কিং অব বন্ড : উইলিয়াম এইচ গ্রস

বিনিয়োগ জগতেকিং অব বন্ডহিসেবে খ্যাত উইলিয়াম এইচ গ্রস ১৯৭১ সালে দুই বন্ধু জিম মাজি বিল পডলিককে সঙ্গে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (পিমকো) নামে একটি বন্ড ফান্ড। মাত্র কোটি ২০ লাখ ডলারের অ্যাসেট নিয়ে যাত্রা করেছিলেন তারা। ২০১৪ সালের প্রথমার্ধের হিসাব অনুযায়ী, পিমকোর নিয়ন্ত্রণে থাকা অ্যাসেটের মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ট্রিলিয়ন ডলার। সে বছর বিশ্বের শীর্ষ বন্ড ফান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পায় প্রতিষ্ঠানটি।

উইলিয়াম এইচ গ্রস বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিল গ্রস হিসেবেই বেশি পরিচিত। ১৯৪৩ সালে ওহাইওর মিডলটাউনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর ২৪ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন গ্রস। সেনাবাহিনীতে তার কর্মস্থল ছিল ভিয়েতনাম। দুয়েক বছরের মধ্যেই সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। এরপর বিনিয়োগ বিষয়ে শিক্ষালাভ করার জন্য তিনি ভর্তি হন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস স্কুলে।        

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষাগ্রহণ শেষে চাকরির সন্ধানে লাস ভেগাসে পাড়ি জমান গ্রস। প্রথমে ক্যাসিনোতে চাকরি নেন তিনি। প্রতিদিন তাকে প্রায় ১৬ ঘণ্টা কাজ করতে হতো। সারাক্ষণ তাকে এখানে কার্ড গণনা করতে হতো। কার্ড গুনতে গুনতে কয়েক মাসের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল শিখে ফেলেন তিনি। আর কৌশলটিই তিনি বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেন। কৌশলটি ছিল: খুব বেশি লিভারেজ ঋণ গ্রহণ করলে পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। বিল গ্রস মাত্র হাজার ডলার পকেটে নিয়ে লাস ভেগাসে আসেন এবং মাসে ১০ হাজার ডলার উপার্জন করে লাস ভেগাস ত্যাগ করেন।

পিমকো শুরু করার পর পরই বিল গ্রস সবার কাছে একজন দক্ষ বন্ড ট্রেডার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। দ্রুত মুনাফা বৃদ্ধির জন্য সে সময় তিনি কিছু গাণিতিক মডেল অনুসরণ করতেন। মূলত কারণেই তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবণতার একজন বিশ্লেষক হিসেবেও খ্যাতিমান হন তিনি।

১৯৯৭ সালে লেখাএভরিথিং ইউ হ্যাভ হিয়ারড অ্যাবাউট ইনভেস্টমেন্ট ইজ রং!: হাউ টু প্রফিট ইন দ্য কামিং পোস্ট-বুল মার্কেটসশীর্ষক বইয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘বন্ড থেকে আসা রিটার্নই স্টক মার্কেটের ব্যর্থতার গ্লানি থেকে একজন বিনিয়োগকারীকে রক্ষা করতে পারে।

পিমকোতে গ্রসের নিয়ন্ত্রণে যে পরিমাণ বন্ড ছিল, তা ছিল বিশ্বের অন্য যেকোনো বিনিয়োগকারীর নিয়ন্ত্রণে থাকা বন্ডের তুলনায় বেশি। আর্থিক সংকটের অন্ধকার দিনগুলোতে সাবপ্রাইম মর্টগেজ বন্ডের ভূমিকা সম্পর্কে মার্কিন ট্রেজারিকে পরামর্শ দিতেন তিনি। ফিক্সড-ইনকাম ইনভেস্টিং সম্পর্কে অনেক সময় হতাশামূলক কথাও শোনাতেন গ্রস। ২০১১ সালে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা হলো আত্মতুষ্ট সেই ব্যাঙের মতো যে কিনা গরম পানির পাত্রে বসে থাকতে আরাম বোধ করে এবং শেষ পর্যন্ত গরমের তীব্রতায় প্রাণ হারায়। বন্ডে বিনিয়োগকারীরা মূলত তাদের বিনিয়োগ থেকে কিছুই পান না এবং পরিস্থিতি দিন দিন আরো খারাপ হচ্ছে। কিন্তু এতে তারা অভ্যস্ত হয়ে গেছে।

পিমকোর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হয়েও শেষ পর্যন্ত এখানে টিকতে পারেননি গ্রস। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে এক নোংরা বিতর্কের জের ধরে পিমকো থেকে জোরপূর্বক সরিয়ে দেয়া হয় তাকে। তার বিরুদ্ধে ফান্ড অব্যবস্থাপনার অভিযোগ আনা হয়। সে সময় তিনি প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। ২০১৭ সালে পিমকো বিল গ্রস মামলাটি নিষ্পত্তি করে।

পিমকো থেকে সরে আসার পর পরই জানুস ক্যাপিটাল গ্রুপ নামে ছোট একটি ফান্ডের দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। জনপ্রিয় বিনিয়োগ

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন