প্রযুক্তির অভাবনীয় উত্কর্ষতার ফলে তথ্যের গুরুত্ব বাড়ায় ডাটা সংরক্ষণ আইনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে বলে অভিমত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে গতকাল অনুষ্ঠিত ডিজিটাল নিরাপত্তাবিষয়ক এক মুক্ত আলোচনা সভায় এ অভিমত দেন বক্তারা। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এ আলোচনার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে যৌথভাবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডনের সোয়াস (এসওএএস) বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. মুশতাক খান ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতির প্রভাষক ড. পল্লবী রায়। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, এটুআইয়ের পলিসি অ্যাডভাইজার আনীর চৌধুরী ও বিকাশ লিমিটেডের সিইও কামাল কাদীর। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মাতিন।
নাহিম রাজ্জাক বলেন, ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা-অসুবিধা দুটোই আছে। সাইবার নিরাপত্তার নেতিবাচক দিক মোকাবেলা করে কীভাবে সামনে এগোনো যায়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। অর্থনৈতিক ধারা পরিবর্তনের ফলে আমাদের প্রযুক্তিনির্ভর লেনদেনের পরিমাণ বাড়ছে। সমানতালে ঝুঁকিও বাড়ছে। এখন তথ্যই সবকিছু, এর প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তাই নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে এখনই ডাটা সুরক্ষা আইন দরকার। শুধু আইন হওয়াটাই এর সমাধান নয়, একই সঙ্গে আইনের প্রয়োগ ও ব্যক্তিপর্যায়ে সচেতনতা বাড়ানোও ঝুঁকি কমাবে।
অর্থনীতি বিশ্লেষক ড. মুশতাক খান বলেন, সারা বিশ্বে নতুন ধরনের একচেটিয়া ব্যবসা শুরু হয়েছে। গুগল ও ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়ের গতিপথ নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক প্রভাব রাখছে। তথ্যই এসব ক্ষেত্রে বড় হাতিয়ার। তাদের কাছে ব্যাপক তথ্য জমা হওয়ায় তারা মানুষকে বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করছে। বিগত ২০ বছরে প্রযুক্তি ব্যবসাকে আমূল বদলে দিয়েছে। শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, প্রযুক্তিনির্ভর লেনদেন এবং ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে। এ সময় সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের মতো দেশগুলোকে আরো ভাবার প্রয়োজন আছে।
ড. পল্লবী রায় বলেন, সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে, যার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে বাংলাদেশের মতো দেশের ক্ষেত্রে অধিকাংশ প্রযুক্তি বেসরকারিভাবে উদ্ভাবিত। নাগরিকের অনেক তথ্য সেখানে সংরক্ষিত হচ্ছে, যা বেহাত হলে জননিরাপত্তায় সংকট বাড়বে।