প্রণোদনা প্রত্যাহারে ভারতের মসলা রফতানিতে বড় ধস

বণিক বার্তা ডেস্ক

হঠাৎ প্রণোদনা প্রত্যাহার করায় ভারতের মসলা রফতানিতে বড় ধরনের পতন দেখা দিয়েছে। বাণিজ্যসংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিন মাসের ব্যবধানে পণ্য রফতানি ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কমে গেছে। শিগগিরই প্রণোদনা চালু না করলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। খবর ইকোনমিক টাইমস।

বৈদেশিক বাণিজ্য নীতির অধীনে মার্চেন্ডাইজ এক্সপোর্টস ফ্রম ইন্ডিয়া স্কিমের (এমইআইএস) আওতায় ২০১৫ সাল থেকে ভারতের মসলা রফতানিকারকরা থেকে শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু আগস্ট থেকে বৈদেশিক বাণিজ্য বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজিএফটি) প্রণোদনা বন্ধ করে দেন।

ভারত মসলা রফতানি থেকে বছরে আয় করে ১৮ হাজার কোটি রুপি। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে খাতে ভারতের আধিপত্য মরিচ, জিরা, হলুদ, মসলাজাত তেল এবং রেজিন সমৃদ্ধ মসলাজাত তেলের (অলেওরেজিন) মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। যেখানে আন্তর্জাতিক মসলা বাজারে অন্তত ২০টি আইটেমে ভারতের বেশ আধিপত্য ছিল।

সর্বভারতীয় মসলা রফতানিকারক ফোরামের চেয়ারম্যান রাজিব পালিচা বলেন, আমরা এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানিয়েছি। প্রণোদনা ফের চালু করা ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা শেষ হয়ে যাবে।

গুজরাটের উনঝাভিত্তিক জিরা রফতানিকারক ইউ কার্তিক বলেন, প্রণোদনা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জিরা রফতানির জন্য নির্দিষ্ট ২০০ কোটি রুপির চলতি মূলধন আটকে গেছে। মসলায় প্রণোদনা বন্ধ করে দেয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বলেও মন্তব্য করেন রফতানিকারক।

ব্যাপারে মসলা বোর্ডের সচিব ডি সত্যয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে ডিজিএফটির সঙ্গে পরামর্শ করছে।

এদিকে নিয়ে দ্য ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান স্পাইস স্টেকহোল্ডার্সের আহ্বানে গত বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে রফতানিকারকদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রণোদনার বিষয়টির সমাধান যদি দ্রুত করা না যায়, তাহলে যেসব কারখানা বর্তমানে সক্ষমতার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ উৎপাদন ধরে রাখতে পেরেছে, সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।

বৈঠকে অংশ নেয়া ব্যবসায়ীরা জানান, তারা নতুন ক্রয়াদেশ নিচ্ছেন না। ফলে ১০ থেকে ২০ শতাংশ দাম পড়ে গেছে। এতে পরোক্ষভাবে কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

আন্তর্জাতিক বাজারে অলেওরেজিনের অন্যতম রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান সিথাইট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিজু জ্যাকব বলেন, নতুন চুক্তির ক্ষেত্রে প্রণোদনা আমাদের প্রান্তিক মুনাফায় প্রভাব ফেলে। এখন সেটি বন্ধ হয়ে গেলে আমরা চুক্তির মাঝপথ থেকে তো ফিরে আসতে পারব না।

তিনি জানান, রফতানিকারকরা সাধারণত আমদানিকারক বা ক্রেতাদের সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি করে থাকেন। বিষয়ে রাজিব পালিচা বলেন, ডিসেম্বর থেকে নতুন মসলা বাজারে আসতে শুরু করবে। নিয়ে রফতানিকারকরা খুব চিন্তায় আছেন। কারণ নতুন চুক্তি শুরু হয় সাধারণত মার্চ থেকে। কিন্তু ওই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করাটা আমাদের জন্য সম্ভব নয়। প্রণোদনার বিষয়টি যত দ্রুত সম্ভব মিটিয়ে ফেলা জরুরি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন