সৃষ্টির আদি থেকেই প্রকৃতি, বর্ণ ও লিঙ্গভিত্তিক ভেদ ছাড়াও শক্তি, বিদ্যা, বুদ্ধি ও ধনভিত্তিক পার্থক্য মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। আবার সেই মানুষের মধ্যে মানুষই জ্ঞান-বুদ্ধি, ধর্ম ও দর্শনের সাহায্যে অভেদ সন্ধান করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মানবজাতির যে ক্ষয় হয়, তা বিশ্ববিবেককে ভাবিত করে তোলে। অত্যাচার ও উত্পীড়নের বিরুদ্ধে সর্বশেষ উপায় হিসেবে মানুষকে যেন বিদ্রোহ করতে না হয়, সেই উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হলো জাতিসংঘ এবং ঘোষিত হলো সর্বজনীন মানবাধিকারের সনদ। বিশ্বের অন্য যেকোনো আন্তর্জাতিক দলিলের তুলনায় মানবাধিকার ঘোষণার প্রভাব গভীর ও স্থায়ী। ১৯৪৮ সালে গৃহীত হওয়ার পর থেকে ঘোষণাটি সর্বকালের সার্বিক পরিচিতি ও প্রভাবশালী দলিলগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক ও জাতীয় পর্যায়ে বিশ্বব্যাপী এর ব্যাপক প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষণীয়। The Universal Declaration of Human Rights (UDHR) গৃহীত হওয়ার পর স্বাধীনতাপ্রাপ্ত প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রের সংবিধানে মানবাধিকারগুলো বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মর্যাদাসহকারে স্থান পেয়েছে। কোনো কোনো রাষ্ট্রের সংবিধানে বিশেষভাবে উল্লিখিত না হলেও কিছুটা প্রতিফলন রয়েছে মানবাধিকার ঘোষণার।
‘আমি হিমালয় দেখিনি, তবে শেখ
মুজিবকে দেখেছি’—প্রয়াত কিউবার নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে মূল্যায়ন এটি। কেন এ প্রবাদসম মহামহিমাময়
মূল্যায়ন? কারণ আছে বৈকি। বাঙালি জাতি কোন
ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অস্বীকার করবে? নাগরিক,
রাজনৈতিক নাকি অর্থনৈতিক, সামাজিক,
সাংস্কৃতিক? কোনো ক্ষেত্রেই
নয়। তেমনি এক মহান ক্ষেত্র মানবাধিকার। জীবনটিই তাঁর পার হয়েছে মানবাধিকার
প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ অধিকার প্রতিষ্ঠার
যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনিই জাতির
জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ মানবাধিকারের সংগ্রামের
ফসল, কিন্তু জমি চাষ করে যে মানুষটি এ ফসল ফলিয়েছেন,
তিনিই বঙ্গবন্ধু। মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগরের
গঠিত ও গৃহীত আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনবদ্য দলিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র
(Proclamation of
Independence)-এ স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা
করা হয় মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য সম্পর্কে: বাংলাদেশের
জনগণের জন্য সমতা, মানবসত্তার মর্যাদা ও সামাজিক
ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। ‘বঙ্গবন্ধুর
গণতন্ত্র হচ্ছে উদার, জাতীয়তাবাদ হচ্ছে বাঙালিয়ানা নির্ভর,
সমাজতন্ত্র হচ্ছে চির উন্নত মম শির আর ধর্মনিরপেক্ষতা হলো ধর্ম যার যার,
রাষ্ট্র সবার’। এ উদারনৈতিক,
প্রগতিশীল দর্শন তাঁকে আত্মশক্তিতে বলীয়ান করে। তাই তিনি নির্দ্বিধায়
বলেছেন, ‘ন্যায় আমাদের কর্মনীতি,
আমাদের আদর্শ। জয় আমাদের অনিবার্য।’
মানব মুক্তির সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অগ্রদূত।
সহস্র বছরের নিপীড়িত, লাঞ্ছিত জনতার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন
মুক্তির মহান ব্রত নিয়ে। উচ্চারণ করেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম
আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম
স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ নিজ জন্মভূমির অবহেলিত,
বঞ্চিত মানুষকে তিনি ধীরে ধীরে সংগঠিত করেছিলেন মুক্তির মন্ত্র শুনিয়ে।
ঔপনিবেশিক শোষণের নিগড়ে বাঁধা একটি পশ্চাত্পদ জাতিকে তিনি বিদ্রোহের,
বিপ্লবের দীক্ষা দিয়ে স্বাধীনতার দিকে ধাবিত করেছিলেন। জাতিকে তিনি
সাহসের অভয়ারণ্যে তুলে এনেছিলেন সংগ্রামী চেতনায়। তাই প্রশিক্ষিত হানাদার বাহিনীর
বিরুদ্ধে তাঁরই অঙ্গুলি হেলনে জাতি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রণাঙ্গনে। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী
যুদ্ধ শেষে প্রতিষ্ঠা করেছিল স্বাধীন দেশ। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি বিশ্ব
মানচিত্রে জ্বলজ্বল করে উঠেছিল সেই ১৯৭১ সালে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব
পর্যায়ের নেতায় পরিণত হলেন। জন্মেছিলেন এ বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। আর হূদয়ে ধারণ
করেছিলেন পুরো বাংলাকে।
বঙ্গবন্ধুর সুনির্দিষ্ট কিছু আদর্শ ছিল, মূল্যবোধ ছিল,
লক্ষ্য ছিল এবং সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তিনি একনিষ্ঠভাবে এবং নিরলস
কাজ করেছেন। তাঁর কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়েই আমরা তাঁর মানবিক চিন্তাধারা উপলব্ধি
করতে পারি। মাত্র তিনটি বাক্যেই বঙ্গবন্ধু তাঁর আত্মপরিচিতি ও মূল্যবোধ অত্যন্ত
পরিষ্কার করেছেন। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র প্রথমেই
বঙ্গবন্ধুর একটি উদ্ধৃতি রয়েছে, যা তিনি ১৯৭৩
সালের ৩ মে লিখেছেন। তিনি লিখেছেন: ‘একজন মানুষ
হিসাবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালি হিসাবে যা কিছু বাঙালিদের
সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্প্রীতির উৎস ভালোবাসা,
অক্ষয় ভালোবাসা যে ভালোবাসা আমার রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে
তোলে’। এ উদ্ধৃতি থেকে এটা স্পষ্ট যে, বঙ্গবন্ধু
নিজেকে একাধারে মানুষ এবং তার সঙ্গে বাঙালি হিসেবে আত্মপরিচয় স্বীকৃতি দিচ্ছেন।
তাঁর কর্মপ্রেরণার উৎস হিসেবে চিহ্নিত করছেন বাঙালি এবং মানব সম্প্রদায়ের জন্য
তাঁর ভালোবাসা।
বাঙালি জাতিসত্তা সম্পর্কে সচেতনতার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল দরিদ্র,
নির্যাতিত ও বঞ্চিত মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা। তিনি পাকিস্তান
আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন এই ভেবে যে এ নতুন রাষ্ট্রে দরিদ্র মুসলমান কৃষক জমিদার
শ্রেণীর নির্যাতন থেকে মুক্তি পাবেন। তিনি সবসময় স্বাধীনতার আন্দোলনকে শুধু
ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীন হওয়ার সংগ্রাম হিসেবে দেখেননি,
তিনি এটাকে দেখেছেন নির্যাতিত দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক
মুক্তির সংগ্রাম হিসেবে। তাঁর জাতীয়তাবাদের ধ্যানধারণার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে
ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা ও সুষম সমাজ ব্যবস্থার চিন্তা। বাঙালির
জাতিসত্তার স্বীকৃতির আন্দোলনকে তিনি সবসময় দেখেছেন একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন
হিসেবে, শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির আন্দোলন
হিসেবে।
তাঁর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু অত্যন্ত সুন্দরভাবে বাঙালি
জাতীয়তাবাদের আন্দোলনকে একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক ও মুক্তির আন্দোলন হিসেবে জনগণের
সামনে তুলে ধরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন:
‘আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ
বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়।...
নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণভাবে আমাকে,
আওয়ামী লীগকে ভোট দেন। আমাদের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বসবে,
আমরা সেখানে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করব এবং এই দেশকে আমরা গড়ে তুলব,
এ দেশের মানুষ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও
সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে।...আমি
প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না। আমরা এ দেশের মানুষের অধিকার চাই।’
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম থেকেই আমরা দেখি,
তাঁকে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে। ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট
কলকাতার প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস ও কলকাতার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার প্রত্যক্ষদর্শী
ছিলেন তিনি। সোহরাওয়ার্দী তাঁদেরকে এ দিবস শান্তিপূর্ণভাবে পালনের নির্দেশ
দিয়েছিলেন, যেন সোহরাওয়ার্দী সরকারকে কেউই
দোষারোপ করতে না পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে কলকাতায়
এবং পরে নোয়াখালীতে। কলকাতায় তিনি হিন্দু, মুসলমান দুই
সম্প্রদায়ের লোককেই দাঙ্গা দেখে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। এরপর যখন মহাত্মা গান্ধীর
সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার জন্য সোহরাওয়ার্দী যুক্ত হয়েছিলেন,
তখন বঙ্গবন্ধুও সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে সেই প্রচেষ্টায় যুক্ত হন। ১৯৭১
সালের ৭ মার্চের ভাষণেও তিনি জনগণকে সতর্ক করে বলেন:
‘মনে রাখবেন, শত্রুবাহিনী
ঢুকেছে, নিজেদের মধ্যে আত্মকলহ সৃষ্টি করবে, লুটপাট করবে।
এই বাংলায় হিন্দু-মুসলমান,
বাঙালি-অবাঙালি যাঁরা আছেন,
তাঁরা আমাদের ভাই, তাঁদের রক্ষার
দায়িত্ব আমাদের ওপরে, আমাদের যেন বদনাম না হয়।’ ব্যক্তিগত
জীবনে বঙ্গবন্ধু নামাজ পড়তেন, রোজা রাখতেন,
কোরআন শরিফ পড়তেন। তিনি সব নাগরিকের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকারে
বিশ্বাসী ছিলেন। তবে তিনি রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের বিরোধী ছিলেন। তাঁর
আত্মজীবনীতে বঙ্গবন্ধু লিখছেন: ‘আমি নিজে
কমিউনিস্ট নই, তবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং
পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে বিশ্বাস করি না। একে আমি শোষণের যন্ত্র হিসেবে মনে করি। এ
পুঁজিপতি সৃষ্টির অর্থনীতি যত দিন দুনিয়ায় থাকবে, তত দিন দুনিয়ার
মানুষের ওপর থেকে শোষণ বন্ধ হতে পারে না।’ সমাজতন্ত্র
বলতে তিনি প্রধানত শোষণমুক্ত এবং বৈষম্যহীন একটা ব্যবস্থার কথা ভাবতেন। ১৯৫২ সালে
চীন যাওয়ার পর চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে যে পার্থক্য তিনি দেখেছেন,
তা তাঁর মনে গভীর দাগ কেটেছে। এ দুই দেশের পার্থক্য সম্পর্কে তিনি
লিখেছেন: ‘তাদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য হলো
তাদের জনগণ জানতে পারল ও অনুভব করতে পারল এই দেশ ও এ দেশের সম্পদ তাদের। আর আমাদের
জনগণ বুঝতে আরম্ভ করল, জাতীয় সম্পদ
