৪ হাজার কোটি ডলারের মেট্রো প্রকল্প ইন্দোনেশিয়ার

বণিক বার্তা ডেস্ক

জাকার্তার মেট্রো নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের বিলাসী প্রকল্প হাতে নিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। এ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করতে চান রাষ্ট্রপতি জোকো উইডোডো। যতটা ব্যয় করা হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, এ অর্থ তার চেয়ে অনেক বেশি। বিশাল এ বিনিয়োগ দেশটির নির্মাণ কোম্পানিগুলোকে চাঙ্গা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এ প্রকল্প কেন্দ্র করে দেশটির প্রধান দুই বিনিয়োগকারী চীন ও জাপানের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। খবর ব্লুমবার্গ।

এদিকে ২০৪৫ বছরের মধ্যে দেশটির অর্থনীতি ৭ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চান জোকোভি। রাজধানীর মেট্রো নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ রাষ্ট্রপতির উচ্চাভিলাষী রোডম্যাপের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির রোডম্যাপ পূরণে অবকাঠামো খাতের জন্য সাড়ে ৪৫ হাজার কোটি ডলারের রূপরেখা ঘোষণা করেছে দেশটির প্রশাসন, যা আগামী পাঁচ বছরে ব্যয় করা হবে। নীতিনির্ধারকরা বড় বড় প্রকল্পের রূপরেখা ঘোষণা করলেও এসব প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করেছেন খুবই কম।

মেট্রো নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য অর্থায়নকারী নির্বাচন শুরু করার কথা জানিয়েছেন পিটি এমআরটি জাকার্তার প্রেসিডেন্ট ডিরেক্টর উইলিয়াম সাবান্দার। বর্তমান মেট্রোর এক লাইনের সঙ্গে আরো ছয় লাইনে যুক্ত করতে চায় পিটি এমআরটি, যেটি চলতি বছরের শুরুতে আংশিকভাবে চালু করা হয়েছে। পরিকল্পিত এ প্রকল্প সম্পূর্ণ হলে তা হংকং ও সিঙ্গাপুরের মেট্রো নেটওয়ার্ককে দৈর্ঘ্যের দিক থেকে ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান সাবান্দার। যেসব বিশ্লেষক প্রথম লাইন সম্পূর্ণ করার পর অন্য কাজ আরম্ভ করা হবে বলে ধারণা করেছিল, একসঙ্গে সাত লাইনের মেট্রো নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ কার্যক্রম তাদের কাউকে কাউকে বিস্মিত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সাবান্দার জানান, ২০৩০ সাল নাগাদ ২৩০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। এটিই আমাদের মাস্টারপ্ল্যান। অবকাঠামো প্রকল্প বিষয়ে দেয়া সাক্ষাত্কারে এসব জানান পিটি এমআরটির ডিরেক্টর। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে আমাদের রয়েছে মাত্র ১৬ কিলোমিটার। তাহলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে আমাদের কী গতিতে কাজ করতে হবে, তা বুঝতেই পারছেন। তবে আমাদের দীর্ঘ অপেক্ষা করার অবকাশ নেই। একটার পর একটা লাইন নির্মাণ করাই আমাদের লক্ষ্য।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির রেললাইন সম্প্রসারণের বিলাসী এ প্রকল্প জোকোভির মুখ্য উন্নয়ন কার্যক্রম। এটি সম্ভব হলে দেশটির অবকাঠামো খাতের চেহারা বদলে যাবে। বেড়ে যাবে ব্যবসা কার্যক্রম ও গণযোগাযোগ।

রেললাইন সম্প্রসারণ ছাড়া জোকোভির আরো বড় বড় প্রকল্প রয়েছে। কয়েকটি বন্দর, ড্যাম, বিদ্যুৎ প্লান্ট নির্মাণ রাষ্ট্রপতির উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের অন্যতম। তবে তড়িঘড়ি করে একসঙ্গে ব্যয়বহুল অনেক প্রকল্প হাতে নেয়ায় তা দেশটির ব্যাংক ব্যবস্থা ও সরকারি নির্মাণ কোম্পানিগুলোর ওপর চাপ তৈরি করছে।

এদিকে এসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ইন্দোনেশিয়ার বিদেশের প্রযুক্তি সহায়তা ও তহবিল দরকার হবে বলে জানিয়েছেন জাকার্তার ত্রিশক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন বিশ্লেষক ইয়ায়েত সুপ্রিয়াতনা। এক্ষেত্রে চীন ও জাপান প্রধান বিনিয়োগকারী শক্তি হিসেবে কাজ করবে। দেশটিতে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতি দুটির প্রতিযোগিতা শক্তিদ্বয়ের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াবে। এ পরিস্থিতি যথাযথভাবে সামলাতে পারলে ইন্দোনেশিয়ার লাভবান হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন এ বিশ্লেষক।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন