দশম আইসিএফসি-তে বক্তারা

আর্থিক অপরাধ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন

বণিক বার্তা অনলাইন

অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। আর সেই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে আর্থিকখাতে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ দেশ ও দেশের মানুষের জীবন মানে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। সেজন্য আর্থিকখাতের অপরাধ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।

আজ শনিবার সকাল ৯টায় ইউআইইউ মিলনায়তনে ফিন্যান্সিয়াল ক্রিমিনোলজি (আর্থিক অপরাধ) বিষয়ক দশম আন্তর্জাতিক সম্মেলন ২০১৯- এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) আয়োজনে দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে সহায়তা দিচ্ছে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি মারার (ইউআইটিএম) অ্যাকাউন্টিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট। আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে দৈনিক বণিক বার্তা। সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে আটটি দেশের শিক্ষক, গবেষক ও বিশেষজ্ঞরা ৫৬টি গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করবেন।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, আমরা প্রযুক্তির ইতিবাচক ব্যবহার করে মানি লন্ডারিংয়ের ঝুঁকি মোকাবেলা করেই আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ধারাকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করেছি। এরফলে দেশেল আর্থিকখাত অনেকটাই মানবিক ও উদ্যোক্তাবান্ধব হতে পেরেছে। আর্থিক স্থিতিশীলতার স্বার্থেই আমাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ধারাকে আরো জোরদার করতে হবে। ব্লক চেইনসহ অন্যান্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা ঝুঁকিমুক্ত আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ধারাকে আরো বেগবান করার প্রত্যাশা করছি। সেজন্য গবেষণা, সচেতনতা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আরো বেশি সমন্বয়ের আহ্বান জানাচ্ছি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ইউনাইটেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈন উদ্দিন হাসান রশিদ বলেন, দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চ্যালেঞ্জও বাড়ছে। বদলে যাচ্ছে অপরাধের ধরনও। আগেরদিনে পকেটমার, চুরি, ডাকাতি এসবই ছিল বড় অপরাধ; কিন্তু অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে এখন ব্যাংক, আর্থিকখাত ও স্টক মার্কেটে বড় বড় অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এগুলো দেশে এবং দেশের মানুষের জীবন যাত্রায় প্রভাব ফেলছে। তুলনামূলকভাবে আগের অপরাধের তুলনায় এখনকার অপরাধের প্রভাব বেশি; এসব ব্যাপারে জানা উচিৎ, বোঝা উচিৎ। আমরা আশা করছি, এই কনফারেন্স আর্থিকখাতের অপরাধ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করবে।

এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউআইইউ উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসনান আহমেদ, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল আজম, মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি মারার অ্যাকাউন্টিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. নরমাহ ওমর ও সম্মেলনের আয়োজক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এফএ সোবহানী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর অনুষ্ঠিত হয় ‘এথিকস অ্যান্ড ইন্টেগ্রিটি অব ফিন্যান্সিয়াল ইন্ডাস্ট্রি’ শীর্ষক প্রথম প্যানেল আলোচনা। এতে ইউআইইউর ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক রিসার্চের (আইবিইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. এইচআর জোয়ার্দ্দারের সঞ্চালনায় প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন ইউআইইউ স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকসের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মুসা, ইউআইটিএমের অ্যাকাউন্টিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. জামালিয়া সাইদ ও আইডিএলসি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ খান। এছাড়া সকালের অধিবেশনে কয়েকটি পেপার প্রেজেন্টেশন ও প্যারালাল সেশন অনুষ্ঠিত হয়।

উদ্বোধন শেষে সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় সম্মেলনের প্রথম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা। এতে ‘ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন অ্যান্ড অ্যান্টি-মানি লন্ডরিং ড্রাইভস: বাংলাদেশ ব্যাংক পারস্পেকটিভস’ বিষয়ের ওপর মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। 

আর বিকালের অধিবেশনের শুরুতেই থাকছে ‘ফিন্যান্সিয়াল ক্রিমিনোলজি: অ্যান্টি-মানি লন্ডারিং-প্রটেক্টিভ টুলস’ শীর্ষক দ্বিতীয় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা। এতে মূল বক্তা থাকবেন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ রাজি হাসান। এরপর কয়েকটি পেপার প্রেজেন্টেশন ও প্যারালাল সেশন অনুষ্ঠিত হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন