১১ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী ১৫ দিনের
জন্য পুঁজিবাজারে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের শেয়ার
লেনদেন বন্ধ থাকবে। এ নিয়ে নবম দফায় কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন স্থগিতাদেশের মেয়াদ
বাড়ানো হলো।
গত ১৪ জুন প্রথম পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার
লেনদেন স্থগিত করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ
(ডিএসই)
ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। লিস্টিং রেগুলেশনের ধারা ৫০(১) অনুসারে
কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে রেগুলেশনের ৫০(৩) ধারা
অনুযায়ী নয় দফায় এ স্থগিতাদেশের মেয়াদ ১৫ দিন করে বাড়ানো হলো।
প্রথম দফায় গত ১৩ আগস্ট থেকে ১৫ দিনের
জন্য স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপর ২৮ আগস্ট থেকে একই সময়ের জন্য মেয়াদ
বাড়ায় স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ। তৃতীয় দফায় ১২ সেপ্টেম্বর থেকে আরো ১৫ দিনের জন্য
মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়। আর চতুর্থ দফায় মেয়াদ বাড়ানোর মাধ্যমে ২৭ সেপ্টেম্বর
থেকে পরবর্তী ১৫ দিনের জন্য পিপলস লিজিংয়ের শেয়ার লেনদেন স্থগিত রাখার ঘোষণা দেয়া
হয়। এছাড়া পঞ্চম দফায় ১৩ অক্টোবর,
ষষ্ঠ দফায় ২৮ অক্টোবর, সপ্তম
দফায় ১১ নভেম্বর, অষ্টম দফায় ২৬ নভেম্বর ও সর্বশেষ নবম দফায় ১১ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী ১৫
দিনের জন্য কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনে স্থগিতাদেশ দেয়া হলো।
৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের
জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করেনি পিপলস লিজিংয়ের
পরিচালনা পর্ষদ। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন
সেন্টারের অ্যাংকর হলে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ও
বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু অনিবার্য কারণ দেখিয়ে তা স্থগিত করা হয়।
প্রসঙ্গত, ক্রমাগত
লোকসানের মুখে থাকা পিপলস লিজিংকে অবসায়নের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব
পাঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক। মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর কোম্পানিটিকে
অবসায়নের জন্য উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। অবসায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য
অস্থায়ী ভিত্তিতে একজন অবসায়কও নিয়োগ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পিপলস লিজিংয়ের পুঞ্জীভূত লোকসান ২
হাজার ৩২৪ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটির মূলধন
ঘাটতির পরিমাণ। ২৮৫ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির বিতরণকৃত ৬৬ শতাংশ ঋণই
খেলাপি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা হারিয়েছে পিপলস লিজিং।
নিরীক্ষক পিনাকী অ্যান্ড কোম্পানি
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস তাদের কোয়ালিফায়েড অপিনিয়নেও পিপলস লিজিংয়ের ব্যবসা
চালিয়ে যাওয়া নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছে। ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০১৮ হিসাব বছরের আর্থিক
প্রতিবেদনে নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠানটির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সাবসিডিয়ারি
কোম্পানি পিএলএফএস ইনভেস্টমেন্টসহ ২০১৮ হিসাব বছরে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান হয়েছে ১৫৯
কোটি ১৪ লাখ টাকা। আর তাদের পুঞ্জীভূত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২৪ কোটি
৬৮ লাখ টাকা। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানটির চলতি সম্পদের তুলনায় দায়ের পরিমাণ ৩ দশমিক ১১
গুণ বেশি।