ত্রিশালে পোশাক শ্রমিক রিনা খাতুন হত্যা মামলার দেড় মাস পর প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গত বুধবার ঢাকার মিরপুর পাইকপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন প্রধান আসামি রুবেল মিয়া (৩১) ও তার সহযোগী প্রাইভেট কারচালক ইমারত (৩৬)। গত বৃহস্পতিবার রুবেল মিয়া আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পিবিআই ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ত্রিশাল উপজেলার চেলেরঘাটের খিরু নদীর ব্রিজের নিচ থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে ত্রিশাল থানা পুলিশ। ২৫ নভেম্বর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। তদন্তের একপর্যায়ে পিবিআই জানতে পারে, উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতনামা নারীর মরদেহটি মাগুরা সদর উপজেলার খানপুর গ্রামের মুরাদ মোল্লার মেয়ে রিনা খাতুনের। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মো. মুরাদ মোল্লা বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্তের পর গত বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পিবিআই।
আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে আসামি রুবেল মিয়া জানান, পোশাক কারখানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় রুবেলের সঙ্গে সম্পর্ক হয় রিনার। একপর্যায়ে তারা দুজন বিয়ে করেন। বিয়ের পর রুবেলের আগের বিয়ের বিষয়ে জানতে পারেন রিনা। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদের জেরে বিচ্ছেদ হয়। গত ২৩ অক্টোবর বিকালে রুবেল বিবাদ মীমাংসা করার কথা বলে রিনাকে বাসা থেকে নিয়ে আসেন। পরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ত্রিশাল উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেলেরঘাট খিরু নদের পাড়ে তাকে হত্যার পর মরদেহ ফেলে রাখে।
পিবিআই ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুবকর ছিদ্দিক জানান, গ্রেফতারকৃত আসামিরা জবানবন্দিতে আদালতকে জানায়, রিনাকে গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের শিকান্দরনগর নিয়ে যাওয়ার কথা বলে প্রাইভেট কারে ঢাকা থেকে নিয়ে আসে রুবেল। প্রথমে রিনাকে ত্রিশালের বালিপাড়া ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। পরে আবার গাড়ি নিয়ে চলে আসে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চেলেরঘাট এলাকায় খিরু নদীর ব্রিজের পাশে। সেখানেই হত্যা করে মরদেহ ব্রিজের নিচে ফেলে রেখে আবার ঢাকায় চলে আসে আসামিরা।