টানা তিন বছর তীব্র খরার মধ্য দিয়ে গম উৎপাদন করতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার। অবস্থাটা এতটা ভয়াবহ হয়েছে যে অন্যতম রফতানিকারক দেশ হওয়া সত্ত্বেও চলতি বছরের জুনে এক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো গম আমদানি করতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। চলতি উৎপাদন মৌসুমেও (এপ্রিল-মার্চ) খরা দেশটির গম উৎপাদনকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারে বলে মনে করছে অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড রিসোর্স ইকোনমিকস অ্যান্ড সায়েন্স (এবিএআরইএস)। প্রতিষ্ঠানটির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এমন পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। খবর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্ল্যাটস।
অস্ট্রেলিয়ায় সবচেয়ে বেশি গম উৎপাদন হয় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া অঞ্চলে। দেশটি থেকে রফতানি হওয়া গমের প্রায় অর্ধেকই আসে এ অঞ্চল থেকে। কিন্তু টানা কয়েক বছর ধরে অঞ্চলটিকে তীব্র খরা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। যার ফলে একদিকে যেমন দেশটির গম উৎপাদন কমতির দিকে রয়েছে, অন্যদিকে নিম্নমানের আবাদ হওয়ায় বাজার হারাচ্ছে রফতানি খাতও।
এবিএআরইএসের প্রাক্কলন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯-২০ উৎপাদন মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার গম উৎপাদন আগের প্রাক্কলনের তুলনায় ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ কমতে পারে। সব মিলিয়ে এ মৌসুমে দেশটিতে গমের উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টনে, যা ২০১৮-১৯ মৌসুমে উৎপাদিত হওয়া গমের তুলনায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ কম।
নতুন এ প্রাক্কলন এরই মধ্যে দেশটির অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দেয়া প্রাক্কলনের কাছাকাছি রয়েছে। এর আগে ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংক চলতি মৌসুমে সব মিলিয়ে ১ কোটি ৫৫ লাখ টন গম উৎপাদনের প্রাক্কলনের কথা জানিয়েছিল। আর নেদারল্যান্ডসের বহুজাতীয় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান রাবোব্যাংক প্রতিবেদনে ১ কোটি ৫৮ লাখ টন উৎপাদনের পূর্বাভাস দিয়েছে।
এবিএআরইএস বলছে, বসন্তকালীন মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া বিরূপ হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় শীতকালীন ফসল আবাদ মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে। এ সময় অধিকাংশ আবাদ অঞ্চলে উৎপাদন ব্যাহত হয়। বিশেষ করে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলসে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি খারাপ আবহাওয়া বিরাজ করে। এর মধ্যে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় কম বৃষ্টি এবং গড় তাপমাত্রার তুলনায় বেশি তাপ হওয়ায় এ অঞ্চলে ফসল আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে গমসহ অধিকাংশ শীতকালীন ফসলের উৎপাদন এ অঞ্চলে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় গমের আবাদ ৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪৪ লাখ হেক্টরে। আর এ সময় গমের উৎপাদন ৪১ শতাংশ কমে যেতে পারে। এ সময় সব মিলিয়ে অঞ্চলটিতে গমের উৎপাদন দাঁড়াতে পারে ৬০ লাখ টনের মতো। আর গড় উৎপাদন ৩৭ শতাংশ কমতে পারে।
তবে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় গমের উৎপাদন কমে গেলেও অন্যান্য রাজ্যে উৎপাদন বৃদ্ধি পেতে পারে, যা মোট উৎপাদনের মধ্যে কিছুটা ভারসাম্য আনতে সহায়তা করবে। এর মধ্যে সাউথ অস্ট্রেলিয়া, ভিক্টোরিয়া ও নিউ সাউথ ওয়েলেসে গমের উৎপাদন গত মৌসুমের তুলনায় ৪০ শতাংশ বাড়তে পারে। সব মিলিয়ে এ তিন রাজ্যে গমের উৎপাদন ধরা হয়েছে ৯৪ লাখ টনের মতো। এসব রাজ্যে এবার ভালো বৃষ্টিপাত হওয়ায় গমের বাম্পার ফলন আশা 
