আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস

দুর্নীতি দমনে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হোক

বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশন, আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক নীতিকাঠামো তুলনামূলকভাবে শক্ত হওয়ায় দুর্নীতির ধারণা সূচকে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সক্রিয়তাও চোখে পড়ার মতো। তবে টিআই যখন দুর্নীতির ধারণা সূচক প্রকাশ করছে, তখনো আমরা দেখছি ব্যাংকিং শেয়ারবাজারে একের পর এক আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে। দুদক কিছু বিষয়ে তদন্ত করছে, তবে একটি বড় অংশ এখনো বাইরে রয়ে গেছে। এরই মধ্যেআমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধপ্রতিপাদ্যে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে একযোগে উদযাপিত হলো আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস।

দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সম্পর্কেও দায়িত্বশীল জনগণের যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে, তাতে অত্যন্ত গভীর চিন্তার খোরাক রয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমরা কতটুকু সফল হতে পেরেছি প্রশ্ন করার সময় এসে গেছে। যদি সফলতার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হয়ে থাকে, তবে কেন তা হয়নি, তাও নির্মোহভাবে ভাবা দরকার। অভিযানের সূচনা যেভাবে হয়েছিল, তাতে দায়িত্বশীলদের আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়নি। বলা যায়, একটা নতুন অভিজ্ঞতা দেশের জনগণ লাভ করেছিল। কিন্তু যতই দিন গড়িয়েছে, সাফল্যের সূচক ততই নিম্নগামী হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কি সূচক শূন্যের কোটায় গিয়ে পৌঁছবে? দেশের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে যে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে, তার ব্যর্থতার কারণগুলো অনুসন্ধান করা আমাদের অপরিহার্য কর্তব্য।

আমাদের সব কাজকর্ম আমাদের বিশ্বাস মূল্যবোধেরই ফলাফল। তাহলে বিশ্বাস মূল্যবোধের সংস্কার ছাড়া আমরা কীভাবে আমাদের কর্মের পরিবর্তন আশা করি? আমাদের ভাবতে হবে একদম গোড়া থেকে। আমাদের নৈতিকতার শিক্ষাবর্জিত শিক্ষা ব্যবস্থা, ভোগবাদী জীবনদর্শন, জবাবদিহিতার অনুভূতিশূন্য মন-মানস সামাজিকভাবে এসবের প্রতিষ্ঠা ব্যাপকতাএগুলোকে অপরিহার্যভাবে ভাবনার বৃত্তে নিয়ে আসতে হবে। শিক্ষা সংস্কৃতির আমূল সংস্কার ছাড়া এসব উপসর্গ থেকে আমরা কখনো পরিত্রাণ পাব না। দুদক প্রধানের বিভিন্ন বক্তব্য থেকে মনে হয়েছে, তারা বাস্তবতা অনুধাবন করেন। একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অধীনে শিক্ষা সংস্কৃতি এবং আইন বিচার উভয় ক্ষেত্রেই আমূল সংস্কার অপরিহার্য। আইনের যথার্থ প্রয়োগ এবং জবাবদিহিতাভিত্তিক সমাজ-সংস্কৃতির ধারা প্রবর্তন ছাড়া দুর্নীতির কবল থেকে পরিত্রাণ লাভ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।

সরকারের পাশাপাশি দুদকও এমন দায়বদ্ধতায় সরকারি বিভিন্ন সেবা প্রদান কর্মযজ্ঞে তাদের নজরদারি এবং জরিপের মাধ্যমে দুর্নীতির সূত্রগুলোকে চিহ্নিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সরকারি সেবা প্রদান সংস্থাগুলো পদ্ধতিগত ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে দুর্নীতি নামক অপকর্ম থেকে কোনোভাবেই বের হয়ে আসতে পারছে না। সরকারি এমন সব ব্যবস্থাপনার ওপর দুদক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিয়েছে, যাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদান কর্মযোগে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার চিত্র স্পষ্টভাবে উঠে আসে। আশা করা হয়েছিল, সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি, যা দুঃখজনক।

দুর্নীতি রোধে আমাদের যেসব আইন অবকাঠামো আছে, তার সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন