১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের নীরব সাক্ষী বরিশাল নগরীর ওয়াপদা কলোনির টর্চার সেল। যেখানে পাকিস্তানি সেনাদের অমানুষিক নির্যাতনে প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য নিরীহ বাঙালি। আজো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সেই টর্চার সেল, বাংকার আর বধ্যভূমির সেতুটি; যা স্মরণ করিয়ে দেয় মুক্তিযুদ্ধের সেই রোমহর্ষক ঘটনা।
দীর্ঘদিন অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত টর্চার সেল ও বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ। তার উদ্যোগে ’৭১-এ নির্মম নির্যাতনের অবয়ব ফিরিয়ে আনতে নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে বধ্যভূমি। এতে সহযোগিতা করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘর। মুক্তিযুদ্ধের অবয়বে সজ্জিত নতুন এ বধ্যভূমি আজ বরিশাল হানাদারমুক্ত দিবসে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উদ্বোধন ও উন্মুক্ত করবেন।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মুক্তিকামী বাঙালিদের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তবে বরিশালে পাকিস্তানি বাহিনী প্রবেশ করে ২৫ এপ্রিল। ওইদিন গানবোট ও হেলিকপ্টারে করে পাকিস্তানি বাহিনীর একাধিক গ্রুপ স্টিমার ঘাট, বিসিক ও চরবাড়িয়া এলাকা দিয়ে শহরে প্রবেশ করে। চরবাড়িয়া থেকে আসা গ্রুপটি লাকুটিয়া সড়ক ধরে শহরে আসার পথে নির্বিচারে বাঙালিদের হত্যা করে। ২৯ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদা কলোনি দখল করে ক্যাম্প স্থাপন করে। ক্যাম্পের পশ্চিম দিকে সাগরদী খালের তীরে বাংকার তৈরি করে সশস্ত্র পাহারা বসানো হয়। সেদিনের দুটি বাংকার আজো আছে।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ওয়াপদা কলোনি ছিল অপেক্ষাকৃত নির্জন এলাকা। এ কারণে হানাদাররা সেখানে তাদের ক্যাম্প ও একাধিক ভবনে টর্চার সেল স্থাপন করে। আর ওয়াপদা কলোনির এ ক্যাম্প থেকেই ঝালকাঠি, পটুয়াখালী ও ভোলায় অপারেশন চালাত পাকিস্তানিরা। তাছাড়া ওয়াপদা কলোনির ২৫ নম্বর ভবনে অসংখ্য বাঙালি মুক্তিকামী নারী-পুরুষকে ধরে নিয়ে গণহত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হয়। হত্যার পর ক্যাম্পের পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া সাগরদী খালে মরদেহ ভাসিয়ে দেয়া হতো।
বধ্যভূমির করুণ স্মৃতি ধরে রাখতে ওয়াপদা কলোনির দক্ষিণ পাশে কীর্তনখোলা নদীর তীরে বধ্যভূমি স্মৃতিভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানি বাহিনী ওয়াপদা কলোনির যেসব ভবনে বাঙালি নারী-পুরুষদের ধরে নিয়ে ভয়াবহ নির্যাতন চালাত, দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সেই স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি কখনো। অবশেষে বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দায়িত্ব গ্রহণের পর বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন।
বধ্যভূমি সংরক্ষণ কাজ পর্যবেক্ষণ ও দেখভালের দায়িত্বে থাকা সৈয়দ দুলাল বলেন, বধ্যভূমির ব্যাপারে আমাদের <