বগুড়ার ধুনটে রাঙ্গামাটি গ্রামে বাঙ্গালী নদীর পাড়ে ভূমিহীনদের জন্য গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ শেষ হয় গত বছর। এখনো উদ্বোধন না হলেও নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে গুচ্ছগ্রামটি। স্থানীয়দের অভিযোগ, শুধু গুচ্ছগ্রাম নয়, বালি উত্তোলনের কারণে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি নদীতে বিলীনের ঝুঁকিতে আছে। বালি উত্তোলনের কারণে ফসল উৎপাদনেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঙ্গালী নদী বগুড়ার সারিয়াকান্দি হয়ে ধুনট দিয়ে সিরাজগঞ্জে প্রবেশ করেছে। এ নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার ধুনট উপজেলায় প্রবাহিত হয়েছে। এর একটি অংশ পড়েছে উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামে। এ গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় নদীর পাড়ে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ইউনিয়নের ১০১টি ভূমিহীন পরিবারের জন্য গুচ্ছগ্রাম তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়। গত বছর গুচ্ছগ্রামে ১০১টি টিনের ঘরসহ অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হয়। এর নাম দেয়া হয় আদর্শ গুচ্ছগ্রাম। তবে এখনো ঘর হস্তান্তর না করায় গুচ্ছগ্রামটি উদ্বোধন করা হয়নি। এরই মধ্যে গুচ্ছগ্রামের পাশে বাঙ্গালী নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালি উত্তোলন শুরু করেছে স্থানীয় একটি চক্র। উত্তোলিত প্রতি ট্রাক বালি বিক্রি হয় ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
স্থানীয়রা জানায়, নদীর তলদেশে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি তুলে পাইপের সাহায্যে পাড়ে ফেলা হচ্ছে। পরে সেই বালি ট্রাকে করে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। এখান থেকে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ ট্রাক বালি বিক্রি হচ্ছে। বালি তোলার কারণে গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় নদীর পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও আবাদি জমি দেবে গেছে। বালির কারণে জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ট্রাক ও ট্রলি চলাচলের কারণে আশেপাশের সড়কগুলোও দ্রুত নষ্ট হয়ে পড়ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, বালি উত্তোলনের কারণে গুচ্ছগ্রামটিই ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। এতে যারা ঘর বরাদ্দ পাওয়ায় আশা আছেন, তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
সূত্র জানায়, এর আগে ধুনট উপজেলার সীমান্তে দেউড়িয়া ও কাজিপুর উপজেলার সীমান্তের গ্রাম চকদানপুরে বাঙ্গালী নদী থেকে বালি তোলা হতো। তবে পুলিশি অভিযানের কারণে সেখানে বালি উত্তোলন কিছুটা কমেছে।
রাঙ্গামাটি গ্রামের কৃষক আবু সাইদ, আফসার আলী ও মন্টু মিয়া জানান, বাঙ্গালী নদী থেকে বালি উত্তোলন করায় পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এভাবে বালি উত্তোলন অব্যাহত থাকলে শতাধিক বিঘা ফসলি জমি ও সরকারি গুচ্ছগ্রামটিও নদীতে বিলীন