিরতির পর ফিরে প্রথম ম্যাচে শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকা প্লাটুন ওপেনার তামিম ইকবালের। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে দারুণভাবে ফিরে এসেছেন তিনি। বিশেষ করে দ্বিতীয় ম্যাচে তামিম ছিলেন দুর্দান্ত। যেখানে ৫৩ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় তামিম করেছিলেন ৭৪ রান। পরের ম্যাচেও তার ব্যাট থেকে আসে কার্যকর ৩১ রান।

সব মিলিয়ে তিন ম্যাচে ৩৬.৬৬ গড়ে ১১০ রান দিয়ে তামিম আছেন পরের অবস্থানে। সেরা দশের এ তালিকায় দেশীয়দের আধিপত্য অবশ্য এখানেই শেষ নয়। পরের চারটি পজিশন ঘরের ছেলেদের দখলে। সিলেট হারের ধারায় থাকলেও দলের অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ভালোই আলো ছড়িয়েছেন ব্যাট হাতে। ৩ ম্যাচে তার রান ১০৯। সর্বোচ্চ রান ৬০। তালিকায় এর পরই আছেন ঢাকার এনামুল হক বিজয়। ৩ ম্যাচে তার রান ১০০। সর্বোচ্চ ৬২ রান। রংপুর রেঞ্জার্স হারের বৃত্তে থাকলেও, দারুণ ব্যাটিং করছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। দুই ম্যাচ খেলে তার রান ৯৫। যেখানে ৭৮ রানের দুর্দান্ত একটি ইনিংসও আছে। ওই ম্যাচে হারলেও ম্যাচসেরার পুরস্কার পান নাঈম। পরের অবস্থানটি রাজশাহী রয়্যালসের লিটন দাসের। ২ ম্যাচে তার রান ৮৩।

বল হাতে সেরার তালিকায় অবশ্য একক আধিপত্য নেই দেশীয়দের। এমনকি শীর্ষে স্থানটি দখলে রেখেছেন একজন বিদেশী। ৫ উইকেট নিয়ে সবার উপরে অবস্থান করছেন ঢাকা প্লাটুনের লংকান পেসার থিসারা পেরারা। ৩ ম্যাচে তার উইকেট ৫টি। ৪টি করে উইকেট নিয়ে পরের তিনটি অবস্থানে আছেন অলক কাপালি, সৌম্য সরকার ও লুইস গ্রেগরি। ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন ছয়জন। যেখানে বাংলাদেশী তারকাদের মাঝে আছেন ফরহাদ রেজা, আল আমিন, মাশরাফি বিন মর্তুজা ও রুবেল হোসেন। সব মিলিয়ে বিপিএলের ইতিবাচক শুরুতে ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিয়েছেন দেশীয় ক্রিকেটাররা। এখন এ পারফরম্যান্স ঘরের ছেলেরা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেন কিনা, সেটিই দেখার অপেক্ষা।
সেরা ৫ ব্যাটসম্যান
নাম        দল        ম্যাচ        রান
ইমরুল        চট্টগ্রাম        ৩        ১১৭
ওয়ালটন    চট্টগ্রাম        ৩        ১১৭
মিঠুন        সিলেট        ৩        ১১২
তামিম        ঢাকা        ৩        ১১০
মোসাদ্দেক    সিলেট        ৩        ১০৯

সেরা ৫ বোলার
নাম        দল        ম্যাচ        উইকেট
থিসারা        ঢাকা        ৩        ৫
কাপালি        রাজশাহী    ২        ৪
সৌম্য        কুমিল্লা        ২        ৪
গ্রেগরি        রংপুর        ২        ৪
রেজা        রাজশাহী    ২        ৩

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন