জাবি উপাচার্যের ‘দুর্নীতির খতিয়ান’ প্রকাশ করলো আন্দোলনকারীরা

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, জাবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের ‘দুর্নীতির খতিয়ান’ প্রকাশ করেছে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টায় নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে পুস্তকাকারে এ খতিয়ান প্রকাশ করা হয়।

২২২ পৃষ্ঠার পুস্তকটিতে ‘আন্দোলনের প্রেক্ষাপট’, ‘অপরিকল্পিত মাস্টারপ্ল্যানের সংকট’, ‘উপাচার্যের দুর্নীতির পূর্বাপর’, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলার বৃত্তান্ত’, ‘প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদনসহ উপাচার্যের নানা ‘অসঙ্গতি ও অনিয়মের’ বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়।

আন্দোলনকারীরা বলেন, আমাদের আন্দোলনের বর্তমান এক দফা কর্মসূচি হচ্ছে দুর্নীতিগ্রস্ত উপাচার্যের অপসারণ। জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত স্পষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ, সে ব্যাপারে উপাচার্যের রহস্যজনক নিষ্ক্রিয়তা, ছাত্রলীগের একাধিক নেতার স্বীকারোক্তি, মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে দুর্নীতি এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করার কলঙ্ক যেই ব্যক্তির, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার কোনো অধিকার নেই তার।

আন্দোলনকারীদের দাবি, তাদের আন্দোলন ভিসি পতনের আন্দোলন নয়। ব্যক্তি ফারজানা ইসলামের সাথে তাদের কোনো বিরোধ নেই। গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতির যে বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়েছে তারই বিরুদ্ধে গড়ে উঠেছে এই আন্দোলন।

পুস্তকটিতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় ৭টি রূপরেখা তুলে ধরে তা আন্দোলনের ইশতেহার হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। রূপরেখাগুলো হচ্ছে- (১) বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সমস্ত প্রশাসনিক, একাডেমিক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অর্থনৈতিক হিসাব জনপরিসরে প্রকাশ করতে হবে। (২) বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন, সংশোধন এবং যে কোনো অবকাঠামোগত উন্নয়নে সকল অংশীজনের মতামত ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। (৩) বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো অচলাবস্থা সৃষ্টি না হলে উপাচার্য তার বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন না। (৪) উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন ভিন্ন কোনো প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হবে না। (৫) ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিয়ে সিনেট পূর্ণাঙ্গ করতে হবে। (৬) পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘোষণা বাস্তবায়ন করতে হবে ও (৭) সমস্ত বাণিজ্যিক কোর্স এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনার বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

এদিকে দুর্নীতির তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আন্দোলনকারীরা। যত দ্রুত সম্ভব তদন্তের ফল প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলঙ্ক মুক্ত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. খবির উদ্দিন, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারেক রেজা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরি জয়, ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক শাকিল উজ-জামান প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন