খবরটা ফাঁস হয়েছিল আগেই। কেবল অপেক্ষা ছিল আনুষ্ঠানিক ঘোষণার। অনুমেয়ভাবেই সোমবার মধ্যরাতে ব্যালন ডি’অর বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয় বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসির নাম। এ নিয়ে মোট ছয়বার ব্যালন ডি’অর জিতলেন মেসি। ব্যক্তিগতভাবে সর্বোচ্চবার এ স্বীকৃতি পেলেন ‘এলএম টেন’। এর আগে পাঁচটি করে ব্যালন ডি’অর জিতে সমতায় ছিলেন মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তবে এবার প্যারিসের ট্রফিটি হাতে নিয়ে মেসি ছাড়িয়ে গেলেন ‘সিআর সেভেন’কে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে ফুটবলের সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন স্বীকৃতিটি পাওয়ার পথে মেসি এবার পেছনে ফেলেছেন ভার্জিল ভ্যান ডাইক ও রোনালদোকে। এ দুজন যথাক্রমে দুই ও তিন নম্বরে আছেন।
ব্যালন ডি’অরে ২০০৮ সাল থেকেই একচ্ছত্র দাপট মেসি ও রোনালদোর। এর মাঝে কিছু সময় ফিফার সঙ্গে একীভূত হয়েও পুরস্কারটি দেয়া হয়। তখনও এ দুজনের রাজ্যপাট কেড়ে নিতে পারেনি অন্য কেউ। তবে গত বছর দুরন্ত নৈপুণ্য দেখিয়ে ফিফা বর্ষসেরার দৌড়ে দুজনের দ্বৈরথ থামিয়ে পুরস্কার জেতেন রিয়াল মাদ্রিদের ক্রোয়াট তারকা লুকা মডরিচ। এরপর অনেকেই ধরে নিয়েছিল মেসি ও রোনালদোর আধিপত্য বুঝি শেষ। কিন্তু এক মৌসুম পরই সেই অনুমান ভুল করে ব্যালন ডি’অর মুকুট পরলেন মেসি। তবে এবার মেসির সামনে রোনালদো নয়, চ্যালেঞ্জ হিসেবে ছিলেন ভ্যান ডাইক। এ লিভারপুল ডিফেন্ডার স্বপ্নের মতো এক মৌসুম কাটিয়েছেন গত বছর। ‘অল রেড’দের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পথেও রাখেন দারুণ অবদান। এরপর নেশনস লিগেও নেদারল্যান্ডসের রানার্সআপ হওয়ার পথে ভূমিকা রাখেন তিনি। যার ফলে উয়েফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতিও পেয়েছিলেন। কিন্তু ফিফা দ্য বেস্টে ভ্যান ডাইককে থাকতে হয় মেসির পেছনে। এবার ব্যালন ডি’অরের ক্ষেত্রেও মেসি পেছনে ফেলেছেন ‘ডাচ ওয়াল’কে।
গত মৌসুমে দলীয় পর্যায়ে সাদামাটা কেটেছে মেসির। বার্সার হয়ে লা লিগা শিরোপা জিতলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও কোপা দেল রেতে ফিরতে হয়েছে খালি হাতেই। জাতীয় দল আর্জেন্টিনার জার্সিতেও পাননি সাফল্য। কোপা আমেরিকায় দলীয়ভাবে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি হয়েছিলেন বিতর্কিতও। পড়েছিলেন নিষেধাজ্ঞার মুখে। তবে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে মেসি ছিলেন যথারীতি অপ্রতিরোধ্য। মৌসুমে ৫৮ ম্যাচে গোল করেছেন ৫৪টি। যেখানে বার্সার লা লিগা জয়ের পথে মেসি একাই করেছেন ৩৬ গোল। যার ফলে ইউরোপের গোল্ডেন শুর পুরস্কারও হাতে তুলেছিলেন তিনি।
ষষ্ঠবার ব্যালন ডি’অর হাতে নিয়ে মেসি বলেন, ‘প্যারিসে আমার প্রথম ব্যালন ডি’অর জেতার পর ১০ বছর হয়ে গেল। আমার মনে আছে ২২ বছর বয়সী আমি তিন ভাইকে নিয়ে এসেছিলাম। এরপর যা ঘটে গেল তা অবিশ্বাস্য।’ মেসি আরো বলেন, ‘আমার স্ত্রী বলেছে, কখনো স্বপ্ন দেখা থামিও না। কিন্তু সবসময় উন্নতির জন্য কাজ ও উপভোগ করে যাও। আমি সৌভাগ্যবান, ধন্য।’
নারী ফুটবলারদের মাঝে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বকাপ জয়ের পথে দারুণ অবদান রাখা মেগান র্যাপিনো। সেরা গোলরক্ষকের ‘ইয়েশিন ট্রফি’ পেয়েছেন লিভারপুলের ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। সেরা তরুণ খেলোয়াড় হয়েছেন জুভেন্টাসের ডাচ তারকা ম্যাথিয়াস ডি লিট। বিবিসি ও এএফপি