২০৩০ সালের মধ্যে ২৫ কোটি মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দিতে চায় ব্র্যাক

২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ভূমিকা রাখতে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক তার বৈশ্বিক কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন, সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ার এমেরিটাস স্যার ফজলে হাসান আবেদ।

তিনি বলেন, এই পরিকল্পনার আওতায় ব্র্যাক পরবর্তী দশ বছরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৫ কোটি অনগ্রসর নারী ও তাদের উপর নির্ভরশীল সদস্য, তরুণ-তরুণী এবং দরিদ্র মানুষকে সেবা প্রদান করতে চায়।

আজ বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এতথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে ফজলে হাসান আবেদ বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবী থেকে অতিদারিদ্র্য নির্মূলের যে অঙ্গীকার করা হয়েছে, সেই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বাকি দশ বছরে আমাদের সকলকে আরও জোরদার ভূমিকা রাখতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্র্যাক  সবসময়ই বড় আকারে কর্মসূচি পরিচালনা করে বহু মানুষের মধ্যে তার কাজের প্রভাব ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে। যে কোনো কাজ ছোট আকারে করার মধ্যে একটি সৌন্দর্য আছে, কিন্তু বড় পরিসরে না করলে কাজের প্রকৃত প্রভাব সৃষ্টি করা যায় না।

বিগত ৪৭ বছর বাংলাদেশে এবং ১৭ বছর আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কর্মসূচি পরিচালনার অভিজ্ঞতার সুবাদে ব্র্যাক এখন বৈশ্বিক অঙ্গণে আরো বড় আকারে অংশীদারত্ব গড়ে তুলতে এবং সরকারি, বেসরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন সহযোগীদের সঙ্গে অর্জিত অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য প্রস্তুত।’

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্র্যাকের বৈশ্বিক কর্মকৌশলের তিনটি মূল লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে: বিশ্বব্যাপী অন্তত ২৫ কোটি মানুষ যাতে নিজেদের জীবিকার সংস্থান করতে পারে সেজন্য তাদেরকে সক্ষম করে তোলা, এর মধ্যে অন্তত ৩০ শতাংশ মানুষকে একের অধিক উদ্যোগের সঙ্গে অন্তর্ভূক্ত করা এবং বৈশ্বিক উন্নয়ন পরিমণ্ডলে উদ্ভাবন ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ে নেতৃত্ব প্রদান।

ব্র্যাক গ্লোবাল বোর্ডের চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের সুপারভাইজরি বোর্ডের বর্তমান চেয়ার আমিরা হক। মিসেস হক ইতিপূর্বে জাতিসংঘের ডিপার্টমেন্ট অফ ফিল্ড সাপোর্টের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল (২০১২-২০১৪) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সাল থেকে অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত তিনি জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময়ে তিনি ছিলেন জাতিসংঘে জ্যেষ্ঠতম পদে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিক।

ব্র্যাকের বর্তমান চেয়ারপারসন ড. হোসেন জিল্লুর রহমান গ্লোবাল বোর্ডের সিনিয়র ট্রাস্টি হিসেবে মনোনীত হয়েছেন। ২০০৮ সালে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শিক্ষা ও বাণিজ্যবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘পাওয়ার অ্যান্ড পারটিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)-র তিনি প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক।

বোর্ডের তৃতীয় সদস্য হলেন লর্ড মার্ক ম্যালক ব্রাউন কেসিএমজি। কফি আনান জাতিসংঘের মহাসচিব থাকাকালে তিনি ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল এবং চিফ অফ স্টাফ হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। এর আগে তিনি ইউএনডিপি-র প্রশাসক হিসেবে বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘ পরিচালিত উন্নয়ন উদ্যোগে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন। পরে তিনি যুক্তরাজ্যে গর্ডন ব্রাউন সরকারের আফ্রিকা ও এশিয়াবিষয়ক পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিযুক্ত হন।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ডা. মুহাম্মাদ মুসা গ্লোবাল বোর্ড গঠনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। ব্র্যাক এর কার্যক্রমের প্রভাবকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে তাঁরা উল্লেখ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন