মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে সংকুচিত হয়ে এসেছে ইরানের বাণিজ্য। এ পরিস্থিতিতেও দেশটি ভারতীয় চা আমদানিকারকের তালিকায় রাশিয়াকে টপকে শীর্ষে উঠে এসেছে। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
খাতসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ডলারে লেনদেন করতে পারছে না ইরান। ফলে শ্রীলংকাসহ অন্যান্য শীর্ষ রফতানিকারক দেশের পক্ষে ইরানে চায়ের চালান পাঠানো দুরূহ হয়ে উঠেছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার পর দেশটির হাতে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা না থাকায় অর্থ লেনদেন নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা এড়াতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ভারতের সঙ্গে রুপিতে লেনদেন করছে ইরান। ভারত দেশটি থেকে জ্বালানি তেল কিনছে রুপিতে, সে রুপির বিনিময়ে ইরান ভারত থেকে চা ও অন্যান্য পণ্য আমদানি করছে।
ভারতীয় টি বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইরানের বাজারে ভারত সব মিলিয়ে ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৬০ হাজার কেজি চা রফতানি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি। এদিকে পানীয় পণ্যটির রফতানিবাবদ ইরান থেকে এ সময়ে দেশটির আয় হয়েছে ১৭ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি।
উল্লিখিত সময়ে রাশিয়া ও সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় (সিআইএস) ভারত মোট ৪ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার কেজি চা রফতানি করেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ দশমিক ৪৬ শতাংশ কম। ফলে এ অঞ্চলে রফতানি থেকে ভারতের আয় ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে ৯ কোটি ৭৮ লাখ ১০ হাজার ডলারে নেমেছে।
ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়া ভারতীয় চায়ের শীর্ষ ক্রেতা। দেশটি থেকে মোট রফতানীকৃত চায়ের ২৫-৩৯ শতাংশই যায় রাশিয়া ও সিআইএসভুক্ত দেশগুলোয়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত মোট ১৮ কোটি ২৫ লাখ ২০ হাজার কেজি চা রফতানি করেছে। এর মধ্যে ২২ দশমিক ৮৫ শতাংশের গন্তব্য ছিল রাশিয়া ও সিআইএস আর ২৩ দশমিক ৯৭ শতাংশের গন্তব্য ছিল ইরান।
এদিকে ইরানে চা রফতানিবাবদ ভারতের আয় রাশিয়ার চেয়ে দেড় গুণেরও বেশি বেড়েছে। এ খাতে দেশটির মোট আয়ের ২৯ দশমিক ১৯ শতাংশ এসেছে ইরান থেকে আর ১৮ দশমিক ৫২ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। এর প্রধান কারণ ইরানের বাজারে রাশিয়ার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে চা বিক্রি করেছে ভারত।