১৯৭১
সালে দীর্ঘ
নয় মাসজুড়ে
চলা সশস্ত্র
মহান মুক্তিযুদ্ধে
কিশোর, শ্রমিক,
মজুর, চিকিৎসক,
সাংবাদিক, সাহিত্যিক,
সরকারি-বেসরকারি
আমলা, ব্যবসায়ী,
ছাত্র, শিক্ষক,
নারী সবার
সম্মিলিত অংশগ্রহণ
ও ত্যাগ
দিয়েই রচিত
হয়েছিল একটি
মহান ইতিহাস,
বিজয়ের ইতিহাস,
গৌরবের ইতিহাস।
স্বাধীন, সার্বভৌম
বাংলাদেশ গড়ার
নেপথ্যে ছিলেন
জাতির যেসব
সূর্যসন্তান, তাদের
মধ্যে চিকিৎসকেরা
অন্যতম। বাংলাদেশের
স্বাধীনতা অর্জনের
লড়াইয়ে যেখানে
পাক বাহিনীর
হাতে ভূলুণ্ঠিত
হয়েছিল মানবতা,
সেখানে চিকিৎসকরা
সেই বিপন্ন
মানবতার পাশে
দাঁড়িয়েছিলেন তাদের
সব মেধা
ও স্বাস্থ্যসেবা
ব্যবস্থাপনা শক্তি
দিয়ে। তারা
যেমন রণাঙ্গনে
যুদ্ধ করেছেন,
তেমনি রণাঙ্গনের
বাইরে আহত
মুক্তিযোদ্ধা ও
সাধারণ মানুষকে
অবিরত চিকিৎসাসেবা
দান করেছিলেন।
যুদ্ধ মানেই
রক্তপাত আর
মৃত্যু। মৃত্যুর
দুয়ার থেকে
আহত সেনাদের
ফিরিয়ে এনে
আবারো রণক্ষেত্রে
দাঁপিয়ে বেড়ানোর
সুযোগ করে
দিয়ে শত্রুর
বুকে কাঁপন
ধরিয়ে দেয়া
বা নিরীহ
কোনো মানুষের
দুঃসহ ক্ষত
সারিয়ে তাকে
আবারো হাস্যোজ্জ্বল
জীবন দান
করতে পারেন
চিকিৎসকেরাই। পৃথিবীর
সব যুদ্ধেই
চিকিৎসকেরা বৈরী
পরিবেশে জীবনের
ঝুঁকি নিয়ে
আহত মানুষকে
সুস্থ করার
মহান দায়িত্ব
পালন করেছেন।
বাংলাদেশের মহান
মুক্তিযুদ্ধেও এর
ব্যতিক্রম কিছু
হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের
সেই ভীষণ
সংকটকালে সাহসী
কিছু বাঙালি
চিকিৎসক গণমানুষের
সেবায় মহৎ
উদ্যোগ নিয়ে
এগিয়ে এসেছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধ
চলাকালে স্বাস্থ্যসেবা
মূলত চার
পর্যায়ে পরিচালিত
হয়েছিল। এক.
মুক্তিযোদ্ধা চিকিৎসকদের
পরিচালনায় বাংলাদেশের
সীমান্তবর্তী ভারতীয়
রাজ্য রাজধানী
ও সীমান্তের
সন্নিকটে স্থাপিত
অস্থায়ী (ক্ষেত্রবিশেষে
ভ্রাম্যমাণ) ক্যাম্প,
ক্লিনিক কিংবা
হাসপাতালে। দুই.
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে
সরকারি-বেসরকারি
হাসপাতালে সঙ্গোপনে
এবং চিকিৎসকদের
ব্যক্তিগত উদ্যোগে
প্রদত্ত ও
পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা।
তিন. বাংলাদেশের
মুক্তাঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধা
ডাক্তারদের পরিচালনায়
ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল
বা ক্লিনিক।
চার. ভারতের
সরকারি-বেসরকারি
হাসপাতাল স্বাস্থ্য
সেবাকেন্দ্রে (অধিকাংশই
সীমান্তবর্তী এলাকায়)।
মারাত্মকভাবে আহত
মুক্তিযোদ্ধাদের ভারতের
অভ্যন্তরে এবং
প্রবাসী বাংলাদেশ
সরকার এবং
বিজয়োত্তর বাংলাদেশ
সরকার বিদেশে
চিকিৎসার ব্যবস্থা
করেছিল।
বাংলাদেশ ফিল্ড
হাসপাতাল
মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছিল। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য কোনো ব্যবস্থা ছিল না। অনেকেই চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সেই ক্রান্তিলগ্নে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত এক হাজারেরও বেশি চিকিৎসক মিলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (BMA-UK) গঠন করেন। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. এএইচ সায়েদুর রহমানকে এর সভাপতি করা হয়, সাধারণ সম্পাদক হন ভাস্কুলার সার্জন ডা. জাফরুল্লাহ্ চৌধুরী। মে মাসের শুরুর দিকে বিএমএ ডা. জাফরুল্লাহ ও আরেকজন তরুণ চিকিৎসক ডা. এমএ