বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন (ন্যাটো) প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে লন্ডনের কাছে এক সম্মেলনে যোগ দিতে জড়ো হয়েছেন জোটটির নেতারা। তবে ন্যাটো সদস্যদের মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনার ছাপ রয়েছে এ সম্মেলনেও, যা জোটটির ভবিষ্যেকই ঝুঁকির মুখে ফেলছে। খবর বিবিসি।
গতকাল শুরু হওয়া দুদিনব্যাপী সম্মেলনে সাইবার হামলা ও চীনের পক্ষ থেকে কৌশলগত চ্যালেঞ্জসহ বিস্তৃত বিষয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। গতকাল সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সদস্যদের জোটের ‘সবার জন্য এক ও একের জন্য সবাই’ নীতিটি স্মরণ করিয়ে দেন।
কিন্তু ঐক্য প্রদর্শনের উদ্দেশ্য থাকলেও সম্মেলনে ন্যাটো সদস্যদের তীব্র বিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। উত্তর সিরিয়ায় তুরস্কের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযান, সদস্যদের সামরিক ব্যয়ের মাত্রা ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর জোট সম্পর্কিত মন্তব্য নিয়ে মতভেদ রয়েছে।
উল্লেখ্য, কিন্তু গত মাসে এক বক্তৃতায় মাখোঁ গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ন্যাটো সদস্যরা একে অন্যকে সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ করেন। এ সময় তিনি ন্যাটোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি দিন দিন দুর্বল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে জোটটিকে ‘নিষ্কর্মা’ (ব্রেইন ডেড) বলে অভিহিত করেন।
লন্ডনের পাশে ওয়াটফোর্ডে সম্মেলনের প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মাখোঁর মধ্যে ন্যাটোর ভূমিকা, তুরস্ক ও ইসলামিক স্টেট (আইএস) যোদ্ধাদের নিয়ে তর্কযুদ্ধ দেখা যায়। শুল্ক ও বাণিজ্য এবং ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্য ঘিরে মাখোঁ ও ট্রাম্পের সম্পর্কের অবনতি আগেই ঘটতে শুরু করেছে। জোট নিয়ে মাখোঁর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প ফরাসি প্রেসিডেন্টের মন্তব্য অত্যন্ত ‘অপমানজনক’ বলে জানিয়েছেন।
চলতি সম্মেলনে যে দুটি প্রধান বিষয় মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, সেগুলো হলো সামরিক ব্যয়, যা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের উদ্বেগের বিষয় এবং তুরস্ক ও অন্য সদস্য দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক।
সম্মেলনে যোগ দিতে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করার আগেই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান জানিয়েছেন, ন্যাটো যদি উত্তর সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে তার দেশের লড়াইকে সমর্থন না দেয়, তবে তুরস্ক বাল্টিক অঞ্চলে ন্যাটোর প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা সমর্থন করবে না। তুরস্ক চাইছে ন্যাটো সদস্যরা কুর্দি ওয়াইপিজে বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করুক।
যদিও জোটের সদস্যরা তুরস্কের এ দাবি মেনে নেয়ার প্রতি কোনো আগ্রহ দেখায়নি। মাখোঁসহ অন্য নেতারা এ ধরনের পদক্ষেপের স্পষ্ট বিরোধিতা করেছেন