একজন সুফিয়া ‘ফ্রম বাংলাদেশ’...

ফিচার প্রতিবেদক

এখন একটু বিরতি, আবার লাইট-ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে হবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে। এমনটাই জানান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী তমা মির্জা। তবে এটুকু বিরতিতে থেমে নেই উপস্থাপনা বা অন্যান্য কাজ। আজকের আয়োজনে এ অভিনেত্রী কথা বলেছেন শাহনেওয়াজ কাকলী পরিচালিত আসন্ন চলচ্চিত্র ফ্রম বাংলাদেশ নিয়ে

ফ্র ম বাংলাদেশের শুটিং কতটুকু হয়েছে?

আমার অংশের শুটিং শেষ হয়েছে খুব অল্প। ৩০ ভাগের মতো হবে। বাকি অংশের শুটিং হবে পুবাইলে। মূলত আমার অংশের শুটিং শেষ হলেই প্যাকআপ হয়ে যাবে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের পরই শুরু হবে বাকি অংশের শুটিং।

সুফিয়া চরিত্রটি নিয়ে বলুন।

খুব পরহেজগার একজন নারী সুফিয়া। যুদ্ধ চলাকালীন একটা হিন্দু পরিবারের গল্প দেখানো হবে এখানে। যে পরিবারের কাজের লোক হিসেবে কাজ করেন সুফিয়ার স্বামী। এ চলচ্চিত্রে সুফিয়া এমন একটা চরিত্র, যাকে দর্শক খুব বেশি সময় দেখবেন না। কিন্তু পুরো চলচ্চিত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র এটি। আমি যখন ফ্রম বাংলাদেশের গল্পটা জেনেছি, তখন আমার কাছে সুযোগ ছিল পছন্দসই একটি চরিত্রে কাজ করার। স্ক্রিপ্ট পড়ে আরো কয়েকটি চরিত্র সম্পর্কে জানতে পেরেছিলাম। যে চরিত্রগুলোর একটি বেছে নিলে হয়তো আমাকে সারাক্ষণই পর্দায় দেখা যেত। কিন্তু সত্যি কথা হচ্ছে, স্ক্রিপ্ট পড়ে প্রথমেই যে চরিত্রটিতে নিজেকে বসাতে পেরেছি সেটি হচ্ছে সুফিয়া। মজার বিষয় হচ্ছে, নির্মাতা শাহনেওয়াজ কাকলী আপুও কিন্তু মনে মনে চাচ্ছিলেন আমিই যাতে চরিত্রটি করি। কেননা যখন আমি তাকে বললাম যে আপু আমি সুফিয়া করতে চাই, তখন তিনি বললেন যে তিনি নাকি চাচ্ছিলেন আমি যাতে এটিই বেছে নিই।

এ চরিত্রই বেছে নেয়ার কারণ কী ছিল?

আমি যেহেতু কাকলী আপুর আরেকটি চলচ্চিত্র নদীজনে কাজ করেছিলাম, সেখানে আমার চরিত্রটি খানিকটা এমনই ছিল। সে চলচ্চিত্রের জন্য কিন্তু আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছি। ফলে আমার সে বিশ্বাস ছিল যে কাকলী আপু আমাকে দিয়ে আমার সর্বোচ্চ ভালো অভিনয়টুকুই বের করে আনবেন। আমি যদি এমন একটা চরিত্র দিয়ে মাত্র একটা দৃশ্যেও পর্দায় উপস্থিত হই, তাহলেও দর্শকের ভালোবাসা জয় করতে পারব। যা-ই হোক, আমি যখন চরিত্রগুলোর কথা শুনলাম, তখন আমি কাকলী আপুকে বললাম যে আমি নিজেকে সুফিয়া চরিত্রের জন্যই প্রস্তুত করতে চাই।

এ চরিত্র আয়ত্ত করতে কী করতে হয়েছে?

ফ্রম বাংলাদেশে সুফিয়া চরিত্রটি যেহেতু খুবই সাধারণ একটি চরিত্র। এজন্য খুব বেশি কসরত করতে হয়নি আমার। মনে আছে একদিন কাকলী আপু আর আমি বসি ডায়ালগ নিয়ে। কীভাবে ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলা যাবে চরিত্রটি, সেসব নিয়ে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েছি। চরিত্রটি যেহেতু একজন ধর্মপ্রাণ মুসলিম নারীর, সেহেতু আমাকে কিছু বিষয় শিখতে হয়েছে আলাদাভাবে। যেমনটা বলা যায়এ চলচ্চিত্রের জন্যই আমি আয়াতুল কুরসি পুরোটা শিখেছি। আগে অল্প মুখস্থ পারলেও এ চলচ্চিত্রের জন্য পুরোটাই মুখস্থ করতে হয়েছে।

ফ্রম বাংলাদেশের শুটিং শুরুর দিকে গোপন রাখা হয়েছিল পুরো বিষয়টি, প্রকাশ পেল কীভাবে?

আমাদের এমন নিষেধ করা হয়েছিল যে এ ছবির শুটিং চলাকালে আমরা কেউ কোনো ছবি ফেসবুকে পোস্ট করব না কিংবা কোনো সংবাদমাধ্যমে কথা বলব না। তার পরও কিছু সংবাদ তৈরি হয়েছে। আমরা নিজেরা কিছু না বললেও যেহেতু এত বড় একটা শুটিং ইউনিট, এখান থেকে সেখানে ছুটছি, তাই কেউ না কেউ তো খবর রাখেই। এভাবেই কিছু সংবাদ হয়েছে।

একই নির্মাতার সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন। এবারের অভিজ্ঞতা কেমন?

একদিন সকালে একটা জাতীয় পত্রিকায় ফ্রম বাংলাদেশ নিয়ে একটা সংবাদ করা হয়েছে দেখে কাকলী আপুকে আমি অভিমান করে বলেছিলাম, তুমি বলেছিলে আগে কোনো সংবাদ যাতে না হয়, এজন্য কোনো ছবিও পোস্ট করিনি ফেসবুকে অথচ এখন সংবাদই হয়ে গেছে। সে সময় আমার কথোপকথন এমন ছিল, যা কিনা যে কেউ দেখেই মনে করবে মা-মেয়ের রাগ অভিমান চলছে। যার ওপর আমি একদমই রাগ করে থাকতে পারি না। এ ঘটনা বলেছি কারণ কাকলী আপুর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা কেমন সেটা বোঝানোর জন্য। যার সঙ্গে আমার সম্পর্কটাই এমন, তার সঙ্গে যে কাজের অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সত্যি কথা হচ্ছে, তার সঙ্গে কাজের ক্ষেত্রে আমার কখনো মনেই হয় না যে কাজ করছি।

গহিনে গান নিয়ে বলুন।

বাংলাদেশের প্রথম মিউজিক্যাল ফিল্ম হবে এটি। আগামী মাসের শেষ দিকে বা তার পরের মাসে মুক্তি দেয়ার কথা রয়েছে এ চলচ্চিত্র। দেশ ও দেশের বাইরে মুক্তি দেয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশে আমরা মূলত চলচ্চিত্র প্রচারণার দিকে সময় খুব কম দিই। তবে আমরা এ চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে ভেবেছি ভিন্নভাবে। আমরা নিজেদের মতো করে প্রচারণার কাজ করব। আমি আগে ফ্রম বাংলাদেশের কাজ শেষ করতে চাই ভালোভাবে। এরপর গহীনে গান চলচ্চিত্রের প্রচারণায় নামব।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন