জ্বালানি তেলের অব্যাহত দরপতন রোধে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে পণ্যটির উত্তোলন ও রফতানিকারক ১৪ দেশের সংগঠন ওপেক ও রাশিয়ার নেতৃত্বে গঠিত ওপেক প্লাস। লক্ষ্য অর্জনে সম্প্রতি জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন আরো কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটটি, যা আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকজুড়ে (জানুয়ারি-মার্চ) কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এরই মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) জানিয়েছে, জোটটির এ সিদ্ধান্ত আগামী বছর জ্বালানিটির উদ্বৃত্ত সরবারহ রোধ করে বাজার চাঙ্গা করতে সক্ষম হবে না। খবর ব্লুমবার্গ ও সিএনএন বিজনেস।
সম্প্রতি অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় ওপেকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে আগের চুক্তিটি বহাল রাখার সঙ্গে আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন দৈনিক আরো পাঁচ লাখ ব্যারেল কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় জোটটি। অর্থাৎ এ সময়ে জোটভুক্ত দেশগুলো সম্মিলিতভাবে পণ্যটির উত্তোলন দৈনিক ১৭ লাখ ব্যারেল কমাবে, যা পণ্যটির মোট বৈশ্বিক সরবরাহের ১ দশমিক ৭ শতাংশ।
এদিকে আইইএর সর্বশেষ মাসভিত্তিক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ওপেক ও এর সহযোগী সংস্থার উত্তোলন দৈনিক ২১ লাখ ব্যারেল কমালেও এ সময়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক মজুদে দৈনিক সাত লাখ ব্যারেল যুক্ত হবে। ফলে জোটটির পরিকল্পনা কার্যত ব্যর্থই থেকে যাবে।
আইইএর মতে, এর পেছনে প্রধান ভূমিকা রাখবে ওপেকবহির্ভূত দেশগুলো। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র। শেল অয়েলের (পাথুরে ভূমি থেকে উত্তোলিত তেল) আধিপত্যে গত এক দশকে দেশটিতে জ্বালানি তেলের উত্তোলন দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো জ্বালানি তেলের নিট রফতানিকারকে পরিণিত হয়েছে। আগামী বছরও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এছাড়া ব্রাজিল, নরওয়েসহ অন্যান্য দেশে জ্বালানি তেল উত্তোলন চাহিদার তুলনায় দ্রুতগতিতে বাড়ছে।
ওপেকের উত্তোলন হ্রাসের ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে নিউইয়র্কের আদর্শ বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে ১২ সপ্তাহের সর্বোচ্চে পৌঁছে যায়। এর পরই বাজার পরিস্থিতি বুঝতে পেরে পণ্যটির দাম কমে ফের ব্যারেলপ্রতি ৬০ ডলারের নিচে নেমে যায়।
প্যারিসভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছর শেষে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক ব্যবহার দাঁড়াবে দৈনিক গড়ে ১০ লাখ ব্যারেল। আগামী বছর এর পরিমাণ হবে ১২ লাখ ব্যারেল।