সীমান্ত বন্ধে চালের পর পেঁয়াজ সংকটে নাইজেরিয়া

বণিক বার্তা ডেস্ক

কয়েক মাস আগে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় নাইজেরিয়া। উদ্দেশ্য ছিল চালের চোরাচালান বন্ধ করে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ানো। তবে সে লক্ষ্য অর্জন না হয়ে বিপরীতে চালের তীব্র সংকট দেখা দেয়। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজারে বাড়তে থাকে দামও। এবার একই রকম সংকট দেখা দিয়েছে মসলাপণ্য পেঁয়াজের ক্ষেত্রেও। আমদানি বন্ধ থাকায় সরবরাহ সংকটে পেঁয়াজের অভ্যন্তরীণ বাজার ক্রমে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ছে। খবর গার্ডিয়ান।

আফ্রিকায় মিসরের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পেঁয়াজ উৎপাদন হয় নাইজেরিয়ায়। তা সত্ত্বেও অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি করে দেশটি। এর অধিকাংশ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে স্থলবন্দর দিয়ে আসে। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ায় এখন পেঁয়াজ আমদানি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। আর এতেই তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে পেঁয়াজের বাজারে।

প্রতিবেশী দেশ নাইজার, বেনিন ক্যামেরুনের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে নাইজেরিয়ার। এসব সীমান্ত দিয়ে বৈধ পথে আমদানি রফতানি পরিচালনা করে থাকে দেশটি। কিন্তু বেনিন থেকে দীর্ঘদিন ধরে চোরাচালানের মাধ্যমে চাল প্রবেশের ফলে অভ্যন্তরীণ বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। থাইল্যান্ড থেকে পর্যাপ্ত আমদানি করে সীমান্ত দিয়ে এসব চাল নাইজেরিয়ায় সরবরাহ করে বেনিন। এতে নাইজেরিয়ায় বৈধ পথে আমদানি হওয়া চাল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। অবস্থায় গত আগস্ট থেকে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ অক্টোবর থেকে পুরোপুরি সীমান্ত দিয়ে আমদানি-রফতানি বন্ধ করে দেয় ফেডারেল সরকার। এর পর থেকেই দেশটিতে খাদ্য সংকট দেখা দেয়, যা সম্প্রতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। দেশটিতে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে পর্যাপ্ত আবাদি জমি না থাকায় সরকারের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন সরব হচ্ছে বিভিন্ন পক্ষ। আর অসন্তোষে নতুন মাত্রা যোগ করেছে পেঁয়াজ সংকটে লাগামহীন দাম।

নাইজেরিয়ায় প্রতি বছর প্রায় ২৫ লাখ টন পেঁয়াজের ব্যবহার হয়। এর বিপরীতে দেশটিতে উৎপাদন হয় ১৪ লাখ টন। ফলে বাকি ১১ লাখ টন পেঁয়াজ প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আমদানি করে নাইজেরিয়া, যার বেশির ভাগই আসে সীমান্ত দিয়ে। কিন্তু সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ায় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন দিয়ে চাহিদা পূরণের চেষ্টা চলছে। ফলে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ সংকটে ঊর্ধ্বমুখী এখন দেশটির পেঁয়াজের বাজার। দেশটিতে পেঁয়াজের দাম এরই মধ্যে ৬৫ শতাংশ বেড়েছে।

গার্ডিয়ানের করা জরিপে দেখা গেছে, বাজারে বৃহৎ আকারের তিনটি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০০ নায়রায় (স্থানীয় মুদ্রা) যেখানে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার আগে একই পরিমাণ অর্থ দিয়ে ধরনের অন্তত ১০টি পেঁয়াজ কেনা যেত।

তবে দামের পাশাপাশি এসব পেঁয়াজের মান নিয়েও ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। নাগজি আগা নামে এক নারী ক্রেতা জানান, তিনদিনের মধ্যে এসব পেঁয়াজ পচতে শুরু করে।

সীমান্ত বন্ধ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরাও। পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ইয়াকুব আবু জানান, নাইজার থেকে পেঁয়াজ আমদানির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করা হতো। কিন্তু এখন এটি পূরণ করতে হচ্ছে স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে।

");

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন