আইসিজেতে গাম্বিয়ার মামলার আইনগত পর্যালোচনা

মো. রিজওয়ানুল ইসলাম

দেশীয় কোনো চাপ না থাকায় এবং অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী কিছু দেশ যেমন চীন, ভারত রাশিয়া, যাদের মিয়ানমারের প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে কিছু পাওয়ার আছে, তাদের মৌন সম্মতিতে সাহসী হয়ে মিয়ানমার সরকার ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অস্বীকৃতি, মিথ্যা প্রচারণা অর্থহীন কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা অনন্ত কাল ধরে চলছিল বলে মনে হচ্ছিল। বাস্তবিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অবস্থার আদৌ কোনো পরিবর্তন হয়নি। যাহোক, গাম্বিয়ানরা ১১ নভেম্বর মিয়ানমারের এই দায়মুক্তি চ্যালেঞ্জ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছে।

যদিও রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নারকীয় কর্মকাণ্ডে গাম্বিয়া সরাসরি কোনো ক্ষতির শিকার হয়নি, তবুও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার এখতিয়ার তাদের আদৌ আছে কিনা, সেটা আইনগত কোনো ইস্যুই নয়। সমসাময়িক আন্তর্জাতিক আইনে জেনোসাইড বা গণহত্যা একটি সর্বজনীন বিচারযোগ্য বিষয়। জেনোসাইডের ওপর সর্বজনীন এখতিয়ার (কোনো ভূখণ্ডগত সম্পর্ক ছাড়াই জেনোসাইডের বিচার করার অধিকার) প্রয়োগের লক্ষ্যে কিছু পশ্চিমা গণতান্ত্রিক দেশ আইনও প্রণয়ন করেছে এবং এসব আইন নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোনো প্রতিবাদ করেনি। তাই ধরে নেয়া যায়, বর্তমানে এটা প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের একটি বিধিতে পরিণত হয়েছে। গাম্বিয়া যেহেতু গণহত্যা প্রতিরোধ প্রতিকার কনভেনশন ১৯৪৮-এর একটি স্বাক্ষরকারী দেশ, সেহেতু মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তাদের মামলা করার অধিকার একটি সোজাসাপ্টা ব্যাপার মাত্র। বিভিন্ন স্বাধীন পর্যবেক্ষক দল, যেমন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের অধীনে প্রতিষ্ঠিত ইনডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং মিশন অন মিয়ানমারের রিপোর্ট অনুযায়ী মিয়ানমার জেনোসাইড দমন, অনুসন্ধান প্রতিরোধের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে গাম্বিয়ার মামলার অভিযোগ প্রমাণ করাটা সহজ হওয়ার কথা।

যদি মিয়ানমার আন্তর্জাতিক আদালতে মামলার বিবাদী হিসেবে হাজির হয়, তাহলে তারা আদালতের এখতিয়ারকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। তবে তাদের চ্যালেঞ্জ ব্যর্থ হওয়ার কথা। জেনোসাইড কনভেনশনের অনুচ্ছেদ, যা আন্তর্জাতিক আদালতকে জেনোসাইড বিচারের এখতিয়ার প্রদান করেছে, সে ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে কিছু রাষ্ট্র ওই কনভেনশনটিতে স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু মিয়ানমার অন??

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন