ব্রেক্সিট-পরবর্তী
অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কথা
ভাবছে যুক্তরাজ্য। তবে এসব চুক্তি দেশটির ব্রেক্সিটকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক ক্ষতি পূরণ
করতে পারবে না বলে উঠে এসেছে বিবিসি নিউজনাইটের বিশ্লেষণে।
ইউকে ট্রেড পলিসি অবজারভেটরির (ইউকেটিপিও) স্বাধীন
ব্যবসা বিশেষজ্ঞরা যুক্তরাষ্ট্র,
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দেশটির
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিভিন্ন দিকও বিশ্লেষণ করে দেখেছেন।
ব্রেক্সিটের ধাক্কা সামাল দিতে
বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি,
নতুন করে শুল্ক রদের চুক্তিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের
মাধ্যমে দেশটির অর্থনীতি সর্বসাকল্যে দশমিক ৪ শতাংশ বাড়ানো সম্ভব হতে পারে।
অন্যদিকে একটি সাধারণ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি দেশটির অর্থনীতিকে মোটাদাগে মন্থর করবে
বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ইউকেটিপিওর প্রতিবেদনে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে
সদস্যপদ সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ কয়েকটি বাণিজ্য পার্টনারদের সঙ্গে
একটি সাধারণ বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে দেশটির অর্থনীতির আকার অন্তত ১ দশমিক ৮ শতাংশ
সংকুচিত হতে পারে। যদিও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রত্যাহার চুক্তিতে এমনটিই বলা
হয়েছে।
কনজারভেটিভ পার্টির এক মুখপাত্র বলেন, প্রধানমন্ত্রীর
প্রত্যাহার চুক্তি বেশ চমত্কার। আমাদের ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য পার্টনারদের সঙ্গে ভবিষ্যতে
মুক্ত বাণিজ্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার মাধ্যমে সম্পর্ক রক্ষার বিষয়টি উনার
চুক্তিতে স্পষ্ট করা হয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তের দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি
আমাদের ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেবে।
এদিকে প্রায় অনুরূপ ধ্বনি শোনা গেছে
কনজারভেটিভের ইশতেহারে। দেশটির রফতানি বাড়াতে, মূল্য কমাতে ও বিনিয়োগ চাঙ্গা করতে
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ‘উত্কৃষ্টতম পন্থা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে পার্টিটির ইশতেহারে।
ইউকেটিপিওর বিশ্লেষণের সারকথা, বিভিন্ন
দেশের সঙ্গে মন্ত্রীদের উচ্চাভিলাষী চুক্তির প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বহু উচ্চারিত
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক নেই। ব্রেক্সিটের ক্ষতি
কাটানোর কোনো সম্ভাবনা নেই এসব চুক্তির।
ব্রেক্সিটের পর ইইউর সঙ্গে মুক্ত
বাণিজ্য চুক্তি ও যুক্তরাষ্ট্র,
অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে নতুন মুক্ত
বাণিজ্য চুক্তি দেশটির অর্থনীতিকে ১ দশমিক ৪ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে
উল্লেখ করা হয়েছে উল্লিখিত প্রতিবেদনটিতে। যার পরিমাণ দাঁড়াবে ২ হাজার ৮০০ কোটি
পাউন্ড। অর্থাৎ প্রতি পরিবারের ক্ষতি হবে ১ হাজার পাউন্ড।
সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত
ইউকেটিপিওর প্রতিবেদন অনুযায়ী,
ইইউর সঙ্গে পরিকল্পিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ফলে
ব্রিটেনের কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাত লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপমহাদেশটিতে এসব খাতে প্রতিযোগিতা কম হওয়ায় তা সম্ভব হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া
ও নিউজিল্যান্ড আমদানি শুল্ক কমালে ও কোটা আরোপ করলে কৃষি খাতের আমদানিতে অস্থিরতা
দেখা দেবে, যা ব্রিটেনের কাঙ্ক্ষিত সুবিধার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।