বড় ইলিশ পণপ্রতি ২০ হাজার টাকা, ছোট ইলিশ ১০ হাজার। এমনই হাঁকডাকে গতকাল মুখরিত ছিল বাগেরহাটের ইলিশের অবতরণ কেন্দ্র কেবি বাজার। ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় এদিন বাজারে উপচে পড়া ভিড় ছিল ক্রেতাদের। দাম নিয়ে নানা অভিযোগের মধ্যেও হাসিমুখে ইলিশ কিনে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে তাদের অনেককে।
জানা গেছে, ইলিশ উৎপাদন বাড়াতে প্রজনন মৌসুম বিবেচনা করে চলতি বছর ৯ (আজ) থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। মন্ত্রণালয় থেকে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এ সময়ে ইলিশের আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাত, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ। এ কারণে গতকাল কেবি বাজারে অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় ক্রেতাদের ভিড় বেশি ছিল। শেষ মুহূর্তে ইলিশ বিক্রি নিয়ে তাড়া ছিল বিক্রেতাদেরও। তাই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইলিশ বিক্রিতে সরগরম ছিল এ বাজার।
ইলিশ বিক্রি করতে আসা জেলে মনিরুল হক, মুন্সি আমিনুর, নুরুল হাওলাদারসহ কয়েকজন বলেন, ২২ দিন ইলিশ আহরণ ও বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে। তাই গত রাতে যা পেয়েছি, তা নিয়ে বাজারে এসেছি। ট্রলারে অনেক মাছ রয়েছে। সব মাছ বিক্রি করে মালিককে ট্রলার বুঝিয়ে দিয়ে বাড়িতে চলে যাব। কম-বেশি যা হয়, এখনই বিক্রি করতে হবে। তা না হলে নদীতে ঢেলে দেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
ট্রলার মালিক মানিক হোসেন বলেন, সকাল থেকে ক্রেতাদের প্রচুর ভিড় থাকলেও মাছের কাঙ্ক্ষিত দাম পাচ্ছি না। থেকে গেলে বিক্রি করতে পারব না জেনে ক্রেতারা কম দাম বলছে। আমাদেরও বাধ্য হয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
ফয়সাল হক নামের আরেক ক্রেতা বলেন, অন্যান্য বাজারের থেকে এখানে মাছের দাম কিছুটা কম। তবে বাজারে দেখে-শুনে দরদাম করে ইলিশ কেনা যায়। এখানে হাতের কাছে যা পাচ্ছি, তাই নিতে হচ্ছে। বাগেরহাট উপকূলীয় মত্স্যজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী বলেন, সাধারণত শেষ মুহূর্তে বাজারে ইলিশের দাম বেশি থাকে। তার পরও ক্রেতারা কেবি বাজার থেকে ইলিশ ক্রয় করতে আগ্রহী। আমরাও মাছ বিক্রি শেষ করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে চাই।
বাগেরহাট মত্স্য অবতরণ কেন্দ্র কেবি বাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বলেন, শেষ দিনে জেলেরা যেমন চাচ্ছেন মাছ বিক্রি করতে, তেমনি ক্রেতারাও চাইছেন একটু বেশি পরিমাণ কিনতে। তাই বাজারে এত বেশি ভিড়। এতে আমাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ক্রেতা-বিক্রেতারা সন্তুষ্ট থাকলেই আমরা খুশি।