একাত্তরের চিকিৎসকরা

রাহাত মিনহাজ

হাইড পার্ক (Hyde park), লন্ডন। মনোরম, ছিমছাম ব্রিটিশ আভিজাত্যের প্রতীকে মোড়া একটি সাজানো উদ্যান। সেন্ট্রাল লন্ডনের পার্কেই ১৯৭১ সালের এপ্রিলে নিজেদের পাকিস্তানি পাসপোর্ট পুড়িয়েছিলেন একদল বাঙালি তরুণ। বাংলার বুকে ২৫ মার্চের জেনোসাইড সম্পর্কে জানতে পারার পরই যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ‘আর নয় এখন যুদ্ধে যাওয়ার সময়। যোদ্ধাদের পাশে দাঁড়ানোর সময়, সেবা দেয়ার সময়। কোনো অবস্থায়ই ২৩ বছরের শোষণ আর সহ্য করার সুযোগ নেই, ধর্মের নামে বর্বর পাকিস্তানিরা যে ঘৃণ্য হত্যা-নির্যাতন বাংলার মাটিতে চালিয়েছে, তার শোধ নিতেই হবে। বাঙালি তরুণদের ওই দলে ছিলেন দুজন চিকিৎসক। সম্ভ্রান্ত, উচ্চবিত্ত পরিবারের দুই তরুণের সামনে ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি। কিছুদিন পরই ডাক্তারি পাস করে তারা বিলেতে নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করতে পারতেন। কাঙ্ক্ষিত সব সুখ উপভোগের সুযোগ ছিল হাতের মুঠোয়। কিন্তু দেশমাতৃকার কথা চিন্তা করে তারা পুড়িয়েছেন পাকিস্তানের পাসপোর্ট। এরপর নিজেদেররাষ্ট্রবিহীন নাগরিকহিসেবে ঘোষণা করেছেন। নানা কাঠখড় পুড়িয়ে সংগ্রহ করেছেন ভারতীয় ভিসা। ভারতে নেমেই মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা দিতে একটি হাসপাতাল গড়ার কাজ শুরু করেন দুই তরুণ। ত্রিপুরার মেলাঘরের বিশ্রামগঞ্জে গড়ে ওঠে একটি হাসপাতাল। ছন, বাঁশ আর অক্লান্ত শ্রমে গড়ে ওঠে ৪৮০ শয্যার একটি হাসপাতাল। যেখানে আহত নির্যাতনের শিকার মুক্তিযোদ্ধা শরণার্থীদের দিন-রাত সেবা দিয়েছেন দুই তরুণ চিকিৎসক। দুই চিকিৎসক ছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী ডা. এমএ মবিন।

১৯৭১ সালে সেক্টর-টুর কমান্ডার ছিলেন খালেদ মোশাররফ। সাথে ছিলেন যোগ্য সহযোগী মেজর হায়দার। কমান্ডের অধীনে ছিল ঢাকার যুদ্ধাঞ্চল। তাই দলে দলে ঢাকা এর আশপাশের অগ্রসরমান তরুণরা ভিড় করেছিলেন ত্রিপুরার মেলাঘরে স্থাপিত যুদ্ধশিবিরে। রণকৌশলে বিশেষ পারদর্শী খালেদ-হায়দার জানতেন জনযুদ্ধের প্রধান স্ট্র্যাটেজি হবেগেরিলা যুদ্ধ আর যুদ্ধ পরিচালনা করতে গিয়েই দলে দলে দামাল আহত হচ্ছিলেন। যাদের সেবায় দিন-রাত কাজ করেছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী ডা. মোবিনের ফিল্ড হাসপাতাল। যাদের সঙ্গী ছিলেন একদল নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক সেবক-সেবিকা। যাদের অন্যতম ছিলেন ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম, বীর প্রতীক।

১৯৭০ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সামরিক মেডিকেল কোরের চিকিৎসক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন সিতারা বেগম। ১৯৭১ সালে মার্চের উত্তাল দিনগুলোতে নিয়মিত ছুটির অংশ হিসেবে অবস্থান করছিলেন জন্মস্থান কিশোরগঞ্জে। তার কর্মস্থল ছিল কুমিল্লা সেনানিবাস। বর্বর হত্যাযজ্ঞের পর তিনি আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চাকরিতে ফেরেননি। অনুসরণ করেন বড় ভাই

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন