বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) সেন্টারের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক অনুষ্ঠানে ওএসএস সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ ও শিল্পবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ছিলেন
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.
নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য
সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ,
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, বাংলাদেশে
জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো,
বাংলাদেশে জাইকার চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ হিতোশি
হিরাতা এবং এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম।
বেজা জানিয়েছে, দেশী
ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের শিল্প স্থাপন করার ক্ষেত্রে এ-সংশ্লিষ্ট
বিভিন্ন দপ্তর থেকে বিভিন্ন বিষয়ে অনুমোদন নেয়ার প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ ও জটিল।
বিনিয়োগকারীদের এ অসুবিধা দূর করতেই
‘ওয়ান স্টপ সার্ভিসের’ উদ্যোগ। এর
মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে বিনিয়োগসংক্রান্ত সব ধরনের সেবা দেয়া যাবে।
ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন, ২০১৮
পাস করা হয়। এ আইনের আওতায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ) বিধিমালা, ২০১৮
জারি করা হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাসময়ে
সেবা দেয়ার বাধ্যবাধকতার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
এ আইনের ফলে ট্রেড লাইসেন্স, জমি
নিবন্ধন, নামজারি, পরিবেশ ছাড়পত্র,
নির্মাণ অনুমোদন, বিদ্যুৎ, গ্যাস
ও পানি সংযোগ, টেলিফোন-ইন্টারনেট সংযোগ,
বিস্ফোরক লাইসেন্স, বয়লার
সার্টিফিকেটসহ ২৭টি ক্যাটাগরির ১২৫টি সেবা এক জায়গায় পাওয়া যাবে। ফলে কোনো
বিনিয়োগকারীকে প্রাথমিক অনুমোদন ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার জন্য আর বিভিন্ন
কার্যালয়ে যেতে হবে না। অনলাইনেই সব সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে।
বিনিয়োগকারীদের কোন সেবা কত দিনের মধ্যে দিতে হবে, তা বিধি দিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে।
বেজার ওএসএসের কার্যক্রমগুলোর মধ্যে
আছে ইকোনমিক জোনে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রজেক্ট ক্লিয়ারেন্স, বিনিয়োগকারী/ডেভেলপারদের
ওয়ান স্টপ সার্ভিসের আওতায় সব ধরনের সেবা/লাইসেন্স/ছাড়পত্র, ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের সেবা প্রদানে অন্য সরকারি দপ্তরের সঙ্গে তাদের
সমন্বয়, ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগের লক্ষ্যে বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নের জবাব, আইন/বিধি/প্রজ্ঞাপনের
বিষয়ে অবগত করা, বেসরকারি ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাক-যোগ্যতাপত্র
প্রদান এবং বেসরকারি ইকোনমিক জোনকে লাইসেন্স প্রদান।
বর্তমানে ওএসএস থেকে বেজা ১১টি সেবা
অনলাইনে দিচ্ছে। সেগুলো হলো ভিসা সুপারিশপত্র, বিনিয়োগ ছাড়পত্র, ওয়ার্ক
পারমিট ইস্যুকরণ, আমদানি অনুমোদন,
রফতানি অনুমোদন, প্রকল্প অনুমোদন,
প্রকল্প রেজিস্ট্রেশন, লোকাল
বিক্রয় পারমিট, লেকাল ক্রয় পারমিট ও নমুনা আমদানি পারমিট।
ওএসএস সেবা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে সালমান এফ রহমান বলেন,
২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও
সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। এ কারণে মাথাপিছু আয় ১২
হাজার ডলার উন্নয়নে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে আমরা
অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রয়েছি। শুধু সেবার মান বাড়িয়ে ইজ অব ডুয়িং
বিজনেসের সূচকের অবস্থানে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারব এবং বিনিয়োগ আকর্ষণে
লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব।