সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও লক্ষ্মীপুর বিসিক শিল্পনগরীতে ২২ বছরেও গড়ে ওঠেনি উল্লেখযোগ্য শিল্প-কারখানা। যেগুলো গড়ে উঠেছে, নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে সেগুলোও এখন বন্ধের পথে। এজন্য অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, লোডশেডিং, গ্যাস সংকটের সঙ্গে অব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধার অভাবকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন দেখা যায়, বিসিক শিল্প এলাকার মূল ফটক থেকে শুরু করে সব রাস্তারই বেহাল দশা। কোনো রাস্তার ওপরই কার্পেটিং নেই। বড় বড় গর্ত আর খানাখন্দে পানি জমে আছে। সামান্য বৃষ্টিতে এসব রাস্তায় হাঁটুপানি জমে যায়। রাস্তার এমন দুরবস্থায় যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় চলাচলকারিদের। অন্যদিকে প্রয়োজনের তুলনায় ড্রেনের আকার ছোট হওয়ায় এবং ময়লা পানি যাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো গন্তব্য না থাকায় বিভিন্ন স্থানে কারখানার পরিত্যক্ত ময়লা ও বর্জ্য নিষ্কাশন না হয়ে জমে আছে। পরিচ্ছন্নতার অভাবে পুরো বিসিক এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে।
উদ্যোক্তারা জানান, বিসিক কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর সার্ভিস চার্জ নিলেও সে অনুপাতে কোনো সুযোগ-সুবিধা তারা পান না। এদিকে শিল্পনগরী এলাকায় ল্যাম্পপোস্টগুলোয় বাতি না থাকায় সন্ধ্যা হতেই অন্ধকারে ছেয়ে যায় গোটা বিসিক এলাকা। এছাড়া নেই সীমানা দেয়ালও। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিসিক এলাকার মালিক-শ্রমিকরা।
শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, পর্যাপ্ত পরিকল্পনার অভাব রয়েছে লক্ষ্মীপুর বিসিকে। বেহাল রাস্তায় কোনো পণ্যবাহী গাড়ি ঢুকতে চায় না। এছাড়া শিল্পভিত্তিক গ্যাস ও বিদ্যুৎ সুবিধার অভাবে উৎপাদন খরচ দিন দিন বাড়ছে। ফলে অনেক ব্যবসায়ী প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে না পেরে এরই মধ্যে শিল্পপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ করে দিয়েছেন। বাকিদের অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার পথে। এসব কারণে নতুন কোনো উদ্যোক্তা এখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনে আগ্রহী হন না।
বিসিকের তথ্যমতে, ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৫ সালে মোট ১৬ দশমিক ৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে বিসিক কর্তৃপক্ষ। পরে ৯ দশমিক ৮২ একর জমিতে মোট বরাদ্দযোগ্য প্লট ১০০টির মধ্যে ৯৮টি বরাদ্দ দেয়া হয়।
লক্ষ্মীপুর বিসিকের উপব্যবস্থাপক মো. দেলোয়ার হোসেন বণিক বার্তাকে জানান, এ নগরীতে মোট ৬১টি শিল্প ইউনিটের মধ্যে ৯৮টি প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ৪৩টি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প-কাখানার কার্যক্রম রয়েছে। এর মধ্যে উৎপাদনে আছে ২৮টি, সাময়িক বন্ধ আছে নয়টি এবং নির্মাণাধীন রয়েছে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। নিয়ম অমান্য করায় ২৫টি প্লটের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
বেহাল রাস্তা ও ড্রেনের