ক্লাসে ফিরছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা

বণিক বার্তা অনলাইন

আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিতে দুই মাসের বেশি একাডেমিক কার্যক্রম বর্জনের পর ক্লাসে ফিরে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

আজ বুধবার (০৪ নভেম্বর) বিকেলে বুয়েটের শহীদ মিনারের পাদদেশে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এমনকি আগামী ২৮ ডিসেম্বর ক্লাসে ফিরবেন বলেও জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট কর্তৃপক্ষ তিন দফা দাবি পূরণ করায় আন্দোলন থেকে সরে এসেছে তারা।

গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। এঘটনার পর থেকে বুয়েটে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন শিক্ষার্থীরা। আবরার হত্যার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের একপর্যায়ে ১৪ নভেম্বর ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে প্রশাসনকে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি পূরণের শর্ত দেন।

এসব দাবি মানতে ১৮ নভেম্বর শিক্ষার্থীদের কাছে সর্বোচ্চ তিন সপ্তাহ সময় চান বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম। শিক্ষার্থীদের ওই তিন দফা দাবি ছিল, মামলার অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, বুয়েটের আহসানউল্লাহ, তিতুমীর ও সোহরাওয়ার্দী হলে আগে ঘটে যাওয়া র‌্যাগিংয়ে ঘটনাগুলোয় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি এবং সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি ও র‌্যাগিংয়ের জন্য সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন ক্যাটাগরি ভাগ করে শাস্তির নীতিমালা প্রণয়নের পর একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটে অনুমোদন করে বুয়েটের অধ্যাদেশে সংযোজন

শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবি অনুযায়ী ২১ নভেম্বর শেরে বাংলা হলের ২৬ ছাত্রকে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। দ্বিতীয় দাবি অনুযায়ী ২৮ নভেম্বর র‍্যাগিংয়ে অভিযুক্ত আহসানউল্লাহ ও সোহরাওয়ার্দী হলের ২৬ ছাত্রকে হল থেকে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে দুই হলের ৯ ছাত্রকে হল থেকে আজীবন বহিষ্কারের পাশাপাশি একাডেমিক কার্যক্রম থেকে ৪ থেকে ৭ টার্ম বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া আহসানউল্লাহ হলের চার ছাত্রকে সতর্ক করা হয় আর সোহরাওয়ার্দী হলের ১৭ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার ও ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়। সর্বশেষ গত সোমবার সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি ও র‌্যাগিংয়ের শাস্তিবিষয়ক নীতিমালা প্রকাশ করেছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ

শিক্ষার্থীদের তিন দাবির মধ্যে কেবল তিতুমীর হলে আগের র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি বাকি রয়েছে। এটি হলেই শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হবে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তিতুমীর হলে র‍্যাগিংয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে  জানিয়েছেন বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান। ২৮ ডিসেম্বর থেকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় বসতে শিক্ষার্থীরা সম্মত হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

বুয়েট কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আজ বিকালে নিজেদের অবস্থান জানাতে বুয়েটের শহীদ মিনারের পাদদেশে সংবাদ সম্মেলন করেন আয়োজন করেন শিক্ষার্থীরা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন