মুক্তিযুদ্ধে শহীদ চিকিৎসক

ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ

৩০ লাখ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা সমভাবে ধারণ করেও আমরা প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি। স্বতন্ত্রভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের পেছনে একটা আলাদা প্রেক্ষাপট রয়েছে। ৩০ লাখ শহীদের অধিকাংশকে হত্যা করা হয়েছিল নির্বিচারে, গণহত্যার আদলে বা সম্মুখ সমরে। বাংলাদেশকে ভৌগোলিক বা অর্থনৈতিকভাবে পরাধীন রাখাটাই মুখ্য অভিসন্ধি ছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের অগ্রসরতার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যখন পাকিস্তানি যুদ্ধবাজদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠছিল, তখন তারা এক অভিনব সুদূর ফলপ্রসূ ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। বাংলাদেশকে মেধাগতভাবে বিকলাঙ্গ করার নীলনকশা তৈরি করে। শিশু যেন জন্মগত মনোস্নায়বিক ত্রুটি নিয়ে প্রসূত হয়; বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশ নামের নতুন একটি দেশ সংযোজিত হলেও দেশটি মেধা মননে বিশ্বদরবারে যেন কখনো মেরুদণ্ড খাড়া করে দাঁড়াতে না পারে, সেজন্য জিঘাংসুদের লক্ষ্যবস্তু নির্ধারিত হয় বাংলাদেশের মেধাবী শ্রেণী। বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা হয়ে দাঁড়ান তাদের বুলস আই। মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবী নিধনের এজেন্সি দেয়া হয় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আলবদর, আলশামস রাজাকার বাহিনীকে। চিন্তাচেতনায় প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন করে তাদের নাটের গুরু রাও ফরমান আলীর সুপরিকল্পিত নির্দেশনায় ওই এজেন্টরা হত্যা করে। স্বাধীনতার অব্যবহিত পর উদ্ধারকৃত রাও ফরমান আলীর ব্যক্তিগত ডায়রি অন্যান্য নথিপত্রে তালিকা পাওয়া যায়। বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ছিল রক্তপিপাসু রাক্ষসের Supernumerary Canine Teeth বা অতিরিক্ত শ্বদন্তের মরণঘাতী দংশন। পাকিস্তানি শাসক চক্র তার দেশীয় দোসরদের দিয়ে পরিচালিত বিপুল হত্যাযজ্ঞের মধ্যে বুদ্ধিজীবী হত্যার উপযোজিত উদ্দেশ্যকে একটি বিশেষ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করার জন্যই ৩০ লাখ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা বাংলাদেশের জনগণ নিরপেক্ষভাবে পোষণ করেও স্বতন্ত্রভাবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করে থাকে। চিকিৎসকরা বুদ্ধিজীবী সমাজের অগ্রবর্তী প্রতিনিধি। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের একটা বড় অংশ চিকিৎসক।

দ্বিতীয়ত, পেশাগত কারণে চিকিৎসকরা সাধারণ মানুষের খুব কাছাকাছি অবস্থান করেন বিধায় জনসংযোগের সুযোগ তাদের অনেক বেশি। মহান ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ তথা বাংলাদেশের যেকোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনে চিকিৎসকরা সুযোগ ইতিবাচক অর্থে কাজে লাগিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা সংগঠনে-বিকাশে, আহত-অনাহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণান্তকর শুশ্রূষায়, সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণে, কয়েকটি ক্ষেত্রে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিকিৎসক সমাজ তথা শহীদ চিকিৎসকদের অনেকেই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। শহীদ চিকিৎসকদের জীবনবৃত্তান্ত পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, নিজ নিজ পেশায় দক্ষতার পাশাপাশি তারা সামাজিক-সাংস্কৃতিক-সাংগঠনিক প্রেক্ষাপটেও উজ্জ্বল ছিলেন। ছাত্রজীবনে অসাধারণ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের অধিকারী ছিলেন অধ্যাপক ডা.

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন