ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও যশোরে ভারী ও মাঝারি ধরনের যানবাহন চালাচ্ছেন চার হাজারেরও বেশি চালক। একই সঙ্গে জেলায় অবৈধভাবে চলছে ফিটনেসবিহীন প্রায় পাঁচ হাজার বাস ও ট্রাক। ফলে যশোরে সড়ক দুর্ঘটনা পরিণত হয়েছে প্রায় নিত্যদিনের ঘটনায়। গত প্রায় চার বছরে যশোরের চারটি জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে অন্তত ৫৪টি দুর্ঘটনায় ৫৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। আর এতে গুরুতর আহতের সংখ্যা অগণিত।
বাংলাদেশ সড়ক ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) যশোর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় বিভিন্ন সড়কে নিবন্ধিত ভারী ও মাঝারি (বাস-মিনিবাস, ট্রাক-ট্রাক্টর-ট্যাংকলরি) ধরনের যানবাহন চলাচল করে ১৩ হাজার ১৩১টি। এর মধ্যে রুট পারমিট বা চলাচলের বৈধতা রয়েছে ৮ হাজার ৩০৭টির। অন্যদিকে রুট পারমিট নেই ৪ হাজার ৮২৪টি গাড়ির। রুট পারমিটবিহীন এসব গাড়ি সড়ক-মহাসড়কে নামানো হয়েছে জোড়াতালি দিয়ে। এদিকে জেলায় ১৩ হাজার ১৩১ জন পেশাদার চালকের মধ্যে ৮ হাজার ৮২৩ জনের ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালাচ্ছেন ৪ হাজার ৩০৮ জন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালকের কারণে জেলায় লাগামহীনভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। যশোর হাইওয়ে পুলিশের চারটি থানা ও ফাঁড়ি সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছরে যশোর-খুলনা, যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ ও যশোর-নড়াইল আঞ্চলিক ও জাতীয় মহাসড়কে ৫৪টি দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়কে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৬টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন মারা যায়। যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কে ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ১৮ জন। যশোর-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়কের পালবাড়ী মোড় থেকে সাতমাইল হৈবতপুর পর্যন্ত ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনটি দুর্ঘটনায় তিনজন মারা গেছেন। এছাড়া যশোর-নড়াইল আঞ্চলিক মহাসড়কে একটি দুর্ঘটনায় একজন মারা যায়।
বারোবাজার হাইওয়ে থানার পুলিশ পরিদর্শক শেখ মাহফুজার রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য গাড়িচালকের দায় রয়েছে। বেপরোয়া গতি ও দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানোর কারণে তাদের মনোযোগ নষ্ট হয়। এতে দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। তাছাড়া ত্রুটিপূর্ণ যানবহনও দুর্ঘটনার প্রধান একটি কারণ।
সম্প্রতি যশোর ও নড়াইল বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, যশোর-নড়াইল ও যশোর-কেশবপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল করা বেশির ভাগ বাসের ফিটনেস নেই