ওষুধ খাতের কোম্পানি স্কয়ার
ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড চলতি বছরের ১ জানুয়ারি এর সাবসিডিয়ারি কোম্পানি স্কয়ার
ফরমুলেশন্স এবং স্কয়ার হারবাল ও নিউট্রাসিউটিক্যালস লিমিটেডকে একীভূত করে নেয়।
এক্ষেত্রে সাবসিডিয়ারি কোম্পানি দুটির প্রায় শতভাগ (৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ) শেয়ার
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে থাকায় একীভূতকরণের ক্ষেত্রে ফেয়ার ভ্যালুর
পরিবর্তে বুক ভ্যালু পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে। তবে হিসাবমান অনুসারে এ ধরনের
ক্ষেত্রে ফেয়ার ভ্যালু অনুসরণের নিয়ম থাকায় এ বিষয়ে মতামত দিয়েছেন কোম্পানিটির
নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান মাফেল হক অ্যান্ড কোম্পানি চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস।
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ২০১৮-১৯
হিসাব বছরের আর্থিক প্রতিবেদনে নিরীক্ষক এমফেসিস অব ম্যাটারে জানিয়েছেন, কালিয়াকৈরে
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানা প্রাঙ্গণেই স্কয়ার ফরমুলেশন্সের কারখানা
অবস্থিত। ফলে আলাদা করে স্কয়ার ফরমুলেশন্সের কার্যক্রম চিহ্নিত করার বিষয়টি বেশ
দুরূহ। স্কয়ার ফরমুলেশন্সের ৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ারই স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের
কাছে রয়েছে। মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের
কাছে। একইভাবে স্কয়ার হারবাল ও নিউট্রাসিউটিক্যালসের ৯৯ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ারই
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে রয়েছে। মাত্র শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে
সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের কাছে। কোম্পানির পর্ষদের অনুমোদনের পাশাপাশি সংখ্যালঘু
শেয়ারহোল্ডারদের সম্পত্তির পর উচ্চ আদালত স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে স্কয়ার
ফরমুলেশন্স এবং স্কয়ার হারবাল ও নিউট্রাসিউটিক্যালসের একীভূতকরণ স্কিম অনুমোদন
করেছেন। এ বছরের ১ জানুয়ারি একীভূতকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। একীভূতকরণ
প্রক্রিয়ার সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আদালতের অনুমোদনক্রমে
বুক ভ্যালুতে নগদ পরিশোধ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ৩০ জুন ২০১৭ সালের বুক ভ্যালু পার
শেয়ার বিবেচনা করা হয়েছে। নিরীক্ষক বলছেন,
সাধারণত একীভূতকরণের ক্ষেত্রে ফেয়ার ভ্যালুতে
হিসাব করা হয়ে থাকে। ফলে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে বুক ভ্যালুতে স্কয়ার
ফরমুলেশন্স এবং স্কয়ার হারবাল ও নিউট্রাসিউটিক্যালসকে একীভূতকরণের কারণে কোনো
ধরনের মুনাফা অর্জিত হয়নি।
নিরীক্ষকের মতামতের বিষয়ে জানতে চাইলে
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের নির্বাহী পরিচালক ও হেড অব অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড
ফিন্যান্স মো. কবীর রেজা বণিক বার্তাকে বলেন,
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস আর স্কয়ার ফরমুলেশন্স
এবং স্কয়ার হারবাল ও নিউট্রাসিউটিক্যালসের ম্যানেজমেন্ট একই। ফেয়ার ভ্যালুতে
একীভূতকরণ করা হলে তালিকাভুক্ত কোম্পানির বেশি অর্থ ব্যয় হতো। তাই এক্ষেত্রে অর্থ
সাশ্রয়ের জন্য বুক ভ্যালুতে একীভূতকরণ করা হয়েছে। তাছাড়া ভ্যালুয়েশনের বিষয়টি উচ্চ
আদালতের নির্দেশে একজন স্বতন্ত্র নিরীক্ষকের মাধ্যমে যাচাই করা হয়েছে। এক্ষেত্রে
যা হয়েছে সবকিছুই আদালতের নির্দেশে হয়েছে। মূলত হিসাবমান অনুসারে একীভূতকরণের
ক্ষেত্রে ফেয়ার ভ্যালু বিবেচনা করা হয়ে থাকে। এজন্য নিরীক্ষক এ বিষয়ে তার মতামত
দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ
সমাপ্ত ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের মোট বিক্রি হয়েছে ৫ হাজার
৮৬ কোটি টাকা, যা এর আগের হিসাব বছরে ছিল ৪ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে
কোম্পানিটির কর-পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা, যা
এর আগের হিসাব বছরে ছিল ১ হাজার ১৬০ কোটি টাকায়। ৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরে
শেয়ারহোল্ডারদের মোট ৪৯ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।
এর মধ্যে ৪২ শতাংশ নগদ ও বাকি ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ। সমাপ্ত হিসাব বছরে স্কয়ার
ফার্মার সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি আয়
(ইপিএস)
হয়েছে ১৬ টাকা ৩ পয়সা। এককভাবে ইপিএস হয়েছে ১৩
টাকা ৩৯ পয়সা।