বিশেষ গোষ্ঠীর আর তারা যেন কেউই নন।’
শোষণমুক্তি এবং বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের যে দায়িত্ব আছে,
তা তিনি বিশ্বাস করতেন। চীনে গিয়ে তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন চীন সরকার
জনসাধারণের জন্য কী কী কাজ করছে, সে দেশে
প্রাধান্য পাচ্ছে শিল্প-কারখানার উন্নতি,
শৌখিন দ্রব্য নয়। তিনি লিখছেন: ‘ভূমিহীন কৃষক
জমির মালিক হয়েছে। আজ চীন দেশ কৃষক-মজুরের দেশ।
শোষক শ্রেণী শেষ হয়ে গেছে।’ ‘নতুন নতুন
স্কুল, কলেজ গড়ে উঠেছে চারদিকে। ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ভার সরকার
নিয়েছে।’ কারাগারের রোজনামচায়ও তিনি লিখেছেন
বৈষম্যহীনতার কথা। তিনি লিখেছেন যে কারাগারে তিনি সবার সঙ্গে একসঙ্গে খেতেন,
যেমন ব্যবস্থা ছিল তাঁর নিজ বাড়িতে: ‘আমি যাহা খাই
ওদের না দিয়ে খাই না। আমার বাড়িতেও একই নিয়ম।...আজ নতুন নতুন
শিল্পপতিদের ও ব্যবসায়ীদের বাড়িতেও দুই পাক হয়। সাহেবদের জন্য আলাদা,
চাকরদের জন্য আলাদা। আমাদের দেশে যখন একচেটিয়া সামন্তবাদ ছিল,
তখন জমিদার, তালুকদারদের
বাড়িতেও এই ব্যবস্থা ছিল না। আজ সামন্ততন্ত্রের কবরের উপর শিল্প ও বাণিজ্য সভ্যতার
সৌধ গড়ে উঠতে শুরু করেছে, তখনই এই রকম
মানসিক পরিবর্তনও শুরু হয়েছে। সামন্ততন্ত্রের শোষণের চেয়েও এই শোষণ ভয়াবহ।’
স্বাধীনতার পর তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলায় তিনি কোনো বৈষম্য দেখতে
চাননি। ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন:
‘বাংলাদেশে মানুষে মানুষে, ব্যক্তিতে
ব্যক্তিতে বৈষম্য থাকবে না। সম্পদের বণ্টনব্যবস্থায় সমতা আনতে হবে এবং উচ্চতর আয় ও
নিম্নতম উপার্জনের ক্ষেত্রে যে আকাশচুম্বী বৈষম্য এত দিন ধরে বিরাজ করছিল,
সেটা দূর করতে হবে।’
মানবাধিকারের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অঙ্গীকার ছিল অবিচল। বাংলাদেশের জনগণের
ওপর তাঁর সন্দেহাতীত আস্থার কারণে তিনি বিশ্বাস করতেন এ দেশের জনগণের মূলমন্ত্র
‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে
নাই।’ পরিষ্কার ভাষায় বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘যারা
সাম্প্রদায়িক তারা হীন, নীচ,
তাদের আত্মা ছোট। যে মানুষকে ভালোবাসে সে কখনো সাম্প্রদায়িক হতে পারে
না।’ বিজয় পতাকা ওড়াবেন বলে তিনি সেই ১৯৪৭-পরবর্তী সময় থেকেই ধীরে ধীরে
আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠেন। পরাধীনতার শিকলে বাঁধা জাতিকে করে তোলেন সংগ্রামী। সেই
সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঘোষণা করেছিলেন মুক্তির
দিকনির্দেশনা। সেই ভাষণ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণগুলোর অন্যতম আজও। বাঙালি জাতির
অমূল্য সম্পদ শুধু নয়, এ ভাষণ
বিশ্ববাসীরও সম্পদে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববাসী চিনত বাংলাদেশ মুজিবের দেশ। বঙ্গবন্ধু
ছিলেন লাখো বাঙালির দুর্বার কাণ্ডারি, মহীরুহের
রূপকথার মহানায়ক। তিনি বিশাল হূদয়ের মানুষ ছিলেন, রাজনৈতিক
প্রতিপক্ষকেও আপন জ্ঞান করতেন। সারাটা জীবন মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ
করেছিলেন।
রাকিবুল হাসান:
চিফ কো-অর্ডিনেটর
স্ক্যান সোসাইটি বাংলাদেশ